কাজই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর প্রথম প্রেম। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে গৃহীত।
একটু কাজের কথা বলি আগে?
বছরের শুরুতেই লঞ্চ হল ‘আহা রে’-র টিজার। দুই বাংলার খাওয়া নিয়ে গল্প। এক জন বাংলাদেশের শেফ আর এক জন কলকাতায় হোম ডেলিভারি করা মানুষ। বাংলাদেশের আরিফিন শুভ থাকছেন এই ছবিতে। অপর্ণা সেন আমায় বলেছিলেন রঞ্জন ঘোষের এই চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করতে। সামনেই আসছে ‘শাহজাহান রিজেন্সি’। ছবি জুড়ে আমি নেই। কিন্তু সৃজিতের জন্য ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ করতে রাজি হয়েছি। আমি মিউজিশিয়ানের চরিত্রে। এই ছবি দর্শকের ভাল লাগবে। আরও কয়েকটা কাজ আছে। ‘মুখার্জিদার বউ’ যেমন। এই ছবিতে শাশুড়ি-বউয়ের সমস্যায় আমি ক্যাটালিস্ট। ‘অন্বেষণ’ আসছে সুজিত মণ্ডলের। প্রফুল্ল রায়ের গল্প। আমি, প্রিয়ঙ্কা, অনন্যা, জুন আছে। রণজয় বিষ্ণু আছে। শ্রীলা মজুমদারও থাকছে। ‘ভাবনা আজ ও কাল’ থেকে প্রেজেন্ট করছি এই ছবিটা। এ ছাড়াও রেশমীর ছবি আছে। টেলিভিশন থেকে নায়ক জিতু কাজ করছে আমার সঙ্গে। জিতুর সঙ্গেই অঞ্জন চৌধুরীর ছেলে সঞ্জীব চৌধুরীর ‘বিদ্রোহিনী’ করছি। ‘বেলাশুরু’ও আছে।
আপনার কাজের খবর জেনে মনে হচ্ছে নায়িকার থেকে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা এ বছর বেশি করে থাকবেন?
নায়িকা ঋতুপর্ণার কোনও বিকল্প হয় না। নায়িকা ঋতুপর্ণা তো থাকবেই। কিন্তু নায়িকার আত্মপ্রকাশ আরও অভিনয়ের মাধ্যমে কেমন করে হবে? সেটাই চ্যালেঞ্জ। ঐশ্বর্যা রাই থেকে বিদ্যা বালন, সকলে এ পথেই তো গেছেন। চ্যালেঞ্জটা বার বার নিতে হবে। কাজ আমার প্রথম প্রেম। ওহ! আর একটা ছবি আছে, ‘গুডমর্নিং সানশাইন’ সঞ্জয় নাগের ইংরেজি ছবি। দেখুন, থেমে থাকলে চলবে না।
হ্যাঁ। এক দিনে বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুরে কাজ করে কলকাতা ফিরতে হবে। তাই তো?
(প্রচন্ড হাসি।)
এত তো ছবি। কিন্তু বক্স অফিসের সাফল্য সব ছবিতেই কি এক রকম?
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বক্স অফিসের সাফল্যের কথা ভেবে ছবি করে না। তা হলে ২০০৮-এ ‘ইচ্ছে’-র মতো ছবি প্রেজেন্ট করার কথা সে ভাবত না। ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন পরিচালক, অভিনেতারা আসবে না? এই যেমন ‘পিউপা’ ছবিটা দেখে আমি ইন্দ্রাশিসের ‘পার্সেল’ করার কথা ভাবি। তখন তো দেখিনি ‘পিউপা’ কত দিন চলেছে? বাংলা সিনেমাকে শুধু হিট বা ফ্লপ দিয়ে চিনলে একেবারেই চলবে না। আমার গত বছরের ছবির গ্রাফ যদি দেখি, দেখব কৌশিকদার ‘দৃষ্টিকোণ’ সুপারহিট। সে আন্দাজে ‘ধারাস্নান’ বা ‘গহীন হৃদয়’ বক্স অফিস সাফল্য না পেলেও প্রচুর মানুষকে ছুঁয়ে গেছে। সাংবাদিকরা সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে না। সব হিট-ফ্লপ দিয়ে বিচার হলে ‘রেনবো জেলি’ বা ‘সহজ পাঠের গল্প’ এত লোকের মুখে মুখে ঘুরত না। মানুষের ভাললাগারও গুরুত্ব আছে।
আপনার জীবনে প্রযোজকের বড় ঘর, ধরাবাঁধা বিশাল লবি তেমন করে চোখে পড়ে না...
নাহ। আমার কোনও নির্দিষ্ট লবি নেই। সেই কারণে এমন অনেক বার হয়েছে, আমি হয়তো ভাল একটা চরিত্র পাইনি। কিন্তু তার পরিবর্তে অন্য এমন একটা চরিত্র পেয়েছি যেটা মানুষের মনে থেকে গেছে। দেখুন, আমার সঙ্গে সারা ক্ষণ নেগেটিভ এনার্জি কাজ করে। বলতে পারেন প্যারালালি চলে। কিন্তু আমি জীবনের উজ্জ্বল দিকটাকেই চোখের সামনে রাখি।
আরও পড়ুন: শারীরিক অত্যাচার করত প্রেমিক, মুখ খুললেন অভিনেত্রী
অনেক জায়গায় বলতে শুনেছি ‘বাহ বাহ ঋতু? ও পুরো নায়কদের মতো...’
(প্রচন্ড হাসি) আমি নিজের ইনস্টিংক্টে চলি। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিই। ঝড় এলে নিজে সামলাই। এবং একেবারেই নিজেকে কমফর্ট জোনের মধ্যে রাখি না। আমি ভাবতেই পারি অনেক ছবি করলাম। এ বছর কম করব, নাহ, কক্ষনও না। বরং আর কী কাজ করতে পারি সেটি খুঁজি। লোকে ভাবে এ রকম নায়করাই হয়তো হয়...জানি না।
এত ছবি করেও আপনি ছেলে, মেয়ে সংসার ম্যানেজ করছেন।
চাইলে এক জীবনে সব সম্ভব। একটুও সময় নষ্ট করা যাবে না। যখন মা হবে ভাবছি সেই সময়টা জীবনের কেরিয়ারের ভাল কাজের সময়। তিরিশ বছরে মা হওয়ার সময়। তখন অনেক ভাল ছবির অফার। কী করব? ম্যানেজ করতে হয়েছে। অনেকে মা হয়ে রেস্ট নেয়। ওই রেস্ট না নিয়ে আমি ছবি করেছি।
আরও পড়ুন: ব্লাউজের বোতাম খুললে আর ব্রা দেখালেই সাহসী হয় না: স্বস্তিকা
ছেলেমেয়ে অভিযোগ করে না?
করে। ওদের বোঝাই। ওদের কাজের জায়গায় নিয়ে যাই। ওরাও দেখুক মা কী করে।
‘শাহজাহান রিজেন্সি’তে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
আর সঞ্জয়ের সঙ্গে ঝগড়া হলে?
(একটু চুপ) ওর সঙ্গে তো আমার ইটারনাল ঝগড়া।
ইন্ডাস্ট্রি, সংসার, তার পরে আবার সামাজিক কর্তব্য...
ঠিক কর্তব্য নয়। মন থেকেই করি। আমার বদনাম আছে। ঋতুপর্ণা কাউকে না বলতে পারল না বলে নিজের আখের গোছাতে পারল না। তা হোক। অত গোছানো সব কিছু আমি চাই না।
আপনার বাড়িতে নাকি পরিচালক সুজিত গুহ এসেছিলেন?
একটা মিটিং চলছিল আমার। আমাকে বলল যে সুজিতদা এসছেন। আমি বললাম, একটু অপেক্ষা করতে বলুন আসছি। আমি ভেবেছি সুজিত মণ্ডল এসেছেন। ছবি করছি তো আমরা। কিছু ক্ষণ পর আবার তিনি বলে পাঠালেন বলতে সুজিত গুহ এসছেন। আমি না সেই মুহূর্তে নাম শুনেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। সুজিতদা! এক সময়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সব হিট ছবির পরিচালক। এখনকার প্রজন্ম হয়তো সে ভাবে চেনে না।আমার আর প্রসেনজিতের ‘মনের মানুষ’ ওঁর হাতেই তৈরি। আমি সব ছেড়ে গেলাম দেখা করতে। উনি একটা ভিসুয়্যাল কিছু করছেন, আমাকে থাকতে হবে। আমি হ্যাঁ বললাম। হি ইজ দ্য কিং মেকার। এই রিঅ্যাকশন আজও হয় আমার...আমার মনে হয় এই বোধগুলো থাকা উচিত।
‘আহা রে’-র টিজারে ঠিক এমনই লাগছে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে।
ঠকেওছেন নিশ্চয়ই...
অনেক। আমাকে ব্যবহার করে অনেকে চলে গেছে। সেই ধাক্কাটা সামলাতে হয়।
আরও পড়ুন: চলতি বছরই পর্দায় ফিরছে জিৎ-কোয়েল জুটি
‘ভাবনা আজ ও কাল’-এর কোনও ছবি, ঋতুপর্ণা আর প্রসেনজিৎ...এ রকম হবে কিছু?
(একটু ভেবে) হতেই পারে। দর্শকরা একটু অপেক্ষা করুন। আমি প্রযোজনার কথাও ভাবছি। এই ‘রসগোল্লা’-র পাভেল আমার কাছে প্রথম এসেছিল, আমি ওকে শিবুর কাছে পাঠাই। আমি চেষ্টা করি। হয়তো প্রচার করি না। পাভেলের সঙ্গে এ বছর ছবি করার প্ল্যান আছে। সৃজিতের সঙ্গেও এ বছর নতুন কাজ হবে। দেখা যাক...
তীব্র আঘাতে ঝলমলে ঋতুপর্ণা কী করেন?
একদম চুপ করে যাই। নিস্তব্ধতা ছাড়া আর কিছু ভাল লাগে না।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্তসেলেব্রিটি গসিপপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরবিনোদনবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy