বিক্রম চট্টোপাধ্যায়।ছবি: রণজিৎ নন্দী
গত বছর বার বার শিরোনামে উঠে এসেছিল সোনিকা-বিক্রমের ঘটনা। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। মামলা চলছে কোর্টে। তাই বিক্রমের পক্ষে সরাসরি সেই মামলা বা ঘটনা নিয়ে কথা বলা সম্ভব ছিল না। কিন্তু তাঁর পারিপার্শ্বিক, কেরিয়ার সব কিছু কতটা বদলেছে, তা নিয়ে কথা বলতে দ্বিধা নেই বিক্রমের।
প্র: এটাকে কি কেরিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস বলবেন?
উ: ঠিক তা নয়। জীবন একটাই। তাই ইনিংসও একটা। তার মাঝে ভাল সময়, খারাপ সময় সবই আছে। আমি জীবনকে এ ভাবেই দেখি।
প্র: আপনার ধারাবাহিক ‘ফাগুন বউ’ তো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উ: এই ক’টা মাসের মধ্যেই এতটা জনপ্রিয় হবে ভাবিনি। ‘ফাগুন বউ’ এখন চ্যানেলের এক নম্বর শো। চ্যানেল-প্রযোজক সকলেই খুশি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারছি, তাঁরাও এই শো পছন্দ করছেন।
প্র: ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটা বড্ড ভাল। এটা বাস্তবে সম্ভব?
উ: মনে হয় না (হাসি)! আমার কথা ছেড়ে দিন, কেউ কি আদৌ এতটা ভাল হতে পারে? এত দিন ধারাবাহিকে মহিলা লি়ড চরিত্রগুলোকেই ভাল দেখানো হতো। ফর আ চেঞ্জ রোদ্দুরের চরিত্রটা ভীষণ ভাল এক জন মানুষের। হয়তো সেই জন্যই দর্শক ধারাবাহিকটা ভালবাসছেন। বেশির ভাগ ধারাবাহিকে নেগেটিভ চরিত্রে মহিলারাই থাকেন। এখানে ধূসর চরিত্রটা এক জন ছেলের। ‘ফাগুন বউ’-এর অনেক কিছুই বাকিদের চেয়ে আলাদা।
আরও পড়ুন: আমার রাসমেলা
প্র: ওই দুর্ঘটনার পরে আপনার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে একটা নেতিবাচক ধারণা গড়ে উঠেছিল। সেটা কি বদলেছে?
উ: আমি জানি না দর্শক আমাকে নিয়ে কী ভাবতেন। ব্যক্তিগত জীবন বাদ দিয়ে যদি দিনের শেষে কাজ দিয়ে নিজেকে বিচার করতে পারি, তা হলে এই প্রজেক্টের প্রতিক্রিয়া বলছে, দর্শক আমাকে পছন্দ করছেন।
প্র: আপনি নাকি এখন আর নেতিবাচক চরিত্র করতে চান না?
উ: কেন করব না? ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এ করেছিলাম তো। ভাল চরিত্র পেলে নেগেটিভ চরিত্র করতে কোনও আপত্তি নেই।
প্র: প্রসঙ্গটা আসছে ওই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই। ভাল ইমেজ তৈরির জন্যই ‘ভাল ছেলে’র চরিত্র করাটা জরুরি।
উ: কোনও ইমেজ তৈরির চেয়ে এক জন অভিনেতা কেমন অভিনয় করেন আর সেটা দর্শকের কেমন লাগছে, সেটাই বিবেচ্য হওয়া উচিত। ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এ নেতিবাচক চরিত্র করেই প্রশংসা পেয়েছিলাম।
প্র: গত এক বছরে আপনি কতটা বদলেছেন?
উ: (একটু থেমে) বদলানোর চেয়ে কে বা কারা আমার কাছে, আমার জীবনে আসলে গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝতে পেরেছি। এই উপলব্ধিটার খুব দরকার ছিল আমার জীবনে। কাজ, বন্ধু এদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে বাবা-মাকে কম সময় দিতাম। এখন পরিবারকে আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় দিই। একমাত্র পরিবারের লোকজনই নিঃস্বার্থে ভালবাসে। আমারও তাঁদের কিছু দেওয়া উচিত।
প্র: বন্ধু চিনতে সুবিধে হল?
উ: মানুষ চেনাটা খুব কঠিন কাজ। সেই প্রক্রিয়া সারা জীবন ধরে চলতে থাকে। তবে অর্ক, সোলাঙ্কি, অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা, সম্পূর্ণা, সুদীপ্তাদি এদের কথা আলাদা করে বলব। সব কিছুতেই আমি এদের পাশে পেয়েছি।
প্র: আপনার এক সময়ের বন্ধু অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো আর কথাবার্তা নেই। দেখা হলে কী বলবেন?
উ: এটার কী জবাব দেব বলুন তো! জানি না কী করব দেখা হলে। ভেবে দেখিনি। আসলে ভাবার মতো বিষয়ও নয়।
প্র: এই কেসে আপনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। কী বলবেন?
উ: যাঁরা আমাকে চেনেন তাঁরা জানেন, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে আমার পরিচিতি নেই। আমি সাধারণ এক জন মানুষ, খুব সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। নিজের কেরিয়ার দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। রাজনীতির সঙ্গে আমার যোগ বলতে শুধু ভোট দেওয়া।
প্র: সিনেমার কেরিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন?
উ: ভাল চরিত্র না পেলে সিনেমা করব না। উল্টোপাল্টা কিছু করার চেয়ে জোরালো চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করা ভাল।
প্র: আপনার বন্ধু অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা বিয়ে করছেন। আপনার সেটল করার কোনও পরিকল্পনা নেই?
উ: ওদের বিয়ে নিয়ে আমি এক্সাইটেড। তবে আমার এখন সেটল করার পরিকল্পনা নেই। বিয়ের ইচ্ছে, বিয়ের বাজেট, পাত্রী কোনওটাই আমার হাতে নেই (হাসি)। হয়তো বিশ্বাস করছেন না। কিন্তু আমার জীবনে কেউ থাকলে সত্যিই বলে দিতাম। আমি কিছু লুকোতে পারি না।
প্র: ক্লাব-পার্টি কি একেবারেই করছেন না?
উ: একেবারে বন্ধ বলব না। খুব কাছের বন্ধুর জন্মদিন বা কিছু থাকলে যাই। ওই যে বললাম, পরিবারকে আগের চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছি। আর বন্ধুদের বাড়িতে ডেকে আড্ডাটা সবচেয়ে উপভোগ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy