বাংলায় দেখানো যাবে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। খুশি বাঙালি পরিচালক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটিকে পশ্চিমবঙ্গে ‘নিষিদ্ধ’ করার পরে আনন্দবাজার অনলাইনকে ছবির পরিচালক সুদীপ্ত সেন বলেছিলেন, ‘‘দিদি (মমতা) এক বার ছবিটা নিজে দেখুন। তার পরে সিদ্ধান্ত নিন।’’ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় শোনার পরেও তাঁর একই আর্জি, ‘‘দিদি এক বার ছবিটা দেখুন প্লিজ। আপনারও ভাল লাগবে।’’
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির প্রদর্শন হলে রাজ্যে ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে আশঙ্কায় নবান্নের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এর পরেই আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুদীপ্ত বলেছিলেন, ‘‘দিদি এক বার ছবিটা দেখে নিয়ে মন্তব্য করলে ভাল হত। যখন ‘পদ্মাবত’ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের আগে সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমার ছবিটা তো দেখলেনই না! ছবি না দেখেই নিষিদ্ধ করে দেওয়াটা একেবারে বাচ্চাদের মতো, ছেলেখেলার মতো ব্যাপার হল। এই ছবিটার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সবাই ছবিটা দেখছেন। কংগ্রেস এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যেও ছবিটা দেখানো হচ্ছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে বাদ! তামিলনাড়ুতেও কিন্তু ছবিটা ‘নিষিদ্ধ’ হয়নি। ওখানে প্রদর্শকদের সঙ্গে সমস্যা হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার সেই নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের খবর আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে শুনে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘আমি এখনই জানলাম। এখনও আদালতের রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাইনি। তবে এটা জেনে আনন্দ পাচ্ছি যে, বাংলার মানুষ আমার ছবিটা দেখতে পারবেন। এক জন বাঙালি হিসাবে সত্যিই খুব মনঃকষ্টে ছিলাম। এখন আনন্দ হচ্ছে। কারণ, আমি যে রাজ্যের মানুষ, সেখানেও ছবিটা দেখানো যাবে।’’ সুদীপ্তের জন্ম জলপাইগুড়িতে। সেখানেই লেখাপড়া। আগে মালয়ালম ভাষায় একটি বাণিজ্যিক ছবি বানিয়েছিলেন। এর পরে তথ্যচিত্র। তবে তাঁকে খ্যাতি দিয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বাংলায় ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন ছবির প্রযোজক বিপুল আম্রুতলাল শাহ। বৃহস্পতিবার সেই মামলাতেই নবান্নের নিষেধাজ্ঞার উপর স্থগিতাদেশ মিলেছে।
এর পরের পরিকল্পনা কী? কলকাতায় আসবেন? পরিবেশকদের সঙ্গেও তো নতুন করে কথা বলতে হবে! প্রশ্ন শুনে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘মানুষ দেখতে পাবেন, এটা জেনেই আনন্দ হচ্ছে। আদালতের নথি হাতে আসার পরে বাকি সব ঠিক করব আমরা।’’
মমতা তাঁর ছবিটি ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করলেও সুদীপ্ত কিন্তু কখনওই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সে ভাবে কিছু বলেননি। তবে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের পিছনে ‘দ্বিচারিতা’ থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন। সুদীপ্ত বলেছিলেন, ‘‘উনি তো শিল্পের স্বাধীনতার বিষয়ে চ্যাম্পিয়ন। সব সময়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের ছবিটা নিয়ে কেন ওঁর এমন মনোভাব হল এবং ছবিটা না দেখেই, সেটা আমি বলতে পারব না। আমি ওঁকে অনুরোধ করতে পারি যে, ছবিটা দেখে তার পরে সিদ্ধান্ত নিন। একটা মানুষ তো এতটা হিপোক্রিট হতে পারেন না! তাই না? কখনও উনি বলছেন, শিল্পের স্বাধীনতা থাকা উচিত। কোনও ছবি নিষিদ্ধ করা ঠিক নয়। সেটা সংস্কৃতিবিরোধী। আবার নিজেই একটা ছবি নিষিদ্ধ করে দিচ্ছেন! দু’রকমের কথা বলছেন। আমার তো মনে হয় সেটা এক ধরনের হিপোক্রেসি।’’
একই সঙ্গে সুদীপ্ত আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে, মুখ্যমন্ত্রীকে সম্ভবত কেউ ভুল বুঝিয়েছেন। সেই সূত্রেই বার বার বলেছিলেন, ‘‘দিদি এক বার ছবিটা দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।’’ তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার তো মনে হয়, দিদিকে কেউ ভুল বুঝিয়েছে! বাঙালি ছেলে একটা ছবি বানিয়েছে, আর সেটা না দেখেই বন্ধ করে দেব! এটা হয় নাকি কখনও? উনি তো আমাদের অভিভাবক। ওঁর পছন্দ না হলে উনি আমাকে ডাকুন। আমি কথা বলি ওঁর সঙ্গে, ওঁর মত শুনি। দরকার হলে ‘সরি’ বলব ওঁকে। কিন্তু ছবিটা তো ওঁরও দেখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy