শিবের পুজো করলে নাকি শিবের মতো বর পাওয়া যায়! এই প্রচলিত কথা শুনে বড় হয়েছে অনেকেই। মনের মতো স্বামী পাওয়ার জন্যই নাকি শিবরাত্রিতে শিবের মাথায় জল ঢালার চল। শিব কখনও পত্নীনিষ্ঠ, আত্মভোলা আবার প্রয়োজনে তিনি তাণ্ডব শুরু করেন। এমন শিবকেই জীবনসঙ্গী হিসাবে পেতে চান মহিলারা। সে কারণেই শিবরাত্রিতে শিবলিঙ্গে জল ঢালেন? এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে নিজেদের মতামত ভাগ করে নিলেন দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায় ও মধুমিতা সরকার।
দুই অভিনেত্রীই শিবের ভক্ত। শুধু শিবরাত্রি নয়, সারা বছর তাঁদের মহাদেবের আরাধনা করতে দেখা যায়। শিবরাত্রিতেও মহাদেবের পুজোয় মন দুই নায়িকার। কয়েক মাস আগেই মধুমিতার জীবনে এসেছে নতুন প্রেম। প্রেমিক দেবমাল্য চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রায়ই সোহাগী ছবি ভাগ করে নিচ্ছেন অভিনেত্রী। সেই প্রসঙ্গে মধুমিতা বলেন, “শিবের মতো বর পাওয়ার জন্যই শিবরাত্রিতে উপোস করছি, এমন ভাবিনি। কিন্তু ভগবান নিজে থেকেই আমাকে শিবের মতো বর দিয়েছে। সেটা আলাদা বিষয়। বরাবরই শিবের প্রতি ভক্তি থেকেই শিবরাত্রি পালন করি।” হাসতে হাসতে মধুমিতা আরও বলেন, “শিবঠাকুর এমন ভাবেন না, ‘আমাকে পুজো না করলে, আমার মতো বর পাবে না।’ শিবঠাকুরের প্রতি ভালবাসা ও ভক্তি একেবারেই ব্যক্তিগত অনুভূতি। কোনও কিছু চাওয়ার জন্য আমি পুজো করি না।” অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে প্রত্যেকের জন্যই তাঁদের মতো করে এক জন ‘শিব’ গড়া করা রয়েছে। তিনি নিজেও তাঁর ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী একজন ‘শিব’ খুঁজে পেয়েছেন।
শিবরাত্রি উপলক্ষে ২৪ ঘণ্টার উপোস রেখেছেন দেবচন্দ্রিমা। মঙ্গলবার রাত ৯টায় শেষ বার কিছু খেয়েছেন। বুধবার রাতে পুজোশেষে প্রসাদগ্রহণ, আবার বৃহস্পতিবার সকালে খাবার খাবেন। শিবের মতো বরের প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, “ছোটবেলা থেকেই আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, শিবের মতো বর পাওয়ার জন্য শিবরাত্রি পালন করতে হয়। কিন্তু এখন যুগের পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের চিন্তাভাবনায় বদল এসেছে। কারও বিশ্বাস আমি ভাঙতেও চাই না। তবে আমি শিবের মতো বর চাই বলে শিবরাত্রি করি, এমন কোনও উদ্দেশ্য নেই আমার। আমি এমনই শিবের খুব ভক্ত।” দেবচন্দ্রিমা জানালেন, প্রতি সোমবারই তিনি মহাদেবের পুজো করেন। শুধুই শিবরাত্রির জন্য বিশেষ ভক্তি নয়। তিনি চেষ্টা করেন, প্রতি বছরে তিনটি তীর্থস্থানে ভ্রমণ করার। তাই শিবের মতো স্বামীর জন্য নয়, বরং তিনি বলেন, “শিবের কাছ থেকে বর (আশীর্বাদ) চাই, যাতে ভাল কাজ করতে পারি।”
আরও পড়ুন:
তবে, এ কথাও দেবচন্দ্রিমা স্বীকার করেছেন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখে শিবের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়ার ইচ্ছে তাঁর রয়েছে। অভিনেত্রীর কথায়, “চরিত্রের দিক থেকে দেখতে গেলে সত্যিই শিবের মতো বর চাইব। এক নারীতে তাঁর মন। অল্পেতেই তিনি সন্তুষ্ট। কখনও বিয়ে করলে ত্রিযুগীনারায়ণ মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করব। মনে করা হয় এখানেই শিব-পার্বতীরও বিয়ে হয়েছিল। এটা আমার একটা স্বপ্ন।”
শিবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি নিজেদের স্বামীর মধ্যেও মহিলারা দেখতে চান। নির্দিষ্ট কিছু স্বভাবের জন্যই শিবকে পছন্দ মধুমিতারও। তাই অভিনেত্রী বলেছেন, “শিব যেমন তাঁর স্ত্রীকে ভালবাসতে জানেন, তেমনই স্ত্রীকে রক্ষাও করতে পারেন।” শিবরাত্রি হিসেবে উপোস রাখলেও ভিড় এড়াতে বাড়িতেই পুজো করার পরিকল্পনা মধুমিতার। তবে একেবারে নির্জলা উপোস রাখেননি অভিনেত্রী। তরল খাবার খাচ্ছেন তিনি।
দেবচন্দ্রিমাও জানান, সাধারণত নির্জলা উপোস তিনি রাখতে পারেন না। শরীর সায় দেয় না। কিন্তু শিবরাত্রিতে তিনি ২৪ ঘণ্টার বেশিই উপোস থাকেন।