প্রসেনজিৎ
প্র: আপনার মতো সাবধানী মানুষও করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছেন...
উ: আমিও অবাক হয়ে গিয়েছি। পয়লা জানুয়ারি থেকে বাড়িতেই ছিলাম। কোথাও যাইনি, কারও সঙ্গে দেখা করিনি। ১২ তারিখে জ্বর হল। টেস্টের রিপোর্ট পজ়িটিভ এল। তৃতীয় ওয়েভে প্রত্যেক ঘরে কেউ না কেউ আক্রান্ত হয়েছে দেখলাম।
প্র: কাকাবাবু বাচ্চারাও দেখতে যায়। এই সময়ে দাঁড়িয়ে তাদের সিনেমা হলে নিয়ে যাওয়া কতটা ঝুঁকির?
উ: বাচ্চাদের সিনেমা হলে নিয়ে যাওয়া যেমন ঝুঁকির, তেমনই এটাও ঠিক যে, গত দু’বছরে ওদের দেখার মতো কোনও ছবি আসেনি। ওদেরও তো বিনোদন দরকার। কত দিন বাড়িতে আটকে বসে থাকবে! বাচ্চাদের আনন্দ দিতে পারাটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার। মাস্ক যেমন আমাদের রোজকার সঙ্গী, তেমন ঝুঁকি নিয়ে চলাটাও স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।
প্র: কাকাবাবু ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ছবি মানে নিশ্চিত হিট ভাবা হত। করোনার পরিস্থিতিতে সাফল্য নিয়ে কি কোনও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে?
উ: ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর রিলিজ় বারবার পিছিয়েছে। গত পুজোয় হল না, তার পর ক্রিসমাসেও সম্ভব হল না। আমার মতে, ক্রিসমাসের সময়টা মিস করা উচিত হয়নি। তখনও কিছু মানুষ সিনেমা হলে আসছিলেন। এখন সবাই আবার ঘরবন্দি। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে। এটুকু বুঝতে পারছি, একশোয় একশো হবে না। সত্তর-আশি হলেও অনেক। আসলে আগেকার পরিস্থিতি হলে, প্রথম দু’সপ্তাহ ছবি ভাল চলতই। কিন্তু এখন কোনও নিশ্চয়তা নেই। ঈশ্বর আর সুনীলদার (গঙ্গোপাধ্যায়) ম্যাজিকই এখন আমাদের ভরসা।
প্র: সাউথ আফ্রিকায় গিয়ে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: এককথায় অনবদ্য। একদম গভীর জঙ্গলের মধ্যে শুট করেছি আমরা। হাতির সঙ্গে একটা দৃশ্য আছে, ওটা দারুণ অভিজ্ঞতা। একটা জায়গায় আমি আর সন্তু শুয়ে ছিলাম। বড়জোড় দশ পা দূরে হাতি ছিল। সৃজিত (মুখোপাধ্যায়) আর ইউনিটের বাকি সকলে অনেক দূরে। হাতিটা কয়েক পা এগোলে, আমরা দু’জনে পায়ের নীচে চলে যেতাম। বাঘ এসে তো আমার গা চেটে দিয়ে গিয়েছে! বাঘটা প্রথমে গাছ থেকে লাফিয়ে নামল, তার পর এগিয়ে এসে প্রথমেই আমার ক্রাচের দিকে তাকাল। তখন একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ক্রাচটাকে বন্দুকও ভাবতে পারে। তবে ভয়ের কিছু হয়নি। পাশ দিয়ে ঘুরে একদম কাছে এসে গা চেটে গেল। আমি তখন ছবির মতো স্থির!
প্র: আপনি প্রতিটা ছবিতে নতুন কিছু করতে ভালবাসেন। কিন্তু এই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে নতুন কিছু করার অবকাশ কি থাকে?
উ: আমি যখন নতুন কোনও চরিত্র পাই, সেটাকে অন্য রকম ডায়মেনশন দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু এখানে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার একটা চেষ্টা চলে। প্রথম ছবি ‘মিশর রহস্য’তে কাকাবাবুর একটা ইমেজ আমরা তৈরি করে ফেলেছিলাম। নির্দিষ্ট একটা শরীরীভাষা, অভিব্যক্তি, কথা বলার কায়দা রয়েছে চরিত্রটার। সন্তু-কাকাবাবুর একটা রসায়ন তৈরি হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সেই জিনিসটা বজায় রাখাই এখানে বড় চ্যালেঞ্জ। চরিত্রর রেশ ধরে রাখার জন্য জামাকাপড়ের একটা সেট আমি রেখে দিয়েছি, সেই ২০১৩ সাল থেকে। তিনটে ছবিতেই একবার অন্তত ওই পোশাকটা পরেছি।
প্র: খাকি জ্যাকেট?
উ: হ্যাঁ, ওটা সিগনেচার স্টাইল।
প্র: শোনা যাচ্ছে, মুম্বইয়ে ফের একটা বড় প্রজেক্ট করতে চলেছেন?
উ: হ্যাঁ, একটা নতুন কাজ শুরু করব। সব চূড়ান্ত হলে জানাব।
প্র: প্রযোজক প্রসেনজিৎ কি এই পরিস্থিতিতে সামলে খেলছেন?
উ: ঠিক তা নয়। অনেক পরিকল্পনাই আছে, সবটাই পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করছে। পরিচালনার পরিকল্পনাও আছে।
প্র: বাংলায় না কি হিন্দিতে?
উ: পরিচালনা করলে সর্বভারতীয় স্তরেই করব। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্য এত দিন তো এক্সক্লুসিভ রইলাম। এ বার নিজের জন্য কিছু করি। ঠিক সময়ে সবটা জানতে পারবেন।
প্র: আপনার বাড়িতে তো নতুন অতিথির আগমন ঘটেছে।
উ: হ্যাঁ, মিশুকের শখেই রকিকে আনা হয়েছে। সে এখন সারাদিন আমার কাছে থাকে আর রাতে মিশুককে জাগিয়ে রাখে। বাড়িতে একটা বাচ্চা থাকলে যা হয়, পোষ্য এলেও তাই। দেব এসেছিল আমার অফিসে। বাড়ির অবস্থা দেখে বলছে ‘এ তো সারা বাড়ি দখল করে নিয়েছে।’ এখানে বিছানা, ওখানে খেলার জিনিস... সব ছড়ানো রয়েছে। বাড়িটা জমজমাট হয়ে রয়েছে ওর জন্য।
প্র: দেবের সঙ্গে আপনার ‘কাছের মানুষ’-এর শুটিং কবে শুরু?
উ: ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে শুরু করব। দেবের কোভিড হল। ও সেরে উঠতেই আমি পজ়িটিভ হলাম। সংক্রমণ কমে গিয়েছে এখন। এ বার কাজে ফিরতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy