বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে লিখলেন অনীক দত্ত। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ বারের মতো দেখতে গিয়েছিলাম ওঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে। জনপ্লাবন নেই। তবে ভিড় হয়েছিল। বিশিষ্টেরা এসেছেন। যাঁরা এক সময় ওঁকে খুবই হেনস্থা করেছেন, অপমান করেছেন— তাঁরাও আজ এসেছেন। কেন তাঁরা এসেছেন? প্রায়শ্চিত্ত করতে? জানি না। অসুস্থ হওয়ার পরে বুদ্ধবাবুকে সামনাসামনি দেখতে যেতে পারিনি। স্ত্রী মীরা দেবীর সঙ্গে মাঝেমাঝে কথা হত। ওঁর লেখা একটা বইয়ে ওঁর একটা সই নেওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। বুদ্ধবাবু তখন আর চোখে ভাল দেখতে পেতেন না। জানিয়েছিলেন ওঁর স্ত্রী। ফলে, ইচ্ছে থাকলেও তখন সাক্ষাৎ হয়নি। আজ ওঁর ঘরে ঢুকে সামনে থেকে ওঁকে দেখলাম। হাতজোড় করে ক্ষমাও চাইলাম। কার হয়ে চাইলাম জানি না। আমার হয়েই ক্ষমা চেয়ে নিলাম ওঁর কাছে।
আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, নির্লজ্জ, বেহায়া, বেইমান বাঙালির হয়ে আমি ক্ষমা চাইতে যাব না, চাইতে পারবও না। কথা বললাম প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর সঙ্গে। মীরা দেবীকে অনুরোধ করলাম, “গান স্যালুটটা হতে দেবেন না।” উনি বললেন, “আমারও একদম ইচ্ছে নেই।” অন্তত তিনি আমাকে এমনটাই বললেন। ওঁর সেই ইচ্ছের কথা শতরূপ ঘোষ-সহ দলের বাকি সদস্যদেরও বললাম, “গান স্যালুটে মীরা দেবীরও ইচ্ছে নেই।”
সৌজন্যটা কোনও সুজন ব্যক্তি দেখালে ঠিক আছে। দুর্জনেরা মেকি সৌজন্য দেখালে বড্ড বিরক্তি লাগে। এ-ও জানি না, ওঁর দেহ নন্দনে রাখতে দেওয়া হবে কি না। যে নন্দন বুদ্ধবাবুর হাতে গড়া। শাসকদল অবশ্য তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
আজ শোকের বদলে খুব রাগ হচ্ছে। যা যা ভুল করেছি আমরা, সব মনে পড়ে যাচ্ছে। বুদ্ধবাবু বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন, “আপনি মুখ্যমন্ত্রী হোন। কিন্তু শিল্প ফিরে যেতে দেবেন না।” বৈঠকে এত বড় কথা বলেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ সেই সময় চিবিয়ে চিবিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন। আজ সব নতুন করে মনে ভিড় জমাচ্ছে। এর পরেও রাগ হবে না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy