সলমন-কর্ণ-অনুষ্কা-রণবীর
ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। কিংবা বুদ্ধি কিংবা বলিউডের ব্র্যান্ড ম্যাজিকের জোর। লকডাউনের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ব্যবসাবাণিজ্য শুরু হচ্ছে, দোকান খুলছে। সেলেবরাও লেগে পড়েছেন বিপণনে। তবে তা বাড়িতে বসেই। কারণ এখনও শুটিং শুরুর অনুমতি মেলেনি। তাই বিজ্ঞাপনের শুটিংও মুঠোফোনের ভরসায় বাড়ি থেকেই সেরে ফেলছেন তারকারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের প্রচারের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনী প্রচারও করে থাকেন তাঁরা। অবশ্যই মোটা অঙ্কের বিনিময়ে। আর লকডাউনের পরিস্থিতিতে ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্টের এটাই মুখ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে, যা হয়তো বদলে দিতে পারে আগামী দিনে বিজ্ঞাপনী প্রচারের ধারাকেও।
সম্প্রতি সলমন খান, রণবীর সিংহ, অনুষ্কা শর্মা, বরুণ ধওয়ন, শিল্পা শেট্টি, তাপসী পান্নু, কর্ণ জোহর-সহ অনেক তারকাকেই দেখা গিয়েছে ব্র্যান্ড বিপণনের এই নতুন ট্রেন্ডে শামিল হতে। ব্র্যান্ডের সঙ্গে তারকাদের চুক্তিতে টেলিভিশন কমার্শিয়ালের (টিভিসি) পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াও জুড়ে গিয়েছে অনেক দিনই। তবে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোমোশন ছিল, মূল ছবির পার্শ্বচরিত্রের মতো। মুখ্য ভূমিকায় সব সময়েই টিভিসি। কিন্তু ঘরবন্দি দশায় সোশ্যাল মিডিয়া সার্ফিং অনেক বেড়ে গিয়েছে। এ দিকে টেলিভিশনে বিনোদনের ক্ষেত্রে নতুন কনটেন্ট নেই বললেই চলে। তাই প্রডাক্টের বিজ্ঞাপনের জন্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দিকেই নজর সংস্থাগুলির।
তারকাদের সাম্প্রতিক প্রচারমূলক পোস্ট খেয়াল করলে দেখা যাবে, সেখানে করোনাভাইরাস বা লকডাউনের পরিস্থিতি প্রতিফলিত হচ্ছে। রণবীর সিংহ একটি ব্যাঙ্কের হয়ে বিজ্ঞাপন করেছেন। যেখানে ঘরে বসেই কী ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে, অনলাইন লেনদেনের সুবিধে ইত্যাদি তুলে ধরা হচ্ছে। অনুষ্কা শর্মা এবং বিরাট কোহালি একটি অনলাইন কোচিং সেন্টারের হয়ে লাইভ করেছিলেন। এই ব্র্যান্ডটি কিন্তু বিরুষ্কার এনডর্সমেন্টের তালিকায় লকডাউন পরবর্তী সংযোজন। অর্থাৎ ঘরে বসেই তাঁরা নতুন ব্র্যান্ড জুড়ে নিচ্ছেন নিজেদের নামের সঙ্গে। সলমন খান আবার পার্সোনাল কেয়ার ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন তাঁর পানভেলের ফার্মহাউসে বসে। যেখানে ফেসওয়াশের পাশাপাশি স্যানিটাইজ়ারের মতো জরুরি প্রডাক্টও ছিল। কর্ণ জোহরকে খুব একটা ব্র্যান্ড প্রোমোশনে দেখা যায় না। কিন্তু একটি হেয়ার কালার সংস্থা পরিচালককে দিয়ে তাঁদের বিজ্ঞাপন করিয়েছে। সালঁয় না যেতে পারার ফলে কর্ণের সব চুল প্রায় সাদা। নিজের সেই লুকের ছবি দিয়ে কর্ণ ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘‘পরিচালকেরা আমাকে বাবার চরিত্রের জন্য ভাবতে পারেন।’’ এ বার হেয়ার কালারের বিজ্ঞাপন করার সময়ে কর্ণ বলছেন, ‘‘কেউ তো বাবার চরিত্রের প্রস্তাব দিলই না, উল্টে বাচ্চারা আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে। তাই মেকওভার জরুরি।’’ প্রডাক্টের বিজ্ঞাপনও ছকে ফেলা হচ্ছে প্রাসঙ্গিকতা অনুযায়ী।
আরও পড়ুন: কোয়রান্টিনে ইদ
ইনস্টাগ্রাম প্রোমোশনের ভিত্তিতে একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল বছরের গোড়ায়। সেখানে ২০১৯ সালে ইনস্টা-রিচ লিস্টে কারা রয়েছেন, তাঁদের নাম দেওয়া হয়েছিল। এক নম্বরে রয়েছেন কাইলি জেনার, যিনি প্রোমোশনাল পোস্টের জন্য প্রায় ১২ লক্ষ মার্কিন ডলার পেয়ে থাকেন। ভারত থেকে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া ও বিরাট কোহালি ছিলেন ১৯ ও ২৩ নম্বরে। প্রোমোশনাল পোস্ট পিছু প্রিয়ঙ্কা পান প্রায় ২ লক্ষ ৭১ হাজার মার্কিন ডলার এবং বিরাটের প্রাপ্তি প্রায় ১ লক্ষ ৯৬ হাজার। প্রচারমূলক পোস্টই নয়, নিজেদের সাধারণ ছবির জন্যও ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে নামী তারকাদের। টাকার অঙ্ক বাড়ে-কমে তারকাদের ফলোয়ারের নিরিখে।
লকডাউনের মধ্যে টলিউডের কোনও তারকার ঝুলিতে প্রডাক্ট প্রোমোশনের প্রস্তাব এখনও পর্যন্ত নেই। সেলেব ব্র্যান্ড ম্যানেজার দেবায়ুধের কথায়, ‘‘অনলাইনে প্রডাক্ট লঞ্চ, প্রোমোশন নিয়ে কথাবার্তা চলছে। যেহেতু বাইরে শুট করার অপশন নেই, সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের দিকেই ঝুঁকছে সংস্থাগুলো। খুব শিগগিরি এখানেও এই প্রচার দেখা যাবে।’’ নতুন ট্রেন্ডে কি টাকার অঙ্ক বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে? ‘‘মনে হয় না। বাজারের যা অবস্থা, তাতে সর্বত্রই বাজেট কাট হচ্ছে। টিভিসি বা ইভেন্টের তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়া প্রোমোশন বরং সস্তা,’’ মন্তব্য তাঁর।
এই ট্রেন্ড ক’টি বিষয় তুলে ধরছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খবরের টিভিসি বা ইভেন্টের তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করলে খরচ কম। মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছনো যায়। তবে ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুক বা টুইটার ব্যবহারকারীদের কাছে আগ্রহ জাগাবে, এমন প্রডাক্টের জন্যই এমন বিপণন কৌশল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: দুর্গতদের পাশে তরুণ তুর্কিরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy