রবিবার প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের বিভিন্ন আঙ্গিককে অনুরাগীদের সামনে তুলে ধরলেন বিশিষ্টজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে তিনি ডাকতেন ‘প্রিন্স’ নামে। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে লেখা আটকে গেলে দুটো ইট পেতে ডন-বৈঠক দেওয়ার বা কাল্পনিক কোনও শত্রুর সঙ্গে ঝগড়া করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আবার অবলীলায় পাসপোর্ট, ভিসা না দেখিয়ে বাংলাদেশের অভিবাসন আধিকারিকদের দেখিয়েছিলেন একটি চিঠি। কারণ পড়শি দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের হতে সেখানে লিখেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সমরেশ মজুমদারের বাংলাদেশে প্রবেশের কোনও ভিসা, পাসপোর্ট লাগবে না! এই ভাবেই রবিবার প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের বিভিন্ন আঙ্গিককে অনুরাগীদের সামনে তুলে ধরলেন বিশিষ্টজনেরা। ‘স্মরণে সমরেশ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে জিডি বিড়লা সভাঘরে কয়েক ঘণ্টায় আক্ষরিক অর্থেই সমরেশকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন উপস্থিত শ্রোতারা।
রবিবার প্রয়াত সাহিত্যিকের স্বকণ্ঠের রেকর্ডে ‘ললাট লিখন’ গল্পটি শুনিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পাঠ করা হয় শেখ হাসিনা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তা। সাহিত্য জগৎ থেকে প্রয়াত সাহিত্যিককে স্মরণ করলেন প্রকাশক সবিতেন্দ্রনাথ রায়। সমরেশের সাহিত্যে বাংলার রাজনৈতিক চিত্রের বিভিন্ন স্তরও ফুটে উঠেছে বলে উল্লেখ করে তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা শোনালেন রাজনীতিবিদ বিমান বসু।
আজকে বাংলা সিরিয়ালের যে রমরমা তাঁর বীজ বপন করা হয়েছিল স্বয়ং সমরেশের হাতে। সিনেমা নিয়েও তাঁর উৎসাহ কিছু কম ছিল না। ‘কালবেলা’ দেখার পর গৌতম ঘোষকে বলেছিলেন, ‘‘এত দিন মাধবীলতা ছিল আমার, এ বার থেকে হল তোমার।’’ সমরেশের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ রাখেননি বলে মঞ্চে কিছুটা নিজেকেই দায়ী করলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বক্তব্য শেষ করলেন ‘হে সখা, মম হৃদয়ে রহ’ রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে। একে একে প্রয়াত সাহিত্যিকের স্মৃতিচারণ করলেন রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, দুলাল লাহিড়ী, সুদেষ্ণা রায়, অশোক বিশ্বনাথন, খেয়ালী দস্তিদার, শ্রীলেখা মিত্রেরা।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিবেদন করলেন শরণ্যা মুখোপাধ্যায় এবং মনোজ মুরলী নায়ার। রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি সমরেশ পছন্দ করতেন বাংলা আধুনিক গান। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ‘এই মেঘলা দিনে একলা’ এবং ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা’ গেয়ে শোনালেন লেখকের স্নেহধন্য পর্নাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও সমরেশের শ্রদ্ধায় গান নিবেদন করলেন সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy