দর্শকদের হার্টথ্রব শনা। ছবি: শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।
এ বারের পুজোয় কী প্ল্যান?
শন: আগের বছর দুটো ঠাকুর দেখেছিলাম, দুর্গাবাড়ি আর বালিগঞ্জের। আর প্রচণ্ড ঘুমিয়েছিলাম (হাসি)। এ বার ইচ্ছে আছে কোনও বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সেখানকার আবাসিকদের সঙ্গে সময় কাটাব। দেখা যাক, করোনা আবহে কতটা কী হয়।
‘হিয়া’-কে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোবেন না?
শন: এই খবর কে দিল? এমন খবর তো আমার কাছেও নেই!
‘এখানে আকাশ নীল’ দর্শকদের জন্য তো ‘ইয়ান’! ‘হিয়ান’ কনটেস্ট শুরু হবে। পুজোয় সেলিব্রেশন হবে না?
শন: (হেসে ফেলে) দর্শকেরা ভীষণ ভালবেসে রোজই সোশ্যাল পেজে উদযাপন করছেন। ভাল লাগছে। চাপও বেড়ে যাচ্ছে। ‘হিয়ান’ প্রতিযোগিতা দর্শকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যাতে আরও জোরালো হয় তার জন্যই।
আরও পড়ুন: ‘মাসাবা মাসাবা’: হ্যাশট্যাগ, কালো কফি আর উন্মুক্ত ক্লিভেজের বাস্তব গল্প
আরও পড়ুন: ‘সেই রাতে তিন দিদির সঙ্গে জোর ঝামেলা, সুশান্তকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে’
‘হিয়া’ অনামিকা চক্রবর্তী আচমকা অফ। শনের একটুও মনখারাপ হয়নি?
শন: (বিস্মিত) অনামিকার সমস্যা ওকে কাজ থেকে সাময়িক দূরে রেখেছিল। মনখারাপ করতে যাব কেন! হ্যাঁ, অনামিকাকে আগে থেকে চিনি। একসঙ্গে কাজও করেছি ‘একটা ভালোবাসার গল্প’ ছবিতে। সেটাই হয়তো ক্লিক করেছে অভিনয়ে। জুটির জনপ্রিয়তায়। এর বেশি কিচ্ছু না।
এ দিকে ‘হিয়ান’-এর জনপ্রিয়তায় ‘ঝিনুক’ সোশ্যাল ট্রোলিংয়ের শিকার...
শন: (একটু থেমে) হ্যাঁ, শুনেছি। আমি বলব, এর পজিটিভ, নেগেটিভ দুটো দিকই আছে। ‘ঝিনুক’ প্রমীতা চক্রবর্তীর সঙ্গে যা হয়েছে সোশ্যালে, ভীষণ অন্যায়। কতটা নিখুঁত অভিনয় করলে দর্শকের এই রিঅ্যাকশন হয়, এক বার ভাবুন। প্রমিতা ওর কাজে একশোয় একশো।
‘ইয়ান’-এর জনপ্রিয়তা না চাইতেই ঋষি কৌশিকের সঙ্গে তুলনা, সমালোচনার জন্ম দিয়েছে?
শন: একেবারেই না। কারণ, ‘সিজন ১’ এর সঙ্গে ‘সিজন ২’-এর কোনও মিল নেই। কয়েকটি এপিসোডে ঋষিদার অভিনয় দেখেছি। নতুন সিজনের গল্প অন্য হওয়ায় অনুসরণ, অনুকরণ কিছুই করতে হয়নি। করার চেষ্টাও করিনি। বরং, চরিত্রে ডুবেছি। যখন যেমন শেডস এসেছে জীবন্ত করার চেষ্টা করেছি। আর হ্যাঁ, হাউজ ফিজিশিয়ানের অনেক ‘ম্যানারিজম’ ফুটিয়েছি উজান চরিত্রে।
‘এখানে আকাশ নীল’-এ শন। —ফাইল ছবি।
‘আমি সিরাজের বেগম’-এর পর ‘উজান চ্যাটার্জি’ কি টাইপ কাস্ট হওয়া থেকে বাঁচল?
শন: এটা বলতে পারেন। শুরুতেই পিরিয়ড ড্রামা বা ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করলে টাইপড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর ‘সিরাজ’ চরিত্র হিসেবেও যথেষ্ট শক্ত। সেই সময়ের ঊর্দু মেশানো বাংলা বলা, ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার চালানো শিখতে হয়েছে। সে জায়গায় ‘উজান’ অনেক বেশি কাছের। এই প্রজন্মের। আমি যদিও ‘সিরাজ’-এর অডিশনে খুব ভাল ফল করিনি। তার পরেও আমাকে নেওয়া হয়েছিল।
সুপ্রিয়া চৌধুরীর নাতি বলে?
শন: সবাই তেমনটাই ভাবেন। আসলে তা নয়। ওঁরা কোনও কারণে আমার উপর নির্ভর করা যায় ভেবেই হয়তো নিয়েছিলেন। তা হলে তো অডিশনই দিতে হত না!
বিশেষ এক জনের ‘নাতি’ হওয়া সুবিধের না বিপদের?
শন: (হেসে ফেলে) খু-উ-ব চাপের। প্রথম দিন থেকেই সমালোচনা। দিদা বনাম নাতির। কিন্তু অভিনয় দুনিয়ায় আমি তখনই টিকব যখন আমার মধ্যে প্রতিভা থাকবে। দিদা, দাদু, মা-বাবা দিয়ে ক’দিন চলে? আমি কিন্তু প্রত্যেকটা কাজে অডিশন দিয়ে চান্স পেয়েছি। দিদাও বলতেন, চির দিন আমি থাকব না। তোমায় দেখব না। নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে। সেই তাড়না আমায় দিয়ে দিনের পর দিন পরিশ্রম করিয়ে নেয়।
উজানের মতোই শনও অন্তর্মুখী। ছবি: শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।
আপনি কনভেন্ট এডুকেটেড। অন্য কিছুও তো করতে পারতেন?
শন: অনেকেই হয়ত জানেন না, আমি খুব ভাল আঁকতে পারি। তবু আমি অভিনয়ে, কারণ দিদা। এই একটা ক্ষেত্রে দিদার প্রভাব ছিল। দিদা সারা ক্ষণ অভিনয় নিয়ে কথা বলতেন, মতামত দিতেন। আমার প্রথম সিনেমা দেখা দিদার সঙ্গে। ফলে, মাথায়, মনে অভিনয় ছাড়া আর কিছুই কোনও দিন জায়গা পায়নি।
দিদা নিশ্চয়ই দাদু ‘মহানায়ক’ উত্তমকুমারের কথাও বলতেন?
শন: ভীষণ ভাবে। দিদার সব কথায় দাদু থাকতেনই। অভিনয় নিয়ে কথা হচ্ছে বা ছবি দেখছি। ওমনি দিদার তুলনা, দাদু হলে ওই সংলাপ এ ভাবে বলতেন। দাদুর নানা স্মৃতি, টুকরো মুহূর্ত গল্পে ঢুকেই পড়ত। বড় হয়ে বুঝেছি, কত গভীর ভালবাসলে নিজের জীবনের সঙ্গে এক জনকে এ ভাবে জড়িয়ে নেওয়া যায়। দাদুকে খুব মিস করতেন দিদা, সব সময়।
পর্দা বলে, শনও প্রচণ্ড রোম্যান্টিক… নিজের প্রেম হয়নি?
শন: (হাল্কা হেসে) এই ব্যাপারে আমার সঙ্গে উজানের বেশ মিল। আমিও অন্তর্মুখী। প্রেমের কথা কাউকে মুখ ফুটে বলব? ভাবতেই পারি না! এমন কেউ আসেওনি জীবনে এখনও।
আপনার নাকি এক জন বয়সে বড় প্রেমিকা আছেন?
শন: (জোরে হাসি) তাই? সত্যিই জানি না! একদিন সামনে আনবেন? দেখব।
অগুন্তি অনুরাগিনী। তাঁরা কেউ, কোনও দিন জড়িয়ে-টড়িয়ে ধরেননি?
শন: আমি জড়িয়ে ধরেছিলাম। ক্লাস টেন কি টুয়েলভের এক ছাত্রী। দারুণ অভিমান করেছিল আমার উপর। সোশ্যালে ওর কোনও একটি মন্তব্যে আমি মন্তব্য করিনি, তাই। তার পর সেটে সামনাসামনি হতেই সে কী কান্না! জড়িয়ে ধরে ভোলাতে হয়েছিল তাকে। আচমকা কান্নাকাটি দেখে প্রথমে খুব অস্বস্তিতে পড়েছিলাম। পরে ভাল লেগেছিল ফ্যানের এ রকম পাগলামিতে।
ঝুলিতে বাংলা, হিন্দি দু’ধরনের ছবিই আছে। কোন দিকে ঝুঁকবেন? টলিউড না বলিউড?
শন: (চওড়া হাসি) বাংলা ছবি করব। তার জন্য আরও ভাল বাংলা উচ্চারণ রপ্ত করছি। কারণ, এটায় আমি দুর্বল। যে মাটি শক্ত সেখানে কাজ করে সফল হওয়া, জনপ্রিয়তা পাওয়া বেশি গর্বের, আনন্দের।
‘মহানায়ক’ দাদুর মতো রোম্যান্টিক ইমেজে?
শন: আমি কখনও কারও মতো করে কিছু করতে পারব না। উত্তমকুমার তাঁর মতো। আমি আমার মতো। দাদুকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু দাদুর জীবনী পড়ে জেনেছি, কত পরিশ্রম করলে ‘ফ্লপ মাস্টার জেনারেল’ তকমা সরিয়ে ‘মহানায়ক’ হওয়া যায়। এটা সত্যিই অনু্প্রেরণা জোগায়।
গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়? মহানায়কের দুই নাতি স্ক্রিন শেয়ার করবেন না?
শন: হ্যাঁ, দেখা হয়। কথাও হয় (হাসি)। অভিনয় জীবনের প্রথমে আমাদের তুলনাও টানা হয়েছিল। আর স্ক্রিন শেয়ার? ওটা এখনই কী করে বলি! স্ক্রিপ্ট শুনে, চরিত্রের গুরুত্ব বুঝে তবে না ঠিক করব!
উইকিপিডিয়ায় ‘উজান চ্যাটার্জি’ কেন শুধুই সোমা চৌধুরীর ছেলে?
শন: (শান্ত গলায়) উইকিপিডিয়া কেন বাবার নাম দেয়নি, কী করে বলব? এটুকু বলতে পারি, বাবা এখন বাংলাদেশে আছেন। তাই খুব বেশি দেখা, কথা হয় না। তবে যখনই আসেন কোয়ালিটি টাইম কাটিয়ে যান। আমিই বরং নামটা জানাই? আমার বাবা মৃগেন বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy