ভগবান শিবের আরাধনার রাত্রি, যা ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে পালন করা হয়। পুরাণমতে এই তিথিতে ভগবান শিবের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পার্বতীর। ছোট পর্দায় শিবরাত্রি বরাবরই জনপ্রিয়। রণজয় বিষ্ণুকে শিবের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল এক মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানে। যদিও শিব-পার্বতীর বিয়ের রাত্রের দৃশ্যে শিবরূপী রণজয়ের নাচ নিয়ে সেই সময় নানা বিতর্ক হয়েছিল। নেটপাড়ার একটা অংশ দাগিয়ে দেন ‘নেশা করে নেচেছেন’। বিতর্কে কান দিতে নারাজ রণজয়। পুরাণে যেমন ভাবে ব্যাখ্যা করা আছে, শিব-পাবর্তীর বিয়ের রাতের দৃশ্যে অভিনেতা হিসেবে সেই নির্দেশ মেনেই নেচেছেন। তবে যাঁরা এ সব নিয়ে সমালোচনা করেন তাঁরা যে পাপ করছেন, তা সাফ জানালেন অভিনেতা।
আরও পড়ুন:
পর্দায় মোটে একবার শিবের রূপ নিয়েছেন। কিন্তু শিবের প্রতি আস্থা তাঁর ছোট থেকেই। জীবনের এমন সব অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছিলেন, ভেবেছিলেন এখানেই সব শেষ, আর বেঁচে ফিরতে পারবেন না। তার পরই যেন এমন এক ঘটনা ঘটল রণজয় চিৎকার করে উঠলেন ‘হর হর মহাদেব’। ঘটনাটা ২০২৩ সালের, তখন ‘ঝনক’ ধারাবাহিকের আউটডোর শুটিং। ধারাবাহিকের সমস্ত কলাকুশলী তখন কাশ্মীরে। সেখানেই শুটিং শেষে ট্রেক করতে যান রণজয়। প্রথম দিনই পড়েন বৃষ্টির মুখে। পথ ভুলে এমন সব জায়গায় পৌঁছে যান, যেখানে সাধারণত তেমন ভাবে মানুষের পা পড়ে না। যদিও তিন দিন দুর্গম পাহাড়ি পথে সফর সেরে ফেরার পর রাস্তায় পায়ের তলার পাথর সরতে শুরু করে। সেই মুহূর্তে সংজ্ঞা হারান তিনি। তাঁকে বাঁচান আরিফ নামের এক যুবক। রণজয়ের কথায়, ‘‘আমার কাছে শিব মানে একটি শক্তি। আমি নিজের জীবনের এই অভিজ্ঞতার পর সে কথা আরও বেশি বিশ্বাস করি। আমার ভ্রমণসঙ্গী ‘আল্লাহ হু আকবর’ বলছেন। আমি চিৎকার করছি ‘হর হর মহাদেব’ বলে। একটা সময়ের পরে দুটো স্বর এক মনে হচ্ছে। এটাই ঈশ্বরের রূপ, কোথাও গিয়ে যেন একাকার হয়ে যায়।’’
তবে শিব তো স্বল্পেই সন্তুষ্ট, এক নারীতেই অবিচল, বৈষয়িক বিষয়ে মন ছিল না কখনওই। কিন্তু বর্তমান সমাজে এমন ছেলেদের ঠিক কতটা মন কাড়ে মেয়েদের? রণজয়ের কথায়, ‘‘আসলে শিব ভীষণ প্রেমিক মানুষ। স্ত্রীকে অসম্ভব ভালবাসেন এবং স্বার্থ ছাড়া ভালবাসতে পারেন। শিব ঘরোয়া, সংসারী। তিনি কিন্তু দেবী পার্বতীর সঙ্গেই আছেন। সত্যিকারের ভালবাসা খুব কম মানুষই বোঝেন। যাঁরা বোঝেন না তাঁরা বিকল্প খুঁজে বেড়ান।’’
শিবের অপর নাম ভোলেবাবা। রণজয় ব্যক্তিগত ভাবে কি এক নারীতেই অবিচল থাকার মতো প্রেমিক? উত্তর এসেছে, ‘হ্যাঁ’। অভিনেতার কথায়, “আমি কখনও কাউকে ঠকাইনি।” নিজেকে সরল সোজা মানুষের তকমা যেমন দিয়েছেন, তেমনই অভিনেতা বলেন, ‘‘আমি শিবের থেকে ইতিবাচক শক্তি পাই, যা ধ্বংসাত্মক নয়। যদি ধ্বংসের পথে হাঁটি, অনেক কিছু শেষ হয়ে যাবে সে দিন। তবে মানুষটা আমি সহজ। সারল্য এখনও রয়েছে আমার হৃদয়ে। আসলে জীবনে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে তার দায় আমারও নয়, আমার প্রাক্তনেরও নয়। তবে এক নারীতেই বরাবর অবিচল ছিলাম। দোষটা সময়ের।’’