অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভা ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। টলিপাড়ার অন্দরেও তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। কারা কোন দলে যোগ দিতে পারেন বা কারা টিকিট পাবেন, তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। কিন্তু রাজনীতি থেকে এখনও দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
এই মুহূর্তে শাসকদলের তিন তারকা সাংসদ দেব, মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহানকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। আবার, ঘাটাল কেন্দ্রে দেবের বিরুদ্ধে ভোটে লড়বেন বিজেপির তারকা সাংসদ হিরণ। পরমব্রত বিষয়গুলিকে কী ভাবে দেখেন? অভিনেতা বললেন, ‘‘আমার কোনও আগ্রহ নেই। কারণ, দেশের রাজনীতিতে এখন বিরক্তি এবং রাগ উদ্রেককারী পরিস্থিতি। যেখানে এই মুহূর্তে ডান, বাম বা মধ্য— কেউই কোনও ভাবনা বা চিন্তা বা কোনও আদর্শ থেকে আর রাজনীতি করেন না।’’ পরমব্রতর মতে, ঘন ঘন দলবদলের মাধ্যমে মানুষ সহজেই বদলেও যাচ্ছেন। বললেন, ‘‘ছোটবেলায় আমরাও মানুষকে দলবদল করতে দেখেছি। তার মধ্যে একটা সময়জ্ঞান বা সভ্যতার চিহ্ন থাকত। কিন্তু এখন বিষয়টা ইনস্ট্যান্ট নুডলস্-এর মতো হয়ে গিয়েছে! ইনস্ট্যান্ট দলবদল। দেশের রাজনীতি একটা বড় সার্কাস। মঞ্চে সার্কাস দেখলে তা-ও মজা পাই, এটা দেখে বিরক্তি তৈরি হয়।’’
রাজনীতি নিয়ে যুব সমাজের প্রতি পরামর্শ রয়েছে পরমব্রতর। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, দেশের রাজনীতিকরা চান যে তরুণ প্রজন্মের যেন তাঁদের দেখে একটা বিরক্তি তৈরি হয়। যাতে তারা আরও বেশি করে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যায়। এই বিরক্তি ও রাগটা মনে হয় তাঁদের যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের যুব সমাজের মনে বাঁচিয়ে রাখা উচিত।’’
২০২১ সালে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেন-সহ আরও কয়েক জনের সঙ্গে মিলে ‘নিজেদের মতে নিজেদের গান’ তৈরি করেছিলেন পরমব্রত। তিনি কি অভিনব প্রতিবাদে বিশ্বাসী? পরমব্রতের কথায়, ‘‘ওটা একটা বিশেষ ভাবনার ফসল। আমি বলতে চাইছি, সচেতন থাকতে হবে। তার মানে এই নয় যে, সরাসরি কোনও দলে যোগদান করতেই হবে।’’ পরমব্রতের নিজস্ব রাজনৈতিক সচেতনতা রয়েছে। তিনি বললেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি না বলে যে রাজনীতি বুঝি না, এটা বললে চলবে না। তা হলে সেই সুযোগে এঁরা আমাদের এক্সপ্লয়েট করবেন।’’
ইন্ডাস্ট্রিতে পরমব্রতের একাধিক সতীর্থ অভিনয়ের পাশাপাশি সক্রিয় রাজনীতি করেন। তাঁদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে কি কোনও রকম সমস্যা তৈরি হয়? পরমব্রত বললেন, ‘‘অভিনয় তো আমাদের রুজিরুটি। সেখানে কোনও বাছবিছার করা উচিত নয় বলেই আমার বিশ্বাস। কেউ দক্ষিণপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, আমি হয়তো করি না।’’ কিন্তু তিনি যদি বন্ধু হন? পরমব্রতের যুক্তি, ‘‘‘বন্ধু’ শব্দটার অর্থ অনেক বড়। কোনও সময়ে তিনি অতি দক্ষিণপন্থী রাজনীতি করলে, আমার কতটা বন্ধু থাকবেন, সেটা বলতে পারছি না। কিন্তু সহকর্মী হিসেবে কাজ করতে কোনও সমস্যা হবে না।’’ দল সমস্যা নয়, পরমব্রতর মতে, অভিনেতা হিসাবে নিজেদের মধ্যে সৌজন্য আদানপ্রদানে যেন কোনও সমস্যা না থাকে। পেশাদার হিসেবে ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরা সেটুকু বজায় রাখলেই খুশি তিনি।
প্রত্যেক বার ভোটের আগে তারকাদের কাছে বিভিন্ন দলের তরফে টিকিটের প্রস্তাব আসে। এখনও পর্যন্ত পরমব্রত কি কোনও প্রস্তাব পেয়েছেন? অভিনেতা হেসে বললেন, ‘‘এ বার এখনও আসেনি। আগের বার এসেছিল। আমি আমার সিদ্ধান্ত এতটাই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম, তাই হয়তো আর আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy