ভাস্বরের মতে, মা এক জন নারীও। তাই মাতৃদিবস এক অর্থে নারীদিবসও বটে। সেই বিশেষ দিনে ভাস্বরের কলমে তাই উঠে এল সমাজে নারীদের অবস্থানের কথাই। এই ২০২২-এও যে সমাজ তাঁর ভাবনা পাল্টায়নি। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোনেও অভিনেতা তুলে ধরলেন সেই একই আক্ষেপ।
মায়েদের জীবনে বদল আসুক, চান ভাস্বর।
মাতৃদিবসে আর পাঁচ জনের মতোই পোস্ট দিয়েছেন ফেসবুকে। কিন্তু চেনা ছকের বাইরে হেঁটেছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, মা এক জন নারীও। তাই মাতৃদিবস এক অর্থে নারীদিবসও বটে। সেই বিশেষ দিনে ভাস্বরের কলমে তাই উঠে এল সমাজে নারীদের অবস্থানের কথাই। এই ২০২২-এও যে সমাজ তাঁর ভাবনা পাল্টায়নি। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোনেও অভিনেতা তুলে ধরলেন সেই একই আক্ষেপ।
ফেসবুকে মাতৃদিবসের লেখায় অভিনেতা তুলে ধরেছেন তাঁর মায়ের অভিজ্ঞতার কথা, মেয়ে হিসেবে সমাজের কাছ তাঁর প্রাপ্তিগুলোর কথা। লিখেছেন, ‘আমার বাবার সাথে বিয়ে হওয়ার আগে,তখন যেমন নিয়ম ছিল,মা কে অনেক ছেলের বাড়ির লোক দেখতে এসেছিল।কেউ পণ চাইতো তো কেউ মেয়ে বড্ড রোগা বলে চলে যেত। কেউ কেউ,মানে মহিলারাই মায়ের হাতের চামড়া ঘষে দেখত যে মা কোনো প্রসাধন এর সাহায্যে সুন্দর সুশ্রী সেজে বসে আছে কিনা। মা কে এসব অপমান দিনের পর দিন সহ্য করতে হয়েছে।’
অথচ ভাস্বরের মা ভাল রান্না জানতেন, ভাল গান গাইতেন, নিয়মানুবর্তিতা বা সময় জ্ঞানও ছিল খুব বেশি। সে সব তখন কেউ গুরুত্বই দেয়নি বলে লেখায় জানিয়েছেন তিনি।
পরে ফোনে আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা বলেন, ‘‘বড় হয়ে মায়ের মুখে এ সব গল্প শুনেছি। নিজের চোখেও দেখেছি, কিছু আত্মীয়স্বজন গায়ের রং নিয়ে মা-কে কী ভাবে কটাক্ষ করতেন। রাগ হত খুব, এ সবের জবাব দিতে চাইতাম। মা-ই থামিয়ে দিত। বলত, আমিই গায়ে মাখছি না। তুই রাগ করে কী করবি। আসলে মায়েদের প্রজন্মটা তো এ সব সহ্য করেই জীবন কাটিয়ে দিয়েছে।’’
ভাস্বরের মা এমন সব অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন সেই সত্তরের দশকে। পরের কয়েক দশকে নারীদের প্রতি কতটা পাল্টেছে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি? এখন কি প্রাপ্য সম্মানটুকু জোটে মেয়েদের? উত্তর মিলল অভিনেতার কাছেই। জানালেন প্রাক্তন স্ত্রী নবমিতাকেও বিয়ের আগে এ ধরনের নানা কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। ছেলেদের সঙ্গে কোথাও বেরোলে তা নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে অনেকের কাছেই। ভাস্বর আরও বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই আলাপ হল বছর কুড়ির এক মেয়ের সঙ্গে। শ্বশুরবাড়ির আপত্তি। তাই সে লুকিয়ে পড়াশোনা করে জোরে টিভি চালিয়ে। এমনটা কি ওর প্রাপ্য ছিল?’’ নিজের পোস্টে এই মেয়েটির কথাও লিখেছেন অভিনেতা।
মাতৃদিবসে তাই ভাস্বরের একটাই আকাঙ্ক্ষা— ‘‘মাতৃদিবস বা নারীদিবসে নেটমাধ্যমে এত লেখালেখি, চার পাশে এত উদ্যাপন। সমাজে মেয়েদের অবস্থান তবু আজও সেই তিমিরেই। যা লেখা হচ্ছে, মেয়েদের ভাল রাখতে, তা কাজেও করে দেখান মানুষ। এটুকুই চাওয়ার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy