শিবপ্রসাদ
প্র: বাংলা ছবির মার্কেট খারাপ। কিন্তু চারদিকে এত ছবি হচ্ছে...আর সব ছবিই নাকি সফল...আপনি কী বলেন?
উ: উই শুড ডিক্লেয়ার দিস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাজ আ ডোনেশন ইন্ডাস্ট্রি! সাতশো পঞ্চাশটা হল থেকে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখন দু’শো কুড়িটা হলে এসে দাঁড়িয়েছে। তার উপর পশ্চিমবঙ্গে সব ছবিই এখন আরবান মাল্টিপ্লেক্স কেন্দ্রিক। কমার্শিয়াল ছবি ওয়র্ক করছে না। মাল্টিপ্লেক্স কেন্দ্রিক বাংলা ছবিগুলোর অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ শো-টাইম ‘মাস্ট’ না করা হলে, হিন্দি ছবির সঙ্গে লড়াইয়ে দাঁড়াতেই পারব না আমরা! তা ছাড়া ২০১৭ সালে বাংলা ছবি ভাল ফলই করেছে। তা হলে বাংলা ছবি সব হলে প্রাইম টাইমে দেখানো হবে না কেন?
প্র:২০১৭-তে বাংলা ছবি ভাল করেছে বলছেন। তার মধ্যে অন্যতম আপনাদের ‘পোস্ত’। বক্স অফিস সাফল্যের ফর্মুলাটা কী?
উ: দেখুন, ‘পোস্ত’ যে ব্যবসাটা করেছে, সেটাই কিন্তু শেষ নিরিখ। ওর চেয়ে বেশি ব্যবসা কেউ কোনও দিন করতে পারবে না। কারণ ভাল ছবি করা বা দারুণ ছবি করাটা মাপকাঠি নয়। বেশি সংখ্যক শো না পেলে কোনও দিনই ছবি ব্যবসা করবে না। সবচেয়ে বড় কথা, বাঙালি পরিচালকদের এ বার নাম্বার গেমে আসতেই হবে।
প্র: প্রকারান্তরে বলে দিলেন যে, আপনাদের ছবিই সেরা!
উ: একেবারেই তা বলছি না। অন্যদের ছবি নিয়ে আমি কথাও বলতে চাই না। চাই, বাংলা ছবি নিয়ে একটা আন্দোলন হোক। যে ভাবে মরাঠি কিংবা তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হয়েছে। বাংলায় তো ইম্পা-র কোনও ভূমিকাই নেই। প্রযোজকদের স্বার্থ যদি না দেখা হয়, ছবি হবে কেমন করে?
আরও পড়ুন: 'ইচ্ছেপূরণ হচ্ছে এখন'
প্র: তা হলে বলছেন, একটা ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর মতো ছবি দরকার এখানে?
উ: তা কেন! আমাদের এখানে আরও অজয় কর, বিমল রায়, তপন সিংহ প্রয়োজন। আমরা এ ভাবে ভাবতে পারছি না কেন বলুন? নিজেদের রিসোর্স থাকতে
আমাদের বলিউডের অনুকরণ করতে হবে কেন?
প্র:‘ভেঙ্কটেশ’-এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আপনি একের পর এক নিজের কনটেন্ট দিচ্ছেন। গাঁটছ়ড়াটা হয়েই গেল?
উ: না, না। আমার তো এক-একটা রাইট্স এক-এক জায়গায় দেওয়া। বাংলাদেশ রিলিজের স্বত্ব এক জায়গায়, প্যান ইন্ডিয়া রিলিজের স্বত্ব আর এক জায়গায়, ডিজিটাল এবং স্যাটেলাইট রাইট্স আবার অন্য জায়গায়।
প্র: ভেঙ্কটেশ-এর সঙ্গে ছবি করছেন বলে কিন্তু শোনা যাচ্ছে।
উ: কোনও দিন নয়। সেটা আমার জন্যও খারাপ, ওদের জন্যও খারাপ আর ইন্ডাস্ট্রির জন্যও খারাপ (জোরে হাসি)!
প্র: এটা কি জায়গা না ছাড়ার লড়াই?
উ: ফিল্মোগ্রাফের দিক থেকে ভেঙ্কটেশের কাছে তো আমরা শিশু। লড়াইয়ের প্রশ্নই আসে না! আসলে আমি, নন্দিতাদি (রায়), অতনুদা (রায়চৌধুরী)...এই টিমটাকে নিয়ে আমরা খুবই হ্যাপি। একটা সময়ে প্রোডিউসার পাইনি, হল পাইনি, স্পেশ্যাল ডে পাইনি। তার ফলে ছবি বানিয়ে নিজেরাই ডিস্ট্রিবিউট করা শুরু করলাম। তার জন্য অনেক হাঁটাহাঁটি করতে হয়েছে। ধাক্কা খেতে হয়েছে। তার পরেই একটা জায়গা বানাতে পেরেছি আমরা। সেটা ছেড়ে যাব না।
প্র:‘রসগোল্লা’র বাজেট আড়াই কোটি। নিজেদের কোনও ছবি এই বাজেটে বানাননি...
উ: এটা পুরোপুরিই সিনেমানির্ভর সিদ্ধান্ত। পাভেল যে দিন স্ক্রিপ্ট শুনিয়েছিল, সে দিনই বলেছিল বাজেট বেশি এই ছবির। আমরা জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার সাবজেক্ট কী? এ রকম বিষয় নিয়ে ছবি করতে এলে আমরা তো ‘না’ করব না!
প্র:‘পোস্ত’র পর বিশ্বভারতীতে আর কোনও ছবির শুটিং হবে না...
উ: ‘পোস্ত’র পর অমর্ত্য সেনকে নিয়ে ডকুমেন্টারিও তো বিশ্বভারতীতেই শুট হয়েছিল। যাই হোক, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। পরিচালক হিসেবে আপনি শুধু শুট করার ইচ্ছেটা প্রকাশ করতে পারেন।
প্র: নতুনদের কী বলবেন?
উ: ইন্ডাস্ট্রিতে অসংখ্য ছেলেমেয়ে আসছেন শুধু পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু সিনেমা তো একা পরিচালক তৈরি করেন না! একটা ভাল স্ক্রিপ্টরাইটার নেই ইন্ডাস্ট্রিতে। ভাল ডায়লগ রাইটার নেই। কোনও কাস্টিং ডিরেক্টরও না। কত ভাল থিয়েটার অভিনেতা আছেন বাংলায়! তাঁদের কথা যদি নিয়মিত কোনও এজেন্সি পরিচালকদের জানায়, জিনিসটা কত যুক্তিসংগত হতে পারে! যেমনটা মুম্বইয়ে হয় আর কী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy