Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Deboshree Ganguly

Subhashee Ganguly-Deboshree : রাজ, শুভশ্রীকেই আমার ধর্ষক স্বামী অমিত ভাটিয়ার কুকীর্তি জানাই: দেবশ্রী

মাঝে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম, অসুস্থ অবস্থায় স্বামীর হাতে মার খেতে হয়েছিল: দেবশ্রী

শুভশ্রী-দেবশ্রী

শুভশ্রী-দেবশ্রী

দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ১৪:৪৮
Share: Save:

সবাই হতবাক, বিস্মিতও। জানতে চাইছেন, কেন শুরুতেই কাউকে কিছু জানালাম না? বিয়ের আড়াই মাসের মধ্যে এ রকম অঘটন কী করে ঘটল? কী করে বোঝাই, আমি নিজেও কি শুরুতে বুঝে উঠতে পেরেছি! যখন বুঝেছি তখন মা-বাবার মুখ চেয়ে কিচ্ছু বলতে পারিনি। চলতি বছরের ২ এপ্রিল বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যেই স্বামী অমিত ভাটিয়ার কুকীর্তি ফাঁস করি কী করে?

আমার বাবা অসুস্থ। মায়ের সদ্য অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওঁদের যদি কিছু হয়ে যায়? একই সঙ্গে মিটমাটের চেষ্টাও করেছি। কিন্তু যখন শুনলাম ধর্ষণ মামলায় জামিনে মুক্ত অমিত, আর চুপ থাকতে পারিনি। আমার বোন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, আমাদের ছোট জামাই রাজ চক্রবর্তীকে সবটা জানাই। সঙ্গে সঙ্গে ওঁরা আমার পাশে এসে দাঁড়ান।

সাল ২০১৪। অমিত ভাটিয়া আর আমি এক নামী জীবনবীমা সংস্থায় চাকরি করতাম। কর্মসূত্রেই আলাপ। অমিত খুবই মিশুকে। তাই বন্ধুত্ব হয়েছিল দ্রুত। তখন আমরা শুধুই ভাল বন্ধু। কারণ, ২ জনেই অন্য সম্পর্কে রয়েছি। কিন্তু আমার সব খুঁটিনাটি, পছন্দ-অপছন্দ অমিত জানত। চলতি বছরের প্রেম দিবসে অমিত প্রথম ভালবাসার কথা জানায় আমাকে। বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমিও দ্বিতীয় বার ভাবিনি।

বিয়ের পরেই আমার সমস্ত গয়না নিজের দখলে নিয়ে নেন শাশুড়ি দীপালি ভাটিয়া। অমিত চাপ দিয়ে আমার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছিল কাজের অছিলায়। আমার শাশুড়ি থাকেন বাগুইহাটির বাড়িতে। আমি,আমার ছেলে, পরিচারিকা, পোষ্য আর অমিত থাকতাম আলাদা একটি ফ্ল্যাটে। টাকা, গয়না নেওয়ার পরেও আমি কিচ্ছু মনে করিনি। মনে করেছি, শাশুড়ির কাছেই গয়না বেশি সুরক্ষিত থাকবে। আর স্বামী কাজের প্রয়োজনে অর্থ চেয়েছে। স্ত্রী হিসেবে তাঁকে সাহায্য করা কর্তব্য। বিয়ের ৭ দিন কাটতে না কাটতেই মানসিক অত্যাচার শুরু করে অমিত। একা আমার উপরে নয়, আমার এক মাত্র ছেলে, পরিচারিকার উপরেও। মাঝে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম। অসুস্থ অবস্থায় স্বামীর হাতে মার খেতে হয়েছিল। সেই সময় শাশুড়ি মা-কে ফোনে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, তুমি বোঝাও তোমার ছেলেকে। কেন এ রকম করছে? উত্তরে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করেছিলেন শাশুড়ি মা। আমার বাবাও কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন অমিতের সঙ্গে। তাঁকেও চূড়ান্ত অপমানিত হতে হয়।

এর পরেই জানতে পারি, অমিতের লালসার শিকার বছর ২০-র এক মেয়ে। খবরের সত্যতা যাচাই করতে নিজে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলি। কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটি জানান, সুবিচার চেয়ে তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। উপরমহল থেকে চাপ আসায় কোনও বিচার পাননি। উল্টে জামিনে মুক্তি পায় অমিত। সব শুনে স্বার্থপরের মতো নিজের ঘর বাঁচাতে পারলাম না। ওই মেয়েটিও অমিতের মায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন। বুঝলাম, মা-ছেলের এটা এক ধরনের ব্যবসা। মেয়েটির পরেই ওঁদের লক্ষ্য ছিল আমার উপর। তাই জামিন পেয়ে মুক্ত হওয়ার পরের মাসেই বিয়ের প্রস্তাব দেন তাঁরা।

সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে, কাউকে চোখ বুঁজে বিশ্বাস করার দিন বোধহয় ফুরিয়েছে। মেয়ে বলে চুপচাপ সব মেনে নেওয়ার যুগও আর নেই। আপ্রাণ চাইছি, আমার মতোই সুবিচার পাক ওই নিরীহ ধর্ষিতা। এত দিন মুখ বুঁজে ওঁকে অনেক কষ্ট, অপমান সহ্য করতে হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Raj Chakraborty Domestic Violence abuse Subhashree Ganguly Deboshree Ganguly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy