Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘পরিচালক-প্রযোজকরা নতুন মুখ নিয়ে কাজ করার ঝুঁকি নিতে চান না’

আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি জনপ্রিয় অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায়আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি জনপ্রিয় অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায়

ঊর্মি নাথ
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

ধারাবাহিকের কাজের চাপের মধ্যে আচমকা ছুটি পেয়ে গেলেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। সেই ছুটিতেই বসলেন আড্ডা দিতে। যখন জানতে পারলেন দেবযানী নয়, গিনি রায়ের বাড়ি বলায় লোকে সহজে চিনিয়ে দিয়েছে, তখন তাঁর হাসি থামে না। দেবযানী কি তা হলে গিনিতে ঢাকা পড়ে গিয়েছেন? বললেন, ‘‘গিনি চরিত্রটা মাইলস্টোন। কয়েক দিন আগে ‘অদ্য শেষ রজনী’ নাটক করতে দিল্লির থিয়েটার উৎসবে গিয়েছিলাম। শো শেষে দেখি আমার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য অনেকে দাঁড়িয়ে। থিয়েটার-প্রিয় বাঙালি দর্শক সেখানে গিনির জন্য এতটা উৎসাহ দেখাবেন, আশা করিনি। গিনির মতো এত জনপ্রিয়তা আগে পাইনি,’’ বিস্ময় তাঁর মুখে। দেবযানী মনে করেন, লুক ও সংলাপও গিনিকে জনপ্রিয় করেছে। চরিত্রটা করতে গিেয় কি গয়নার প্রতি প্রেম বেড়েছে? ‘‘ওরে বাবা, একদম নয়। এত গয়না পরেছি যে, গয়না দেখলেই ভয় হতো,’’ বললেন তিনি।

অভিনয়ের হাতেখড়ি নাটক দিয়ে। বন্ধুরা মিলে তৈরি করেন ‘ঢাকুরিয়া ঐকান্তিক’। ছোট পর্দায় প্রথম কাজ ‘পুলিশ ফাইল’। ‘‘ভরতদা (কল) ডেকেছিলেন ধারাবাহিক ‘লজ্জা’র জন্য। সেখানে শুটিংয়ের সময়েই দেবীদাস ভট্টাচার্যের ‘প্রতীক্ষা, একটু ভালবাসা’ করার সুযোগ আসে। ‘লজ্জা’র আগে সম্প্রচার হয় ‘প্রতীক্ষা...’ সেই শুরু, এখনও চলছে।’’ একঘেয়ে লাগে না? ‘‘এখন লাগে। যখন অভিনয় শুরু করেছিলাম, কত ধরনের কাজ হতো। সেগুলো অভিনয় শিখতে সাহায্য করেছে। এখন অভিনয়ের পরিসরটা ছোট হয়ে আসছে।’’ বড় পর্দায় বিভিন্ন চরিত্র করার সুযোগ আছে। কিন্তু ‘দুর্গা সহায়’ ছাড়া সিনেমায় আপনাকে মনে পড়ছে না। কেন? ‘‘এটা অদ্ভুত। মজারও। অনেকেই বলেন, ‘তুই ছোট পর্দার জন্য নোস।’ অথচ তাঁরাই আমাকে নিজেদের ছবিতে ভাবতে পারছেন না। এখন বাংলা সিনেমায় একই মুখ ঘুরে ফিরে দেখা যায়। পরিচালক-প্রযোজক কমফর্ট জ়োন থেকে বেরোতে চান না। নতুন মুখ নিয়ে কাজ করার ঝুঁকি নিতে চান না। এটা ইন্ডাস্ট্রির কূপমণ্ডূকতাই বলব।’’ এ বার তো প্রযোজনাও করছেন! ‘‘আমি ও আমার স্বামী অরিজিতের স্বপ্নের সন্তান ‘গোল্ডেন আই’। ‘ধারাস্নান’ আমাদের প্রথম প্রযোজিত ছবি। আমরা নতুন শিল্পী নিয়েছি। কাঞ্চন মল্লিক অন্য রকম চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ঝুঁকি নিতে ভয় পাইনি।’’

ব্রাত্য বসুর পরিচালনায় ‘অদ্য শেষ রজনী’ ও বাংলা থিয়েটার কলকাতা নাট্যদলের ‘আহুতি’ নিয়ে তিনি ব্যস্ত। দু’-দুটো মেগা করে থিয়েটারের জন্য সময় বার করা মুশকিল। ‘‘প্রোডাকশন হাউস থেকেও সহযোগিতা পাই। রোজগারের জন্য থিয়েটার করি না, করি নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য। তাই ইচ্ছেটা আমাকে টেনে নিয়ে যায়। একটা বুটিকও খুলেছি।’’ সংসার করার সময় পান? ‘‘আমি একেবারেই সংসারী নই। পরিচালকরাই আমার বাড়ি সামলান।’’ তবে ছেলে অন্তপ্রাণ দেবযানী। ‘‘ছেলে শ্রীশ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। ও আমার প্রিয় বন্ধু। আমার অনেক ছোট বয়সে বিয়ে ও ছেলের জন্ম। বলতে পারেন, আমরা একই সঙ্গে বড় হয়েছি। অভিনয়ের দিকে ছেলের ঝোঁক থাকলেও উৎসাহ দিইনি। আগে পড়াশোনা শেষ করুক, তার পর ভাবা যাবে।’’ কণ্ঠস্বরেই মালুম হল মা হিসেবে দেবযানী কড়া।

শারীরচর্চা নিয়ে সচেতন তিনি। ‘‘এটা দায়বদ্ধতা। আমি ডায়েট মেনে চলি। ওয়র্কআউট করি। আমাকে মাল্টিটাস্কার বলতে পারেন!’’ বিকেলের পড়ন্ত রোদে শেষ হল আড্ডা। দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে তিনি চলে গেলেন বুটিকে। এখন মেতে থাকবেন অন্য রকম সৃষ্টিতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE