Evergreen Manisha Koirala is another name for life dgtl
bollywood
বহু সম্পর্ক, একই বছরে ডিভোর্স ও মারণব্যাধি, মৃত্যুঞ্জয়ী মনীষার কাছে হার মেনেছে দুঃসময়
বিভিন্ন সময়ে একাধিক পুরুষের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছে। বিভিন্ন বয়স এবং পেশার মানুষ এসেছেন তাঁর জীবনে। নানা পাটেকর এবং মনীষার প্রেম তো একসময় ছিল ইন্ডাস্ট্রির বহুচর্চিত গুঞ্জন। শোনা যায়, নানার কাছে শারীরিক আঘাত পাওয়ার পরে সম্পর্ক ভেঙেছিলেন মনীষা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
মারণব্যাধিও হারাতে পারেনি যাঁকে, তাঁকে কেরিয়ারের শুরুতে পরপর ব্যর্থতা কী ভাবে ঠেকিয়ে রাখবে? ব্যর্থতার খোলস থেকে বেরিয়ে নিজেকে যোগ্য অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করেছেন তিনি। এ ভাবেও ফিরে আসা যায়, দেখিয়ে দিয়েছেন মনীষা কৈরালা।
০২২০
নেপালের কাঠমাণ্ডুতে দুঁদে রাজনীতিকদের পরিবারে জন্ম, ১৯৭০ সালের ১৬ অগস্ট। তাঁর বাবা প্রকাশ কৈরালা নেপালের প্রাক্তন মন্ত্রী। ঠাকুরদা বিশ্বেশ্বরপ্রসাদ কৈরালা ছিলেন নেপালের বাইশতম প্রধানমন্ত্রী।
০৩২০
নেপালের ইতিহাসে কৈরালা বংশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বংশের প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণপ্রসাদ কৈরালাকে বিহারে নির্বাসিত করেছিলেন নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মহারাজা চন্দ্র সামসের জঙ্গ বাহাদুর রানা। পরে দেশে ফিরে গিয়ে গণতন্ত্র স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন সমাজকর্মী কৃষ্ণপ্রসাদ।
০৪২০
শৈশব থেকেই মনীষার সঙ্গে ভারতের স্বপ্ন নিবিড়। তাঁর ছোটবেলা কেটেছে বারাণসীতে, দাদু-দিদিমার কাছে। পরে দিল্লি এবং মুম্বইয়ে। তখন থেকেই ভারত ছিল মনীষার সেকেন্ড হোম।
০৫২০
স্কুলে পড়ার সময় মনীষার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু চিকিৎসক বা বংশের ধারা মেনে রাজনীতি, কোনওটাই হওয়া হল না। সংক্ষিপ্ত মডেলিং-কেরিয়ারের পরে চলে এলেন অভিনয়ে।
০৬২০
বারাণসীর বসন্তকন্যা মহাবিদ্যালয় থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মনীষা। ক্লাস টেনের চূড়ান্ত পরীক্ষার পরে মজার ছলেই নেপালি ভাষার ছবিতে প্রথম অভিনয়। ১৯৮৯ সালে মুক্তি পায় সেই ছবি ‘ফেরি ভেতৌলা’।
০৭২০
অভিনয়কেই কেরিয়ার করবেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে মনীষা চলে আসেন মুম্বই। সুভাষ ঘাইয়ের পরিচালনায় মনীষার প্রথম হিন্দি ছবি ‘সওদাগর’ মুক্তি পায় ১৯৯১ সালে।
০৮২০
কিন্তু এরপর একটানা ব্যর্থতা। ‘ফার্স্ট লভ লেটার’, ‘আনমোল’ এবং ‘ধনবান’ মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। প্রযোজকদের কাছে মনীষার পরিচয় হয়ে যায় ‘অপয়া’।
০৯২০
সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ান তিনি ‘১৯৪২ এ লভ স্টোরি’-র হাত ধরে। যদিও ছবির প্রথম অডিশনে বিধুবিনোদ চোপড়া বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন মনীষাকে। তাঁর মনে হয়েছিল মনীষা অভিনেত্রী হিসেবে ভয়ঙ্কর! পরে সেকেন্ড অডিশনে বাজিমাত করেন মনীষা। মাধুরী দীক্ষিতের পরিবর্তে ছবির ‘রাজেশ্বরী’ বা ‘রাজ্জো’ চরিত্রে বিধুবিনোদ নির্বাচন করেন মনীষাকেই।
১০২০
বক্স অফিসে সফল না হলেও এই ছবিটি অনেক দিক দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে এই ছবিটি প্রথম ‘ইউনিভার্সাল/অ্যাডাল্ট’ তকমা পায়। রাহুল দেব বর্মণের শেষ তথা অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ এই ছবিতেই। বলা যায়, ‘১৯৪২ এ লভ স্টোরি’ ছিল আর ডি বর্মনের ‘শেষের কবিতা’।
১১২০
এরপর ‘বম্বে’, ‘অগ্নিসাক্ষী’, ‘ইয়ারানা’, ‘দারার’, ‘ইন্ডিয়ান’, ‘খামোশি দ্য মিউজিক্যাল’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম সারির নায়িকা হয়ে ওঠেন মনীষা। ‘খামোশি’ ছবিতে মনীষার অভিনয় বলিউডের আইকনিক কাজগুলির মধ্যে অন্যতম। বক্স অফিসে ব্যর্থ হলেও এই ছবি মনীষার মুকুটে নতুন পালক যোগ করে।
১২২০
মনীষার ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘গুপ্ত: দ্য হিডেন ট্রুথ’, ‘দিল সে’, ‘কচ্চে ধগে’, ‘মন’, ‘যুগপুরুষ’ এবং ‘আকেলে হাম আকেলে তুম’। আমির খানের সঙ্গে মনীষার রসায়ন ছিল বক্স অফিসে তুমুল সফল হয়। বলিউডের পাশাপাশি দক্ষিণী ভাষার ছবিতেও দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি।
১৩২০
২০০০ সাল নাগাদ কেরিয়ারে ভাটার টান আসতে মনীষা সরে আসেন টেলিভিশনে। ২০০৪ সালে তিনি চলে যান নিউ ইয়র্ক। ফিল্ম মেকিংয়ের উপর ডিপ্লোমা করেন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
১৪২০
ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে এসে আবার অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু মনীষার নতুন ইনিংস সাফল্য পায়নি। নায়িকা বা সহ অভিনেত্রী, সব ভূমিকাই এ বার দর্শকমনে দাগ কাটতে ব্যর্থ হন তিনি। এই পর্যায়ে তাঁর কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য কাজ হল ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘খেলা’ ছবিতে অভিনয়।
১৫২০
২০১০ সালের ১৯ জুন মনীষা বিয়ে করে নেপালি শিল্পপতি সম্রাট দাহালকে। তাঁদের আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে। সনাতনী নেপালি রীতিতে বিয়ে করেন দু’জনে। মধুচন্দ্রিমা হয় ফ্লোরিডায়। কিন্তু দু’বছরের মাথায় ভেঙে যায় দাম্পত্য।
১৬২০
২০১২ সাল মনীষার কাছে একাধিক দুঃসংবাদ বয়ে আনে। বিয়ে ভাঙার পাশাপাশি সে বছরই জানা যায়, তিনি ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্ত। প্রথমে মুম্বই, তারপরে তাঁর চিকিৎসা হয় আমেরিকায়।
১৭২০
সফল অস্ত্রোপচার, একটানা কেমোথেরাপির পরে মনীষাকে ২০১৭ সালে ক্যানসারমুক্ত বলে জানান চিকিৎসকরা। ক্যানসারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে এখন অন্যতম মুখ মনীষা কৈরালা। পাশাপাশি, নানা সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত তিনি।
১৮২০
ক্যানসারকে হারিয়ে ফিরে এসে মনীষার প্রথম ছবি ‘চেহরে: এ মডার্ন ডে ক্লাসিক’। সম্প্রতি প্রশংসিত হয়েছে ‘ডিয়ার মায়া’ এবং ‘সঞ্জু’ ছবিতে মনীষার অভিনয়।
১৯২০
বিভিন্ন সময়ে একাধিক পুরুষের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছে। বিভিন্ন বয়স এবং পেশার মানুষ এসেছেন তাঁর জীবনে। নানা পাটেকর এবং মনীষার প্রেম তো একসময় ছিল ইন্ডাস্ট্রির বহুচর্চিত গুঞ্জন। শোনা যায়, নানার কাছে শারীরিক আঘাত পাওয়ার পরে সম্পর্ক ভেঙেছিলেন মনীষা।
২০২০
৪৯টি বসন্ত পেরিয়ে এখন নতুন করে জীবনের অর্থকে খুঁজে পান। জানিয়েছেন এই মৃত্যুঞ্জয়ী চিরসবুজ অভিনেত্রী।