Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আশ্চর্য প্রদীপ কেন হারাল

ভীষণ ‘কিউট’ এই অগস্ট ‘অগি’ পুলম্যান। বেচারির মুখখানি জন্মগত রোগে একটু অন্য রকম। এক কাঁড়ি অস্ত্রোপচারের আঁকিবুকি, কানের জায়গায় এক দলা মাংস। কেরিয়ার, সুখ বিসর্জন দিয়ে তাকে দশ বছর পর্যন্ত বাড়িতেই পড়িয়েছে মা। তার পর তাকে মিড্ল স্কুলে পাঠাল।

ছবির একটি দৃশ্য

ছবির একটি দৃশ্য

চিরশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:০০
Share: Save:

ওয়ান্ডার

পরিচালনা: স্টিফেন চবোস্কি

অভিনয়: জুলিয়া রবার্টস,
জেকব ট্রেম্বলে, ওয়েন উইলসন

৫.৫/১০

জিভ বলিউডের স্বাদে মাখামাখি হলে, এই হলিউড ‘ফ্যামিলি এন্টারটেনার’–এর বিষয় শুনলেই কানে লাগবে খটকা। জেনেটিক রোগে আক্রান্ত প্রতিভার বারুদ বালক, তার মায়ের কষ্ট, ছেলের ‘আশ্চর্য’ বিশ্বজয়। কিন্তু পরিচালক তো ‘তারে জমিন পর’ দেখেননি! আমেরিকা এই দুনিয়ারই অন্য পিঠে। তাই সেখানকার মানুষ ও সমাজের অসুখ, বাড়ন্ত বয়সের ঝামেলায় এখানকার সঙ্গে এই মিল।

সেই সব গলতি নিয়েই ‘ইয়ং অ্যাডাল্ট’ বেস্টসেলার লেখিকা পালাশিয়ো-র উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়নে পরিচালক স্টিফেন চবোস্কি আগেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। বই ও সিনেমার নামও এক। মানে এ বারও সাহিত্যেই আস্থা তাঁর। ফলে প্রাপ্তি চিত্রনাট্যের অভিনবত্ব। সঙ্গে কিছু কোটেশন গোত্রীয় সংলাপ। শুনলে চোখে জল। মনে বিরক্তি।

ভীষণ ‘কিউট’ এই অগস্ট ‘অগি’ পুলম্যান। বেচারির মুখখানি জন্মগত রোগে একটু অন্য রকম। এক কাঁড়ি অস্ত্রোপচারের আঁকিবুকি, কানের জায়গায় এক দলা মাংস। কেরিয়ার, সুখ বিসর্জন দিয়ে তাকে দশ বছর পর্যন্ত বাড়িতেই পড়িয়েছে মা। তার পর তাকে মিড্ল স্কুলে পাঠাল। ‘স্টার ওয়ার্স’-পাগল অগি চেহারা নিয়ে মনমরা। বাইরে বেরোলে নিজের মুখ ঢাকে ঢাউস স্পেস-হেলমেটে। এ বার যে স্কুলে সে গেল, সেখানেও তো সকলে বাচ্চাই। না বুঝেই তারা তাকায়, হাসে, খেপায়, ‘বুলি’ করে।

ও দেশের শিশুরাজ্যে এখন অগি জনপ্রিয় চরিত্র। অগি-র বইগুলোর সাংঘাতিক কাটতি। এ সব ইয়ং অ্যাডাল্ট উপন্যাসগুলির অন্যতম লিখনকৌশল: একই ঘটনাবলিকে কেন্দ্র, পার্শ্ব ও দুষ্টু চরিত্রের চোখ দিয়ে দেখানো। সিনেমাতেও এই স্টাইলটা রয়েছে। দিব্যি লেগেছে। যখন মনে হচ্ছে গল্প এগোবে, তখন তা পিছিয়ে গিয়ে একই দূরত্ব আবার যাচ্ছে, কিন্তু অন্য একটা রাস্তা দিয়ে।

প্রসথেটিকস-এর আড়ালে পরিচিত শিশু অভিনেতা জেকব অতুলনীয়। মায়ের ভূমিকায় জুলিয়া রবার্টস প্রাণ ঢেলেছেন। মাথার হেলমেট খুলে, ছেলে প্রথম বার বাড়িতে বন্ধু আনছে। সে দৃশ্যে তাঁর অভিব্যক্তি দেখে বলেই ফেলছিলাম, ‘আর এক বার, প্লিজ’! ‘কুল ড্যাড’ ওয়েন উইলসন। সেরা জুলিয়া-ওয়েনের বড় মেয়ের চরিত্রে ইসাবেলা। এই বিদেশি অপুর দুর্গা দিদিটিকে হারাতে দিলে চলবে না।

পাশ্চাত্যে ছবিটি প্রশংসিত। বুলিংয়ের মতো ‘ডার্ক ইস্যু’ নিয়ে এমন উজ্জ্বল সিনেমা যে! হলিউডের ছবিতে সুরেলা গান, সেন্টিমেন্ট, মিষ্টি বাচ্চার দল, স্কুলজীবন মনে পড়ে যাওয়া। মণিমাণিক্যও মজুত। জাতিদ্বেষ ঘোচানো কিশোর-প্রেম। সোশ্যাল সাইটের বদলে ভিডিয়ো গেম মারফত চ্যাটিং। প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলায় অগি সৃষ্টি করছে কল্পরাজ্য। সেই সুযোগে ছবিতে ‘ম্যাজিক রিয়্যালিটি’র মরিচও ছড়িয়েছেন পরিচালক। কিন্তু এত কিছুর পর ক্লাইম্যাক্সে গিয়েই ডাহা ফেল! তা, সিনেমার পরদায় আগাগোড়া বই টুকলে শাস্তি তো জুটবেই। শেষ ভাল না হলে, সব ভাল হয়?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy