Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Kolkata group theatre

একাধিক নাট্যদলের অনুদান বন্ধ করল কেন্দ্র! নেপথ্যে ‘অদ্ভুত’ কারণ, ক্ষোভ থিয়েটার মহলে

কেন্দ্রীয় সরকার দেশের একাধিক নাট্যদলের অনুদান বন্ধ করেছে, যার মধ্যে সিংহভাগ দল পশ্চিমবঙ্গের। প্রতিবাদের পথে বাংলার নাট্যসমাজ।

Central Government stops grant for several theatre groups Kolkata’s thespian reacts

দলের অনুদান বন্ধকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ বাংলা নাট্যজগতের একাংশ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ১৯:৪৮
Share: Save:

সম্প্রতি, টলিপাড়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছিল। সেই জটিলতা কাটতে না কাটতেই বাংলার নাট্যজগতে অন্য সমস্যার সূত্রপাত। একাধিক দলের রেপার্টরি অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ১ অগস্ট তাদের তরফে একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বাংলার একাধিক নাট্যদলের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সারা দেশের একাধিক নাট্যদলের উপরেই কোপ পড়েছে। তার মধ্যে কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে এ রাজ্যের প্রায় ৩০টি দল রয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপের নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ রয়েছে বলেই মনে করছেন নাট্যজগতের একাংশ। প্রায় ১৮ বছর ধরে কেন্দ্রীয় অনুদান পাচ্ছে নির্দেশক মেঘনাদ ভট্টাচার্যের দল ‘সায়ক’। তিনি বললেন, ‘‘দলের ১৮ জনের টাকাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে! জেলার একাধিক দলেরও একই অবস্থা। অনুদান বন্ধের নেপথ্যে যে সমস্ত কারণ দেখানো হয়েছে, তা হাস্যকর।’’ জানা যাচ্ছে, কোনও দলকে বলা হয়েছে তারা এখন স্বাবলম্বী। তাই আর অনুদান পাবে না। আবার কারও অতীতে কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে কাজের বিষয়কে ‘অজুহাত’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কাউকে বাড়ি তৈরির অনুদান দেওয়া হয়েছে। সেই বাড়ি কেন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, সেই যুক্তিতেও তাদের অনুদান বন্ধ করা হয়েছে।

নাট্যজগতের বাস্তব পরিস্থিতি সমাজের অধিকাংশ মানুষ জানেন বলেই মনে করছেন মেঘনাদ। সেখানে অনুদান বন্ধ করে দেওয়া মানে, আগামী দিনে প্রযোজনায় সমস্যা হতে পারে। মেঘনাদকে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘তাঁর উপস্থাপনা সন্তোষজনক নয়।’ মেঘনাদের আক্ষেপ, ‘‘গত পাঁচ দশকে ৬০টা উৎসব করেছি। ৩০টি প্রযোজনার ৩ হাজারের উপর শো করেছি। তার পর যদি এই কথা শুনতে হয়, তা হলে কী বলা উচিত, নিজেই শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না!’’

গৌতম হালদারের ‘নয়ে নাটুয়া’র দু’জন সদস্যের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কোনও কারণ না দর্শিয়েই। আনন্দবাজার অনলাইনকে গৌতম বললেন, ‘‘বুঝতে পারছি না, হঠাৎ করে এ রকম কেন করা হল! থিয়েটার তো কোনও বাণিজ্যিক মাধ্যম নয়। অনেক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে একটা দলকে এগিয়ে যেতে হয়। সেখানে এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।’’

নাট্যদল ‘সংসৃতি’র কর্ণধার দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টির নেপথ্যে রাজনৈতিক ‘ষড়যন্ত্র’-এর আঁচ পাচ্ছেন। ১২ বছর তাঁরা অনুদান পাচ্ছিলেন। এ বার তাঁর দলের ১৭ জনের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেবেশ বললেন, ‘‘আমি নাকি খুবই প্রভাবশালী। আমি নাকি কর্পোরেট অনুদানে নাটক করি! আমি নাকি ছবি পরিচালনা করি। তাই অনুদান বন্ধ।’’

দেবেশ জানালেন যে কমিটি সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে, সেখানে কোনও বাঙালি নেই। ফলে বাংলার নাট্যজগতের বাস্তব পরিস্থিতি সেখানে অজানা। দেবেশ বললেন, ‘‘ব্যক্তিগত অসূয়া এবং বিজেপি বিরোধিতার জন্যই এমনটা হয়েছে। এটা যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা না হয়, তা হলে কী?’’

নাট্যজগতের একাংশের মতে, যে ভাবে রিপোর্টে কারণ দেখানো হয়েছে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বাংলার দলগুলিকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা হয়েছে।

আগামী ৫ অগস্ট সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের একাধিক নাট্যদল এই বিষয়ে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরবে। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথেও তারা যেতে রাজি, এমন আঁচও পাওয়া যাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

theatre Bengali Theatre grant Central Government Ministry of Culture debesh chatterjee Goutam Halder Meghnad Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy