শীঘ্রই ড্রয়িংরুমে ফিরবে এই চেনা ছবি।
দীর্ঘ আড়াই মাস স্তব্ধ থাকার পর অবশেষে সচল হতে চলেছে টলিউড। আগামি ১০ জুন, বুধবার থেকে শুরু হতে চলেছে বাংলা ধারাবাহিক এবং সিনেমার শুটিং। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল চারটের সময় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োতে আলোচনায় বসে আর্টিস্ট ফোরাম, ইম্পা, ফেডারেশন এবং প্রোডিউসারস গিল্ড সহ সমস্ত সংগঠনগুলি। সেই বৈঠকেই সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এ দিন বলেন, "করোনা সংক্রান্ত সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনেই আবার শুটিং শুরু হতে চলেছ। আগামী ১৫ জুন থেকে দর্শকদের আর কোনও ধারাবাহিকের রিপিট টেলিকাস্ট দেখতে হবে না বলেই আশা করছি আমরা।"
তবে শুটিং শুরু হলেও তাতে থাকছে বেশ কিছু বিধিনিষেধ এবং পাশাপাশি কড়া সুরক্ষাবিধি।
শিশুশিল্পীদের ক্ষেত্রে
আপাতত ১০ বছরের কম বয়সী শিশু শিল্পীদের শুটিং করায় থাকছে নিষেধাজ্ঞা। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জুন মাল্য বলেন, "বাচ্চাদের সংক্রমিত হওয়ার রিস্ক বেশি। তাই তাদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে স্কুল বন্ধ। ছোটরা বাড়িতেই রয়েছে। এ সময় তারা যদি দেখে তাদের বয়সি ছেলেমেয়েরা বাইরে বেরিয়ে অভিনয় করছে তাদেরও মন খারাপ হবে। আমার মনে হয় এই কঠিন পরিস্থিতিতে শিশুশিল্পীদের বাড়িতে রাখার সিদ্ধান্তে অভিভাবকেরাও আপত্তি করবেন না।"
প্রবীণ শিল্পী প্রসঙ্গে
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রয়োজন না পড়লে ৬৫ বছরের বেশি যাঁদের বয়স তাঁদের বাড়ি থেকে বেরনো নিষেধ। তা হলে টলিপাড়ার প্রবীণ অভিনেতারা কী করবেন, ১ জুন সরকার থেকে শুটিং শুরুর ছাড়পত্র পাওয়ার পর সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল টলিপাড়ার আনাচে কানাচে। আজ মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ৬৫ বছরের বেশি যে সমস্ত প্রবীণ অভিনেতা রয়েছেন তাঁরা চাইলে মুচলেকা দিয়ে শুটিং করতে পারবেন। তবে তাঁরা যদি মনে করেন এই অবস্থায় শুটিং করবেন না, বাড়িতে থাকবেন, সে স্বাধীনতাও দেওয়া হয়েছে।
বিমার ব্যবস্থা
শুটিং-এ গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে শিল্পীদের পাশে দাঁড়াবে ইন্ডাস্ট্রি। কলাকুশলীদের জন্য থাকছে ২৫ লক্ষ টাকার বিমার ব্যবস্থা। যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল দেবে ৫০%, প্রযোজনা সংস্থা দেবে ৪০ % এবং আর্টিস্ট ফোরাম দেবে ১০%।
ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কাঁচি
তবে বাদ পড়ছে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য। কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ টলিপাড়া। তাই আলিঙ্গন, হাত ধরা, চুম্বনের মতো দৃশ্য আগামি বেশ কিছু দিন দেখা যাবে না সিরিয়াল এবং সিনেমাতে।
কস্টিউমের ক্ষেত্রে নির্দেশিকা
সংক্রমণ রুখতে এ বার থেকে কস্টিউম বাড়িতেই নিয়ে আসতে হবে অভিনেতা-অভিনেত্রীকে। বাড়িতেই তা স্যানিটাইজ করে, পরিষ্কার করে নিয়ে যেতে হবে শুটে ।
মেকআপ কিট সংক্রান্ত নির্দেশ
সিনিয়র আর্টিস্ট ছাড়া বেশিরভাগ কলাকুশলির নিজের মেকআপ কিট নেই। ভরসা প্রযোজনা সংস্থার মেকআপ কিটের উপর। অনেক সময়তেই এক মেকআপ কিট ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু করোনাত্তর শুটিং পর্বে আর তা করা যাবে না। যে সমস্ত শিল্পীরা বাড়ি থেকে মেকআপ আনবেন না প্রযোজনা সংস্থা থেকে আর্টিস্ট প্রতি একটি করে মেকআপ কিট দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। এ তো গেল মেকআপ কিটের কথা। মেক আপ রুম? জানা গিয়েছে একটি কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে থাকতে পারেন কমপক্ষে দু'জন। একটু বড় মেকআপ রুম হলে সে ক্ষেত্রে আরও বেশি অভিনেতা থাকতে পারবেন তবে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
তবে আর্টিস্ট ফোরাম, ফেডারেশন সহ বাকি সংগঠনগুলি আজ বারেবারেই জানিয়েছেন, কোনও শিল্পী যদি এই সঙ্কটকালেও কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক হন তবেই যোগ দেবেন। কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। রিস্ক ফ্যাক্টর থাকছেই। তাই ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হবে সবাইকে। কিন্তু এই যে একগুচ্ছ নিয়ম, বাধানিষেধ, তাতে কি টলিউডের গুণগত মান হ্রাস করবে? অরিন্দম বলেন, "অভিনব ভাবে শুটিং শুরু হচ্ছে। কিন্তু রসাস্বদন থেকে দর্শকেরা যাতে বঞ্চিত না হন সে কথাই সবাই মাথায় রাখব।"
অতএব হাতে মাত্র আর কয়েক দিন। তার পর থেকেই টলিউডের অন্দরে শোনা যাবে, "সাইলন্স, লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন...'।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy