‘ছপক’-এ দীপিকা
বলিউডের রুপোলি পর্দায় সব কিছুই সুন্দর। ঝাঁ চকচকে এই জগতে সব পারফেক্ট। নায়িকার গালের ঢালে যেমন গ্ল্যামার, নায়কের পেশির ভাঁজে ধরা থাকে পৌরুষ। বছরভর কেউ অমুক নায়িকার প্রেমে পড়ে, তো তমুক নায়কের ভক্ত হয়ে ওঠে। এহেন স্টারডম ধরে রাখতে নিজেদের লুক নিয়ে অভিনেতাদেরও কসরত করতে হয় বইকি! রোজ ভোরবেলা উঠেই জিমে বা সমুদ্রসৈকতে দৌড়। ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে স্পা ও রূপচর্চা। মরাল গ্রীবা বা তন্বী চেহারা ধরে রাখতে বাদ দিতে হয় কত না প্রিয় খাবার! প্রত্যেক দিনের অধ্যবসায়ে তৈরি হয় এক এক জন স্টার। কিন্তু তারাই যখন একটা চরিত্রের জন্য জলাঞ্জলি দেয় এই গ্ল্যামার! তাঁদের কতটা কষ্ট করতে হয় সাধারণ মানুষের ধুলোবালির জীবনে বাঁচতে? কখনও কখনও তো সুঠাম কাঠামো ভেঙে মেদ জমাতে হয়, কখনও আবার রোদে পুড়ে নষ্ট করতে হয় মাখনরঙা ত্বক।
‘সুপার থার্টি’ ছবিতে হৃতিক রোশন বিহারি শিক্ষকের চরিত্রে। বারাণসীর সরু গলিতে গাড়ি না ঢোকায় রোজ রোদে পুড়ে হেঁটে গিয়েছেন সেটে। তাতে অবশ্য চরিত্রের জন্য লাভই হয়েছে। জিম করা বডি যেহেতু এই চরিত্রের জন্য উপযুক্ত নয়, তাই জিম ছেড়ে শুধু ডায়েট করেই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। হৃতিকের মতো ফিটনেস ফ্রিক চরিত্রের জন্য বিনা দ্বিধায় তাঁর শারীরিক পেশির গঠন থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছেন। সেখানে জোর দিয়েছেন মস্তিষ্কে। শিক্ষক আনন্দ কুমারকে পর্দায় যথাযথ ফুটিয়ে তুলতে তাঁর সঙ্গে সময়ও কাটিয়েছেন। অবশেষে টিজ়ার দেখে আনন্দের স্বগতোক্তি, তাঁর ছবি দেখে মনে হয়েছে নিজেকেই দেখছেন তিনি, হৃতিককে নয়।
এর আগে ‘কবীর সিংহ’ ছবির জন্য শাহিদ কপূরও কসরত করেছেন। ছবিতে নেশাগ্রস্তর চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য দিনে টানা ২০ বার ধূমপান করেছেন শাহিদ। যেখানে বাস্তবে তিনি নেশার থেকে শতহস্ত দূরে। অন্য দিকে কবীরের চরিত্রের জন্য তৈরি হতে আট কিলোগ্রাম ওজনও বাড়াতে হয়েছিল তাঁকে। ছবির পরে অবশ্য দ্বিগুণ শ্রমে তা ঝরিয়েও ফেলেছেন। ‘লাল কাপ্তান’ ছবিতে সেফ আলি খানের নাগা সাধুর লুকও সাধারণ নয়। অভিজাত নবাবের পক্ষে এই লুকের ভার বহন করাও কঠিন।
শাহিদ ও হৃতিক
আবার ‘বালা’ ছবিতে আয়ুষ্মান খুরানাকে দেখা যাবে অসময়ে টাক পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার মোকাবিলা করতে। অভিনয় দক্ষতায় জেন নেক্সটের কাছে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন আয়ুষ্মান। তবুও ‘বল্ড’ লুকে বোল্ড তিনি। বরং অভিনেতার আশা, তাঁর অনেক বন্ধু আছেন, যাঁরা এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কম বয়সেই। তাঁদের মতো অনেকের জন্যই এই চরিত্রটি তার কাছের। তবে মাথা কামাবেন না তিনি, সাহায্য নেবেন প্রস্থেটিক মেকআপের। এই মেকআপের সাহায্য নিয়ে দীপিকা পাড়ুকোনও ‘ছপক’ ছবিতে অ্যাসিড অ্যাটাক সার্ভাইভার লক্ষ্মী অগরওয়াল হতে পিছপা হননি। কেরিয়ারের মধ্যগগনে মুখের এই পরিবর্তন মেনে নেওয়া কি সহজ?
সেফ
কারও মুখে একটা ব্রণ দেখা দিলে তিনি কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন! যে কোনও সাধারণ মানুষই নিজের মুখে এমন রূপ কল্পনা করে হয়তো শিউরে উঠবেন। সেখানে সেই স্কিনে দিনের পর দিন দীপিকাকে বাঁচতে হয়েছে। দীপিকা চরিত্রটির সঙ্গে এতটাই একাত্ম হয়ে পড়েন যে, শুটের শেষ দিনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
নিজের খোলস ছেড়ে অন্য এক জনের রক্তমাংসে ঢুকে পড়াও কি খুব সহজ? কিন্তু একের পর এক অভিনেতার সেই রূপান্তরই পর্দায় হিট। ধুলোমাটির জীবনই এখন ছুঁয়ে যাচ্ছে জনসাধারণকে। স্টারডম নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy