রোজগারহীন হয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। খাবার জোটাতে অভিনয় ছেড়ে অন্য কাজে নামতে বাধ্য হন তিনি।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ১২:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
করোনাভাইরাস লকডাউনের জেরে সারা দেশে কাজ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ। অনেক সংস্থা বেতন দিতে পারেনি তাদের কর্মীদের। কাজ হারানো মানুষরা দিন চালাতে যে যা পেরেছেন সেই কাজে নেমেছেন।
০২১৬
লকডাউনে সিনেমা, সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ থাকায় কাজ হারিয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকে। সে রকমই কাজ হারানোদের তালিকায় আছেন সোলাঙ্কি দিবাকর।
০৩১৬
‘হাওয়া’, ‘হাল্কা’, ‘তিতলি’, ‘সোনচিরিয়া’-র মতো ছবির পাশাপাশি আয়ুষ্মান খুরানার ‘ড্রিম গার্ল’ ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রোল ছোট হলেও তাঁর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন ছবিতে।
০৪১৬
তাঁর জন্ম আগরার ছোট্ট শহর আছনেরাতে। সেখানে শৈশব কাটলেও ১৯৯৫-এ তিনি চলে আসেন দিল্লিতে। গত ২৫ বছর ধরে দিল্লিতেই কাটছে তাঁর জীবন।
০৫১৬
বর্তমানে দিল্লির শ্রীনিবাসপুরী এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন সোলাঙ্কি। তাঁর ভাড়া বাড়িতে একটিই ছোট ঘর ও রান্না করার জায়গা। সেই ঘরেই থাকেন চার জন।
০৬১৬
লকডাউনের জেরে মুম্বই থেকে দিল্লিতে এসে রয়েছেন তিনি। কিন্তু গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁর হাতে কাজ নেই। রোজগারহীন হয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। খাবার জোটাতে অভিনয় ছেড়ে অন্য কাজে নামতে বাধ্য হন তিনি।
০৭১৬
এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘‘লকডাউন বাড়তেই অসুবিধার মধ্যে পড়েছিলাম। বাড়ি ভাড়া দিতে হত, পরিবারের অনান্য খরচের জন্যও টাকার দরকার ছিল। তাই ফল বিক্রি করতে নেমে পড়ি।’’
০৮১৬
গত দু’মাস ধরে তিনি ফল বিক্রি করছেন দক্ষিণ দিল্লির রাস্তায়। লকডাউনে ফল বিক্রি করেই সংসার চলছে ৩৫ বছরের এই অভিনেতার।
০৯১৬
দিল্লির পাইকারি ফলের বাজার ওখলা মান্ডি। লকডাউনে সেখান থেকেই ফল কিনে এনেছেন সোলাঙ্কি। তার পর মালব্যনগর বাজারে সেই ফল বিক্রি করেছেন।
১০১৬
এই কাজ করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা ছিল তাঁর। ভিড়ের মধ্যেই ওখলা মান্ডিতে লাইন দিয়ে ফল কেনা। তার পর তা নিয়ে আসা। লকডাউনের বিধি মেনে ফল বিক্রি করতে কিছু অসুবিধার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে।
১১১৬
যদিও এই কাজকে অভিনয়ের সঙ্গে তুলনা করতে রাজি নন তিনি। কারণ তাঁর কাছে কোনও কাজই বড় বা ছোট নয়। সৎ ভাবে রোজগার করাকেই জীবনে বেশি গুরুত্ব দেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
১২১৬
দিল্লির রাস্তায় ফল বিক্রি করলেও অভিনয় নিয়ে একটা আফসোস কিছুতেই যাচ্ছে না সোলাঙ্কির মন থেকে। তা হল ঋষি কপূরের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়া।
১৩১৬
প্রয়াত ঋষি কপূরের সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল সোলাঙ্কির। কিন্তু লকডাউনের জেরে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় সেই ছবির শুটিং। তার পর ঋষি কপূরও প্রয়াত হন। ঋষির মতো অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার হতাশা ফুটে উঠেছে তাঁর কথাতেই।
১৪১৬
এ ব্যাপারে সোলাঙ্কি বলেছেন, ‘‘করোনাভাইরাস লকডাউনের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল ছবির শুটিং। ঋষিজি আর নেই। ঋষিজির সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় আমি খুব হতাশ।’’
১৫১৬
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি না হলে তাঁর অবস্থা হয়তো এ রকম হত না। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘‘লকডাউন না হলে আমি হয়তো মুম্বইয়ে থাকতাম। বেশ কিছু ছবিতে ছোট ছোট ভূমিকায় অভিনয় করতাম।’’
১৬১৬
তবে সিনেমায় অভিনয় বন্ধ থাকলেও, নিজের জীবন নিয়ে খুশি সোলাঙ্কি। কাজের যে কোনও ভেদ হয় না। কঠিন আর্থিক সময়ে নিজের জীবন দিয়ে সে কথা তুলে ধরছেন তিনি।