রবিবার অনীক এই লোগোর বিষয়ে বলতে গিয়ে কিছু সাক্ষাৎকারে নাকি লোগোর কারিগর রাজকমল আইচের নাম না করে বলেছেন, তিনি নিজেই এই লোগোর স্রষ্টা।
লোগো নিয়ে তরজায় রাজকমল-অনীক
মুক্তির আগেই অনীক দত্তের 'অপরাজিত' সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। এক, ছবির লোগোতে সত্যজিৎ রায়ের শৈল্পিক ভাবনার ছোঁয়া। দুই, রবিবাসরীয় সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম লোগো বিতর্ক নিয়ে।
রবিবার অনীক প্রকাশ্যে আনেন তাঁর আগামী ছবির লোগো। ছবিটি সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ পরিচালনার নেপথ্য কাহিনী নিয়ে তৈরি। এই লোগো বিষয় বলতে গিয়ে কিছু সাক্ষাৎকারে অনীক নাকি লোগোর কারিগর রাজকমল আইচের নাম উল্লেখ করেছেন। আবার কিছু জায়গায় তাঁর বক্তব্য, তিনি নিজেই এই লোগোর স্রষ্টা।
এই বক্তব্য চোখে পড়েছে রাজকমলের। তার পরেই ফেসবুকে সরব তিনি। দাবি, পুরোটাই তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। অনীক তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দিতে চাইছেন না।
ছবির মুক্তির আগে এই ধরনের তরজা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছবির প্রচারের সহায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এটিও কি সে রকমই কিছু হতে চলেছে? আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অনীকের সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গত কাল থেকে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট টানাপড়েন চলছে। দেখছি জট আরও বাড়ছে। তাই ঠিক করেছি, নিজের মতামত জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেব। সেটা থেকে সবাই যা বিচার করার করবেন। আমি মুখে আর কিচ্ছু বলব না।’’
রাজকমলের এই একটি বিষয় নিয়েই আপত্তি নয়। তিনিও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে। রীতিমতো তিক্ততা নিয়েই বলেছেন, ‘‘একটি লোগো কখনও একার ভাবনায় হয় না। ট্রেন থেকে শুরু করে অপু-দুর্গা সবই আমার দেওয়া ভাবনা। অনীকদা ট্রেনটি বড় আঁকার পরামর্শ দিয়েছেন। ক্যামেরা বসিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এ ভাবেই মিলিত প্রয়াসে কাজটি হয়েছে। এখন পরিচালক পুরোটাই নিজের কোলে ঝোল টানছেন। এটা কী করে মেনে নিই?’’ এর পরেই বিষয়টি তিনি প্রতিবাদ আকারে পোস্ট করেন ফেসবুকে। তাই নিয়ে শুরু তরজা। এর প্রেক্ষিতে অনীক নাকি কিছু জায়গায় বলেছেন, ‘‘যা সম্মান রাজকমলের প্রাপ্য, তার থেকে অনেক বেশি সম্মান ওঁকে আমরা দিচ্ছি।’’ এমনই দাবি গ্রাফিক্স ডিজাইনারের।
পরিচালকের এ কথা তাঁকে আরও অসম্মানিত করেছে। রাজকমলের কথায়, ‘‘অনীকদা কি আমায় দয়া করছেন?’’ ডিজাইনার নিজে বিশিষ্ট শিল্পী সমীর আইচের ছেলে। অনীক বেশ কিছু জায়গায় সে কথাও উল্লেখ করেছেন। এটাই রাজকমলের দ্বিতীয় আপত্তি। তাঁর যুক্তি— এক, সমীর আইচ নামটি উল্লেখের কোনও প্রয়োজন ছিল? পেশা দুনিয়ায় এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে এটি হতে পারে। পাশাপাশি রাজকমলের দাবি, এটি তো তা হলে স্বজনপোষণ দোষে দুষ্ট হতে চলেছে! অনীক কিন্তু তাঁর বাবার নাম দেখে বা বাবার সঙ্গে কথা বলে তাঁকে কাজে নেননি। তাঁর কাজ দেখে তাঁকে ডেকেছেন। এখন অকারণে সমীর আইচের নাম জড়িয়ে হয় বাড়তি প্রচারের চেষ্টা করছেন। নয়তো, সমীর আইচের ছেলেকে তিনি সুযোগ দিয়েছেন, এটা বলতে চাইছেন। যা তিনি মেনে নিতে পারছেন না।
পারিশ্রমিক নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। রাজকমলের কথায়, কম পারিশ্রমিকে তিনি কাজ করছেন। এখনও সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক পাননি। এই প্রসঙ্গে ‘অপরাজিত’-র প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান জানিয়েছেন, পরপর দিনে ব্যাঙ্ক বন্ধ। তাই রাজকমলের পারিশ্রমিক পেতে দেরি হচ্ছে। প্রযোজকের বক্তব্য শুনে ডিজাইনারের কটাক্ষ, এখন নেট মাধ্যমের কল্যাণে অনলাইনেও টাকা পাঠানো যায়। এর জন্য ব্যাঙ্কে যাওয়ার দরকার পড়ে না। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, তিনি শুনেছেন অনীক দত্ত নাকি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন। তাতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তবে পরিচালক আইনি পথে হাঁটলে তিনিও পিছিয়ে থাকবেন না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন রাজকমল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy