হাতিদের উপরে ঘটা অন্যায়ের প্রতিবাদে তথাগত মুখোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
দেবতার আরাধনা বন্ধ হয়নি। কিন্তু সেখানে সমাজ সচেতনতার ছায়া পড়েছে। গণেশ চতুর্থীর দিন সমাজমাধ্যমে খ্যাতনামীদের ভাগ করে নেওয়া ভাবনা তারই উদাহরণ। এ ক্ষেত্রে তথাগত মুখোপাধ্যায়ের ভাগ করে নেওয়া ছবির কথা বলা যেতেই পারে। পরিচালক-অভিনেতা সমাজমাধ্যমে যে ছবি ভাগ করে নিয়েছেন, সেখানে দেবমূর্তি অন্তঃসত্ত্বা, রক্তাক্ত। কিছু দিন আগে এ ভাবেই এক অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীর গায়ে আগুন দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। তার প্রতি সভ্যতার সেই আঘাত বুঝি দেবতা নিজ অঙ্গে ধারণ করেছেন! সঙ্গে বার্তা, “আজ গণেশ চর্তুথী, আমাদের দেশে গণেশপুজো। আর আমরা যাকে ভগবান বলি, তার পরিণতি এই দেশে এটাই।”
আর তাই তথাগত সচেতনতা গড়ে তুলতে চলেছেন তাঁর আগামী ছবির মাধ্যমে। গণেশ চতুর্থীর দিন আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, ‘পারিয়া ২’-তে তিনি হাতিদের উপরে ঘটে চলা অত্যাচার দেখাবেন এবং তার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবেন। সেই জন্যই পোস্টারে হাতির দাঁত, ঘন অরণ্যের ছবি দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও, অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে তথাগত তাঁর টিম ‘পারিয়া’কে নিয়ে পথে নেমেছেন। আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলা চলছে। পাশাপাশি, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে একাধিক বার পথে নেমেছেন তথাগত। এই ঘটনার পাশাপাশি, পশুরাও যে সমান ভাবে নিগৃহীত, সে কথা মনে করিয়ে দিতেই কি এই পোস্ট?
আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল তাঁর কাছে। তথাগত বলেছেন, “অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকে অকারণ পুড়িয়ে মারা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অনেক বছর ধরেই নানা ভাবে হাতিরা মানুষের থেকে এই ধরনের ব্যবহার পেয়ে আসছে।” উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, এমন অনেক ছবি আছে তাঁর কাছে, যেখানে দাঁতের লোভে চোরাশিকারি হাতির শুঁড় এবং দাঁত কেটে দিয়ে চলে গিয়েছে! রক্তাক্ত অবস্থায়, বিনা চিকিৎসায় আক্রান্ত হাতিটি পড়ে আছে জঙ্গলে। পরিচালক-অভিনেতার মতে, এর নেপথ্যে বড় কারণ অভিবাসী সঙ্কট। ভিন্দেশ থেকে বা ভিন্রাজ্য থেকে যাঁরা এসে বসতি তৈরি করছেন তাঁরা জঙ্গল সাফ করে বাড়ি তুলছেন। যার জেরে বারে বারে হাতিদের বসতি বদলানো হচ্ছে। থাকার জায়গা না পেয়ে, খাবারের অভাবে বা বসতি বদলের সময় তারা অনেক সময় লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এই প্রসঙ্গে তাঁর আরও দাবি, “পশুরা মানুষদের মতো ভোট দিতে পারে না। ফলে, সরকার নিষিদ্ধ হুলা পার্টির সাহায্যে নিজের এবং কর্পোরেট সংস্থার মুখ চেয়ে একের পর এক জঙ্গল কেটে সাফ করে দিচ্ছে। যার ফল ভুগছে হাতি-সহ বন্যপ্রাণ। অভয়ারণ্যের নামে স্বল্প পরিসরে জোর করে হাতিদের থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। ওরা ছোট জায়গায় থাকতে পারে না জেনেও।”
তাঁর আফসোস, নামেই গণেশ ঠাকুর। আসলে এ গরিব দেশে সবটাই পণ্য, সবটাই ব্যবসা। সে হাতিই হোক বা ঠাকুর। ভক্তি নয়, এ দেশে অর্থের প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy