স্বস্তিকা-অর্জুন
প্রশ্ন: ‘শ্রীমতী’র প্রচার ঝলকের ট্যাগলাইন ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’, এটা পরিচালক অর্জুন দত্তের বিশ্বাস?
অর্জুন: আমার বিশ্বাস সংসার সুখের হয় শ্রী এবং শ্রীমতী দু’জনের গুণে। শুধু নারীর উপরে সমস্ত ভার চাপিয়ে দেওয়া বোধহয় ঠিক নয়।
প্রশ্ন: সেই ভাবনারই ফসল ‘শ্রীমতী’?
অর্জুন: ‘শ্রীমতী’ আমার ঘরের গল্প। আমার মা-দিদাকে উৎসর্গ করে বানিয়েছি। আমি ‘উওমেন এমপাওয়ারমেন্ট’ বা ‘ক্ষমতাবান নারী’ শব্দে বিশ্বাসী নই। এখানেও আমি লিঙ্গভেদ চাই না। শুধু উপার্জনে সক্ষম নারীদের নামের সঙ্গে তকমাটি জড়িয়ে গেলে আরও আপত্তি। আমার মা বা দিদা কোনও দিন রোজগার করেননি। তাঁরা কি সংসারের কর্ত্রী ছিলেন না? সংসারে শেষ কথা কিন্তু তাঁরাই বলেছেন। এবং আজও আমার মা আমাদের বাড়ির হাল ধরে রেখেছেন। সেই কথাই এই ছবিতে বলব। যিনি সংসার করতে ভালবাসেন তিনি সেটাই করুন! অসুবিধে কোথায়?
প্রশ্ন: নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় খুব ভাল মানান?
অর্জুন: আমি কিন্তু ‘ব্যক্তি’ স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে একটু হলেও চিনি। ওর সঙ্গে ‘গুলদস্তা’ করেছি। স্বস্তিকা আদতে হুবহু ‘শ্রীমতী’। ওর নামের পাশে ‘বিদ্রোহিনী’, ‘বিতর্কিত’, ‘চর্চিত’ তকমাগুলো সবাই দিয়েছেন। অভিনেত্রী আদৌ ওই রকম নন। ছবিতেও সেটাই স্পষ্ট।
প্রশ্ন: বাস্তবে স্বস্তিকা কেমন?
অর্জুন: একটুও বিতর্কিত নয়। একটুও বিদ্রোহী নয়। তবে মনে আর মুখে এক। খুব আদুরে, ঘরোয়া। আড্ডা দিতে, ভাল-মন্দ খাবার, ল্যাদ খেতে ভালবাসে। প্যাম্পারড হতে ভালবাসে। একটু অগোছালো। নিজের ইচ্ছেমতো সাজে। কে কী বলল, তাই নিয়ে মাথাই ঘামায় না। এবং স্বাধীন, স্বাবলম্বী। আর কাজে নিবেদিতপ্রাণ। বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায়ের পারলৌকিক কাজ সেরে নিয়মভঙ্গের দিনেও শ্যুট করেছিল ও!
প্রশ্ন: ছবির ‘শ্রীমতী’র মতোই কি প্রিয়জনকে ভালবাসায় আঁকড়ে ধরেন?
অর্জুন: একদমই। যাঁকে ভালবাসে তাঁকে নিজের সবটা দিয়ে ভালবাসে।
প্রশ্ন: ‘শ্রীমতী’ হতে গিয়ে অভিনেত্রীকে আলাদা কিছু কি করতে হয়েছে?
অর্জুন: খুব বেশি কিছু করতে হয়নি। শ্যুটের আগে আমি আর স্বস্তিকাদি একসঙ্গে বসেছি। সব অভিনেতাদেরই অনুরোধ করি, অভিনয় যেন না করেন। ভিতর থেকে যেটা আসবে সেটাই ক্যামেরাবন্দি হবে। স্বস্তিকাদিও সেটাই করেছেন। তা ছাড়া, ‘শ্রীমতী’র লুকে এত মানিয়েছে ওঁকে যে ওতেই কেল্লাফতে। এই চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে স্বস্তিকাদি ওঁর মায়ের শাঁখা-পলা, শাড়ি পরেছেন। ওঁর মায়ের আদলে কথা বলেছেন। পরে আমায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, তুই আমাকে আমার মা হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিস!
প্রশ্ন: ‘শ্রীমতী’ স্বস্তিকার ‘শ্রী’ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় না হয়ে সোহম চক্রবর্তী হলেন!
অর্জুন: একাধিক কারণে। নতুন জুটি তৈরি করলাম। অনবদ্য অভিনয় করেছেন সোহমদা। এই চরিত্রটির জন্য সোহমদাই ঠিক ছিলেন। এবং দর্শকদেরও নতুন জুটির রসায়ন ভাল লাগবে।
প্রশ্ন: ছবিতে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতারাও রয়েছেন! এতে ছবির দর্শক সংখ্যা বাড়বে?
অর্জুন: আমি কিন্তু তারকা দেখে ছবির অভিনেতা বাছি না। যাঁদের মানাবে তাঁদেরই নিই। যেমন, খেয়া চট্টোপাধ্যায় স্বস্তিকাদির সহকারী। তৃণা সাহা ননদ। আছেন উদয়প্রতাপ সিংহ। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেবযানী চট্টোপাধ্যায় আছেন। এঁরা আছেন এঁদের নিজেদের প্রতিভায়। জোর করে নয়। উদয় যেমন এই ছবি দিয়েই বড় পর্দায় পা রাখছেন।
প্রশ্ন: অর্জুনের ছবি মানেই ছিমছাম, ঘরোয়া গল্প। কোনও দিন ‘কাশ্মীর ফাইলস’ বা ‘কালী’র মতো বিতর্কিত ছবি বানাবেন?
অর্জুন: কেন নয়? প্রথম ছবি ‘অব্যক্ত’য় সমকাম নিয়ে বলেছি। বিষয়টি নিয়ে আবারও ছবি বানানোর ইচ্ছে আছে। আর মেয়েদের প্রকৃত স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন নিয়ে বলবে ‘শ্রীমতী’। এটাও যথেষ্ট শক্তিশালী বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy