বহুরূপী সম্প্রদায়ের মতোই একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে টোটো ভাষাও। পরিচালক রাজাদিত্যের আফশোস, স্বাধীনতার পরে দেশে ১৫০টি আঞ্চলিক ভাষার অপমৃত্যু ঘটেছে। প্রতি ১৪ দিনে হারিয়ে যায় একটি করে ভাষা। এই মুহূর্তে ইউনেস্কো বলছে, ৩০টি মাতৃভাষার পরিণতি খুবই করুণ।
রাজাদিত্যের পরিচালিত ছবিগুলির পোস্টার
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’ আর তার ‘শ্রীনাথ বহুরূপী’কে মনে পড়ে? প্রযোজক রাজ চক্রবর্তী সম্প্রতি এই বিশেষ সম্প্রদায়কে এনেছেন তাঁর নতুন ধারাবাহিক ‘গোধূলি আলাপ’-এ। বাস্তবে এঁরা কেমন আছেন? খোঁজ রাখে না কেউ। তবে এখনও উত্তর কলকাতার অলিতে গলিতে বা চৈত্রের গাজনের মেলায় দেখা যায় তাঁদের। চলতি কথায় তাঁরা ‘সং’। সম্প্রতি তাঁদের খোঁজ নিলেন পরিচালক রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়।
জন্মসূত্রে বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা রাজাদিত্যের মামারবাড়ি সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মভিটে লাভপুরে। পরিচালক খুব কাছ থেকে দেখেছেন এই সব মানুষদের। ২০০১ সালে তিনি বহুরূপীদের গ্রামেও গিয়েছিলেন। দেখেছেন, কত অনটনের মধ্যে তাঁদের দিন কাটে। দেখেছেন, কী ভাবে বাংলার এক জনপ্রিয় লোকশিল্প ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তখনই তাঁর মনে হয়েছিল, এঁদের নিয়ে ছবি বানাবেন। তারই ফলাফল ৯০ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘ডাইং আর্ট অফ দ্য বহুরূপীজ অফ বেঙ্গল।’ ছবিতে নিজেদের কথা বলতে শোনা গিয়েছে বহুরূপী শিল্পী সুবলদাস বৈরাগ্য, রবি পণ্ডিত, বীরভূমের ব্যাধ পরিবারের রাজেন্দ্র ব্যাধ ও বাজিকর সম্প্রদায়ের বহুরূপী ভানু বাজিকরকে।
একই অবস্থা টোটো ভাষারও। পরিচালকের আফশোস, স্বাধীনতার পরে দেশে ১৫০টি আঞ্চলিক ভাষার অপমৃত্যু ঘটেছে। প্রতি ১৪ দিনে হারিয়ে যায় একটি করে ভাষা। এই মুহূর্তে ইউনেস্কো বলছে, ৩০টি মাতৃভাষার পরিণতি খুবই করুণ। সেই জায়গা থেকেই রাজাদিত্যের আরও একটি তথ্যচিত্র ‘লস্ট ফর ওয়ার্ড’। ছবিটি করতে গিয়ে পরিচালক দেখেছেন, এখনও ইন্দো-ভূটান সীমান্তে দেড় হাজারের মতো টোটো ভাষাভাষী মানুষ থাকেন। তাঁদের মধ্যে কিছু জন অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। ধনীরাম টোটো প্রথম এই ভাষায় উপন্যাস লিখেছিলেন। টোটোদের গ্রামে গিয়ে পরিচালক খুঁটিয়ে দেখেছেন তাঁদের জীবনযাত্রা। বুঝেছেন, গ্রামবাসীরা বাঁচলেও বাঁচবে না তাঁদের মাতৃভাষা।
সম্প্রতি, ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে রাজাদিত্যের ভাষার উপরে তৈরি ছবিটি। পরিচালকের কথায়, এই ধরনের ছবি আগামী প্রজন্মকে দেশের হারিয়ে যাওয়া সম্পদ সম্পর্কে জানাবে। সুইৎজারল্যান্ড আগামী বছর ‘লস্ট ফর ওয়ার্ডস’ তথ্যচিত্রটি দেখাবে|
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy