প্রসেনজিৎ-জয়া।
‘‘রবিবার’’-এর গান নিয়ে তো চারদিকে হইহই!
প্রসেনজিৎ: সত্যিই এত ছড়িয়ে যাবে এই গান ভাবিনি। ইন্ডাস্ট্রির নাম করা পরিচালকেরা ফোন করে আমায় ‘রবিবার’-এর গান নিয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন।
যেমন? নাম বলুন না...
শিবু (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়)। ও তো ফোন করে বলল, এই গান আমরা কেন পেলাম না? আমি বললাম গানটা যে ওদের ওখানে, মানে ওদের প্ল্যাটফর্মে আগে আসতে পারত আমি সত্যিই জানতাম না। আসলে এই গান এত জনপ্রিয় হয়েছে কারণ নতুন প্রজন্ম নিজের স্বর খুঁজে পাচ্ছে। ছবিও ঠিক সেরকমই।
‘রবিবার’ তো সেই সম্পর্কেরই ছবি...
প্রসেনজিৎ: বাঙালি আজও সম্পর্কের গল্প শুনতে চায়। তাই ‘জতুগৃহ’দেখে, আর এ বার ‘রবিবার’দেখবে।
এতক্ষণ মন দিয়ে শুনছিলেন জয়া তাঁর বুম্বাদার কথা। এ বার কথা বললেন।
জয়া: ‘রবিবার’ একেবারেই আধুনিক সম্পর্কের গল্প। দুটো চরিত্র খুব স্পষ্ট কথা বলে।
প্রসেনজিৎ: কোনও ন্যাকামি নেই।
জয়া: হ্যাঁ। একদম তাই। অভিনয় করতে করতে মনে হচ্ছিল সত্যিই একটু ন্যাকাম যদি সায়নীর মধ্যে দেখা যেত! ইনফ্যাক্ট, সায়নী এখানে এমন চরিত্র যে সম্পর্কের মধ্যে থেকেও বাইরে এসে একটা নৈর্বক্তিক জায়গা থেকে এই সম্পর্কের হিসেব নিকেষ করছে। আগে তার এই সম্পর্ক ছিল। এখন আর নেই। সায়নী ভীষণ বুদ্ধিমতী। আমি তো বলব আমি সায়নীর মতো হতে চাই।
আরও পড়ুন-সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করে ট্রোলের শিকার, টুইটার ছাড়লেন জাভেদ জাফরি
‘রবিবার’-এ প্রসেনজিৎ-জয়া
আপনিও তো বুদ্ধিমতী! ইন্ডাস্ট্রি বলছে জয়া বুদ্ধি দিয়ে কেরিয়ার সাজাচ্ছে!
(জয়া তাঁর বিপরীতে নায়কের দিকে সলজ্জ হাসেন)
জয়া: বুম্বাদা! কী বলছে শোন! আমি নাকি বুদ্ধিমতী?
প্রসেনজিৎ: জয়া ওর মতো করে বুদ্ধিমতী। প্রফেশনাল। তবে এর সঙ্গে যোগ করতে হবে ওর ডিগনিটি। জয়ার ডিগনিটি আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ বার যদি সায়নীর কথায় আসি, সায়নী ক্রাইম নিয়ে লেখে। শুধু বুদ্ধিমতীই নয়, প্রতিশোধপরায়ণ।
জয়া: অসীমাভও ইক্যুয়ালি রেভেঞ্জফুল!
প্রসেনজিৎ: আসলে একটা মানুষ চাওয়া পাওয়ার বৃত্তে ঘুরতে ঘুরতে যখন অনেকখানি না পাওয়া নিয়ে বাঁচে তখন তার মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা জেগে ওঠে। এ বার ‘রবিবার’দেখে মানুষ বুঝবেন তা কতটা ভালবাসার আর কতটা প্রতিশোধের। ভালবাসা খানিক এগিয়ে...
আরও পড়ুন-‘মিথিলাকে তিন কোটি টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছেন সৃজিত’! পরিচালক বললেন...
জয়ার কি মনে হয়, ভালবাসা না প্রতিশোধ, লড়াইয়ে কে জেতে?
জয়া: মানুষ তার ওপরেই ঘৃণা, ক্ষোভ, প্রতিশোধ উগরে দেয় যাকে সে ভালবাসে। এখানেও তাই হচ্ছে।
বুম্বাদার সঙ্গে এই ক্ষোভ রাগের অভিনয় করতে অসুবিধে হয়নি আপনার?
জয়া: খুবই! সায়নী চরিত্রটা যা ট্যারা! বাপরে! অসীমাভও দু’কাঠি সরেস। সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে সায়নী হয়ে বুম্বাদার মতো মানুষকে কড়া কথা বলা...খুব শক্ত ছিল। আগে তো নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে মানুষটা অমন। ভাবুন আমার অবস্থা! খুব শক্ত কাজ।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন...
জয়া: জুটি না বলে আমি নিজেকে কো-অ্যাক্টর বলতে চাই। রবিবারে নায়ক-নায়িকা নেই। দুটো চরিত্র আছে। এ ভাবেই ছবিকে দেখতে হবে।
প্রসেনজিৎ: লাস্ট দশ বছরে আমি যদি কুড়িটা ছবি করে থাকি তাতে নায়ক-নায়িকা, এ ভাবে ভেবে কিন্তু ছবি করিনি।হ্যাঁ, আপনি ‘ক্ষত’বা ‘প্রাক্তন’-এর কথা বলতে পারেন। কিন্তু ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ দেখুন। নায়ক তার নায়িকা, এ ভাবে আর ছবি করছি না আমি। ইনফ্যাক্ট। এখন আমার লুকেই আমি ক’টা ছবি করছি?
কিন্তু লোকে তো বলছে ‘রবিবার’-এ প্রসেনজিৎ-জয়া অনস্ক্রিন ম্যাজিক তৈরি করছে!
প্রসেনজিৎ: হ্যাঁ বলছে তো। শুনছি। মানুষ আমাদের ‘রবিবার’-এর ট্রেলার দেখেই উচ্ছ্বসিত! কিন্তু তাই বলে পরের ছবিই নিশ্চয় জয়ার সঙ্গে করব না।
অন্য লুকে জয়া-প্রসেনজিৎ
সে কী! কেন?
প্রসেনজিৎ: মানুষকে অপেক্ষা করাতে হয়। আমি এই ধারায় বিশ্বাসী। ‘রবিবার’ দেখার পর দীর্ঘকাল মানুষের মনে সায়নী-অসীমাভ থাকুক। দর্শক খুঁজুক এদের। খিদে তৈরি হোক। তারপর দেখা যাবে।
জয়া: আমাদের একসঙ্গে দেখার জন্য খিদেটা আমাদেরই জিইয়ে রাখতে হবে।‘রবিবার’ যাতে বহুদিন মানুষের মনে থাকে তার দায়িত্ব আমাদের।
আরও পড়ুন- মালাইকার সঙ্গে বিচ্ছেদ, সন্তানের দায়িত্ব...মুখ খুললেন আরবাজ খান
কী মনে হল? প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের খিদেই তাঁকে চিরকালীন করেছে?
জয়া:বুম্বাদা অভিনয় করেনা এমন মানুষ। এমন মানুষ যে স্টার হয়ে প্রফেশনাল ডিজাইনের বাইরে এসে সামনে দাঁড়ায়। যেন আজ থেকে প্রথম চরিত্র হয়ে উঠলেন। অতনুদা চাইলে দুমড়েমুচড়ে কাদার তাল বানিয়ে দিতে পারে এই ম্যাজিকাল মানুষটাকে। বুম্বাদা সেটাই করবে। আশ্চর্য হয়ে যাই ভেবে, এরই নাম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়!
পরিচালক অতনু ঘোষ বলেছেন, প্রসেনজিৎ-জয়া দু’জনেই বলে চেষ্টা করছি। বলে না, করে দেব!
প্রসেনজিৎ: পরিচালক ছবিতে এক ভাবে ভাবছেন আমায়। সেই মতো চেষ্টাই তো করব। এটাই তো স্বাভাবিক! (জয়ার দিকে তাকিয়ে)ও জানে,শট দেওয়ার পর আমি জোন থেকে কখনও বেরিয়ে যাই না। অতনুর কাছে জানতে চাই ঠিক আছে কিনা শট। বলি আর একবার যাব কিনা...এই সব হয়ে যাওয়ার পর যখন বুঝি ‘ওকে’তখন সিগারেট খেতে যাই। এটাই আমার স্বভাব।
জয়া: বুম্বাদার জন্যই এত সাবলীলভাবে অভিনয় করতে পারলাম। অতনুদা, ছবির সিনেমাটোগ্রাফার ইউনিট অসম্ভব সহযোগিতা করেছে।
জয়া, আপনি নাকি ‘রবিবার’-এ নিজে থেকেই কোনও মেক আপ করেননি! এত আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে পান?
প্রসেনজিৎ: কারণ মেক আপ ছাড়া ওকে সবচেয়ে ভাল দেখায়।
জয়া: (সলাজ হাসি) বুম্বাদা এটা দিয়ে দিলে তো!
প্রসেনজিৎ: শুধু জয়াকে নয়। আমি আমার বেশিরভাগ নায়িকাকে বলি, অযথা মেক আপের প্রয়োজন নেই। বলি, তোরা তো আর সেই লোকটার সঙ্গে কাজ করলি না যে সেটে এসে নায়িকাদের মেক আপ নিজের হাতে মুছে দিত। তাঁর নাম ঋতুপর্ণ ঘোষ। দলুকে (রাইমা সেন) ঋতুপর্ণর প্রত্যেক ছবিতে যা ভাল দেখতে লেগেছে তা আর কোথাও লাগেনি। আর তার কারণ একেবারেই যৎসামান্য মেকআপ।এক সময় চুটিয়ে কমার্শিয়াল করেছি। গানের শুট।মুখে হাল্কা জলের স্প্রে আর চুলটা সেট করলাম। ব্যস! আর কিছু না।রচনা, ঋতু সবাই রেগে যেতো। বলত, গানের শুট, একটুতো মেক আপ কর! আমি করতাম না। চরিত্র অনুযায়ী মেক আপ হবে। এটা ভাবতে হবে। জয়ার উত্তরটা বলে দিলাম। সরি...
আরও পড়ুন-মহাভারতে দ্রৌপদী দীপিকা, কৃষ্ণ কে হতে পারে জানেন?
আপনি বলবেন না তো কে বলবে?
জয়া: ঠিক তাই। সব চরিত্রের গ্ল্যামার আছে। একটা ঘুঁটেকুড়ুনির চরিত্র, তারও গ্ল্যামার আছে। ভেতর থেকে আসে সেটা। ভাবুন তো স্মিতা পাটিল! কোন মেক আপ করতে হয়েছে তাঁকে?
প্রসেনজিৎ: আমরা সব্বাই পাগল স্মিতা পাটিলকে নিয়ে।
জয়া: চড়া মেক আপ পরদায় ফুটে উঠবেই। রাগ হলে আমার নাক লাল হয়। ফুলে যায়। সেটা যদি মেক আপে ঢেকে দিই তাহলে আমার স্বাভাবিক অ্যাকশনই নষ্ট হয়ে যাবে। আমার মাসলের ওঠানামা কিছুই বোঝাতে পারব না। স্কিনের নীচ থেকেই তো অভিনয় বেরিয়ে আসবে। রং দিয়ে ঢাকলে চলবে? কি বুম্বাদা, ঠিক বললাম তো?
‘রবিবার’ লুকে জয়া
আপনারা দেখছি দু’জনে একে অন্যের মতামত নিয়ে উত্তর দিচ্ছেন! খুব কাছের মানুষ হলে এমন হয়। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কি এখন জয়ার প্রেমে পড়েছেন?
প্রসেনজিৎ: ঠিক শুনেছেন। তবে ছবিতে।
(জয়ার প্রবল হাসি)জয়া: ছবিতে সব ‘জায়েজ‘ হ্যায়।
দেশের অনেক অভিনেত্রী নাকি বলছেন, জয়া বাংলাদেশের বলে তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়।প্রসেনজিৎ, আপনার কী মনে হয়?
প্রসেনজিৎ: জয়ার সামনে প্রচুর কাজ আসছে। দর্শক বুঝে নেবে ওকে।
জয়া: আমি কিন্তু সামনে কিছু শুনিনি। তবে বাংলাদেশেও এখানকার আর্টিস্টকে মাথায় করে রাখা হয়।
আরও পড়ুন-পরিচালকের গার্লফ্রেন্ডের প্রেমে পড়েই বলিউডে প্রথম ব্রেক পেয়েছিলেন সলমন!
উল্টোটাই শোনা যাচ্ছে কিন্তু! এ পারের আর্টিস্ট ওপারের ছবিতে কাজ করেও যোগ্য সম্মান পায়নি।
জয়া: নাহ্। এটা আমি মানতে পারলাম না। বাংলাদেশ এ পারের শিল্পীকে মাথায় করে রাখে। বুম্বাদা তুমি বল...
প্রসেনজিৎ: অবশ্যই। এখানকার মতোই ভালবাসা আমি ঢাকা গেলে পাই।
শুরু হল ফটোশ্যুট।ঘনিষ্ঠ হলেন জয়া-প্রসেনজিৎ...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy