কলকাতায় ঝটিকা সফরে পঙ্কজ ত্রিপাঠী
আসছে ‘শেরদিল’। ছবির প্রচারে কলকাতায় পঙ্কজ ত্রিপাঠী। ভিক্টোরিয়ার ফুচকা খেয়ে সোজা হোটেলে। কাচের জানলা দিয়ে শহর কলকাতা, এক কাপ চা আর হাতে সময় মাত্র ৫মিনিট । শুরু হল সাক্ষাৎকার...
প্রশ্ন: আপনাকে বাংলায় প্রশ্ন করব নাকি হিন্দিতে?
পঙ্কজ: অবশ্যই বাংলায়। সারা দিন বাড়িতে বাংলাতেই তো কথা হয়।আলু পোস্ত, ঝিঙে পোস্ত, পটল পোস্তর গল্প শুনতে শুনতে আর খেতে খেতে বাংলাটা আমি স্পষ্ট বুঝি। আমার প্রথম প্রেম তো বাংলাই। বিয়ে করেছি ভবানীপুরের মেয়েকে।আর দ্বিতীয় প্রেম? বাঙালি খাবার।
প্রশ্ন: আপনি কোন বাঙালি খাবার রান্না করতে পারেন?
পঙ্কজ: সর্ষে দিয়ে মাছটা আমি দারুণ রাঁধি। না, আসলে সর্ষে দিয়ে তৈরি যে কোনও পদ আমি ভালই বানাতে পারি।
প্রশ্ন: আপনি এখন মুম্বইয়ের ‘ওটিটি’ তারকা। সৃজিত মুখোপাধ্যায় মুম্বইয়ের নতুন পরিচালক। রাজি হলেন কাজ করতে?
পঙ্কজ: ছবির বিষয় অসাধারণ। সৃজিত মুম্বইয়ে নতুন, কিন্তু বাংলায় তিনি প্রচুর ভাল ভাল কাজ করেছেন। জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। ওঁর সঙ্গে কাজ করা একটা অভিজ্ঞতা। আর আমি তারকা নই।
প্রশ্ন: মানে?
পঙ্কজ: আমি তারকা নই। আমি আমজনতার অভিনেতা। দর্শকেরই এক জন। হ্যাঁ, অবশ্যই এখন ‘ওটিটি’-র পাল্লা ভারী। এই দু’বছরে মানুষের অনেক কাছে পৌঁছে গিয়েছি। এখন কিন্তু গল্প বলার ধরন বদলেছে। সেই কারণে ওটিটি-র রমরমা।
প্রশ্ন: কোভিড, লকডাউন তা হলে আপনার কাছে আশীর্বাদ?
পঙ্কজ: হ্যাঁ, সেই সময়ে প্রায় ৯-১০টা কাজ ছিল আমার হাতে। তখন চার দিকে শুধু আমিই ছিলাম। ‘মিমি’, ‘মির্জাপুর’, ‘কাগজ’, ‘লুডো’ আরও কত কী। আমাকে দেখে তখন দর্শকরা ভাবতেন— আরে! এমন প্রতিভা এত দিন কোথায় লুকিয়ে ছিল! নিঃসন্দেহে আমার কাছে সেই সময়টা আশীর্বাদ।
প্রশ্ন: প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আজ এত সাফল্য, গ্রামে গেলে এখন মানুষ কী বলেন?
পঙ্কজ: গ্রামের মানুষদের কাছে আমি এখনও সেই পঙ্কজ আছি। আমি নিজেও তা-ই চাই। এখনও গ্রামে গেলে নিমের দাঁতন করি। আমার ব্যাগে টুথব্রাশ, মাজন কোনওটাই থাকে না। অন্যান্য গ্রাম থেকে বাচ্চারা চলে আসে ছবি তুলতে। আমার বাবা বলেন, আমিই নাকি ডেকে এনেছি ওদের! আমি কিছুতেই বোঝাতে পারি না যে, আমি একেবারেই ডাকিনি। ওরা কী ভাবে যেন খবর পেয়ে যায় যে, আমি গ্রামে এসেছি!
প্রশ্ন: গ্রামে নিশ্চয়ই আপনাকে অন্য নামে ডাকে সবাই?
পঙ্কজ: হ্যাঁ, ওখানে একটা নাম আছে বটে। কিন্তু জনসমক্ষে তা বললে হাসাহাসি হবে। তাই বলব না।
প্রশ্ন: ‘শেরদিল’ থেকে কী পেলেন?
পঙ্কজ: মানব প্রজাতির বেঁচে থাকা যেমন জরুরি, তেমনিই জঙ্গল, পশুপাখি সকলের থাকাও একই ভাবে জরুরি। গল্পের মোড়কে বাস্তবকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে সৃজিত। আর আমি তো গ্রামের মানুষ। মাটির মানুষ। চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে অনেক সুবিধা হয়েছে।
প্রশ্ন: ‘মির্জাপুর’-এর পরের সিজন আসছে। বেশির ভাগ সিনেমা, সিরিজের সিক্যুয়েল হচ্ছে ইদানিং। একই চরিত্রে বারবার অভিনয় করতে ভাল লাগে?
পঙ্কজ: সিনেমায় সত্যিই সিক্যুয়েল করতে ভাল লাগে না। কিন্তু সিরিজে মন্দ লাগে না। অনেক সময়ে তো আবার পরিচালকেরা আগের কাজ দেখিয়ে বলেন, আপনি এই দৃশ্যে এ ভাবে অভিনয় করেছিলেন, এ বারও ওই অভিনয়টাই চাই।
প্রশ্ন: বাংলা ছবিতে কবে দেখা যাবে?
পঙ্কজ: আমি বাংলা কথা স্পষ্ট বলতে পারি না। তাই বাংলা ছবিতে হিন্দিভাষীর চরিত্র করতে হবে। তেমন চরিত্র পেলে এখনই রাজি হয়ে যাব। কিন্তু বাংলায় ছবি করলাম, অথচ ডাবিং করল অন্য কেউ, এটা আমার পছন্দ নয়।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy