Brave and bold Simi Garewal was once scared by Rani Mukherjee dgtl
Simi Garewal
Simi Garewal: সাতের দশকে পর্দায় নগ্ন হওয়ার সাহস রাখা সিমি একদা ভয় পেয়েছিলেন রানির এক প্রশ্নে
জীবনের কোনও ক্ষেত্রেই খুব একটা থমকাতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে এক বার তাঁকে উদ্দেশ করে উড়ে আসা একটি প্রশ্নে থমকে যান তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১ ১২:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ছবিতে অভিনয় থেকে টেলিভিশনে সঞ্চালনা। ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি থেকে গিয়েছেন স্বকীয়তা নিয়েই। বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দাতেও সমান উজ্জ্বল তিনি। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী এবং সাহসী। ছবিতে তাঁর চরিত্রগুলিই সাহসীকতার বাহক।
০২২০
তিনি সিমি গারেওয়াল। জীবনের কোনও ক্ষেত্রেই খুব একটা থমকাতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে এক বার তাঁকে উদ্দেশ করে উড়ে আসা একটি প্রশ্নে থমকে যান তিনি। কিছু ক্ষণ বাকরুদ্ধ থাকার পর অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে এগিয়ে যান। তাঁকে প্রশ্নটি করেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়।
০৩২০
সিমির জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৭ অক্টোবর। পঞ্জাবের এক জাঠ পরিবারের মেয়ে তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জে এস গারেওয়াল। তাঁর মায়ের নাম দর্শী। মায়ের দিক দিয়ে সিমি বলিউডের বিখ্যাত চোপড়া পরিবারের আত্মীয়।
০৪২০
তাঁর মা দর্শী এবং যশ চোপড়ার স্ত্রী পামেলার বাবা মহিন্দর সিংহ সম্পর্কে ভাই-বোন। সিমির শৈশবের অনেকটাই কেটেছে ইংল্যান্ডে। পড়তেন নিউল্যান্ড হাউস স্কুলে। অভিনয়ের নেশাই তাঁকে ভারতে টেনে এনেছিল।
০৫২০
তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘রাজ় কি বাত’। ইংরেজি বলার দক্ষতা তাঁকে সুযোগ দেয় ‘টারজান গোজ টু ইন্ডিয়া’ ছবিতে। পঞ্চদশী সিমি ওই ছবিতে ফিরোজ খানের নায়িকা ছিলেন। আত্মপ্রকাশেই বাজিমাত করেন তিনি।
০৬২০
সুন্দরী, বুদ্ধিমতী সিমি খুব দ্রুত বলিউডে নিজের জমি শক্ত করে নিয়েছিলেন। ১৯৭০ সাল ছিল তাঁর কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়।
০৭২০
ওই বছরেই মুক্তি পায় রাজ কপূরের ‘মেরা নাম জোকার’ এবং সত্যজিৎ রায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। দু’টি ছবিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে ধরা দেন সিমি। ‘মেরা নাম জোকার'-এ তিনি কিশোর রাজুর ভূমিকায় অভিনয় করা ঋষি কপূরের স্বপ্নসুন্দরী। অন্য দিকে আবার ‘অরণ্যের দিনরাত্রিতে’ তিনি আদিবাসী রমণী দুলি।
০৮২০
১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া মৃণাল সেনের ‘পদাতিক’ ছবির নায়িকাও হয়েছেন সিমি। সমান্তরাল ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও প্রসার জমাতে শুরু করেছিলেন তিনি।
০৯২০
‘চলতে চলতে’, ‘কভি কভি’, ‘কর্জ’, ‘নসিব’ সে রকমই কিছু উল্লেখযোগ্য কিছু ছবি। আড়াই দশকের কেরিয়ারে অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি ছবিতে।
১০২০
তবে তাঁর সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়েছিল যে ছবিটি নিয়ে সেটি হারমান কার্ল হেসের লেখা উপন্যাস নিয়ে তৈরি ছবি ‘সিদ্ধার্থ’।
১১২০
মার্কিন পরিচালক কনরাড হুকসের এই ছবিতে শশী কপূর ছিলেন তরুণ সিদ্ধার্থের ভূমিকায়। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে সিমিকে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়েছিল।
১২২০
সে সময়ে যা একপ্রকার নিষিদ্ধ ছিল ভারতীয় সিনেমাতে। ছবির শ্যুটিংয়ের বেশির ভাগই হয়েছিল উত্তর ভারতে। ‘কমলা:রূপী সিমির নগ্ন দৃশ্যের খবর প্রকাশ্যে আসার পরই সমালোচনার ঢল নামে।
১৩২০
অনেক কাটছাঁটের পরই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ভারতে। ভিন্ন মাত্রার ছবি করার পর আটের দশকে সিমির মন চলে যায় পরিচালনার দিকে। নিজের প্রোডাকশন সংস্থাও গড়ে তোলেন।
১৪২০
‘ইটস এ উম্যানস ওয়ার্ল্ড’, ‘লিভিং লেজেন্ড রাজ কপূর:, ‘ইন্ডিয়াস রাজীব’, ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ডিজায়ারেবল’— তাঁর প্রযোজনার কয়েকটি শো। এই শোগুলির মূল আকর্ষণ ছিল সিমির সঞ্চালনা।
১৫২০
তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় শো ছিল ‘রঁদেভু উইথ সিমি গারেওয়াল’। নামজাদা ব্যক্তিত্বদের এই শো-এ এনে অনেক সময়ই অপ্রস্তুত করে তুলতেন সিমি। তাঁদের এমন সমস্ত ব্যক্তিগত কথা বাইরে নিয়ে আসতেন যে শো-এর আমন্ত্রণ পাওয়ার পর ভাবতে হতো অতিথি হবেন কি না।
১৬২০
এই শো-তেই এক বার এক অতিথি আবার সিমির মুখ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আগেই জানানো হযেছে যে মায়ের দিক থেকে চোপড়া পরিবার সিমির আত্মীয় হয়। তাঁর শো-এ সে বার অতিথি হয়ে এসেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়।
১৭২০
রানির সঙ্গে আদিত্য চোপড়ার প্রেম চলছিল সে সময়। সে খবর অবশ্য ইন্ডাস্ট্রির কেউই জানতেন না। কিন্তু সিমির কানকে ফাঁকি দিতে পারেননি রানি। শো-এ তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে সরাসরি রানিকে প্রশ্ন করে বসেন সিমি।
১৮২০
এর উত্তরে রানিও পাল্টা সিমিকে বলেছিলেন যে, ‘আমিও আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে অনেক কিছুই জানি। সেগুলি কি বলব?’ কিছু ক্ষণ চুপ করে থাকার পর প্রসঙ্গ এড়িয়ে অন্য প্রশ্নে ঢুকে গিয়েছিলেন তিনি। পরে সম্প্রচার হওয়ার আগে ওই অংশটি বাদও দিয়ে দেওয়া হয়।
১৯২০
সিমির বর্ণময় জীবনের সঙ্গে কখনও জামনগরের মহারাজ, কখনও মনসুর আলি খান পটৌডী তো কখনও মনমোহন দেশাই, পঞ্জাবের প্রাক্তন রাজ্যপাল সলমন তাসের থেকে শুরু করে ঋষি কপূর— একাধিক পুরুষের নাম জড়িয়েছে।
২০২০
এ সব নিয়ে কখনও বিন্দুমাত্র বিচলিত হতে দেখা যায়নি সিমিকে। কিন্তু ওই দিন রানির প্রশ্নে কেন তিনি থমকে গিয়েছিলেন তা আজও অজানাই রয়ে গিয়েছে।