Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

হায়দরাবাদের সুন্দরীরা

নিজামের শহরের দুই কন্যা। একজন টেনিস তারকা। অন্যজন সেরা ব্যাডমিন্টনে। তবে সানিয়া মির্জা ও সাইনা নেহওয়াল-এর নাকি তেমন বনিবনা নেই। সত্যিই কি তাই? খোঁজ নিলেন সায়ন আচার্য এক শহরের দুই সুন্দরী। এক জনের ঠিকানা হায়দরাবাদের জুবিলি হিলস, অন্য জনের গাচিবাওলি। দূরত্ব মেরেকেটে দশ কিলোমিটার। এক জন ঊনতিরিশ। অন্য জন ছাব্বিশ। দু’জনেই ভারতের স্পোর্টিং আইকন, তবুও সানিয়া মির্জা আর সাইনা নেহওয়ালের নাকি যত না মিল ততটাই অমিল।

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

এক শহরের দুই সুন্দরী।

এক জনের ঠিকানা হায়দরাবাদের জুবিলি হিলস, অন্য জনের গাচিবাওলি। দূরত্ব মেরেকেটে দশ কিলোমিটার।

এক জন ঊনতিরিশ। অন্য জন ছাব্বিশ। দু’জনেই ভারতের স্পোর্টিং আইকন, তবুও সানিয়া মির্জা আর সাইনা নেহওয়ালের নাকি যত না মিল ততটাই অমিল।

এক শহরে থাকলেও তাঁরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছেন হাতে গোনা কয়েকবার। তাও কোনও প্রোমোশনাল ইভেন্টে। হায়দরাবাদ শহরে তাঁদের বন্ধুরা অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন না আদৌ একে অপরকে কখনও ফোন করেছেন কি না! ডিনার ডেট কিংবা হোয়াটস অ্যাপ? নৈব নৈব চ।

যদিও ক্রীড়া মহলের পরিচিত গুঞ্জন, নিজেদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলে দুই তরুণীর। অথচ তাঁদের মধ্যে প্রচুর মিল, এবং দূরত্বটা বজায় রাখা সে কারণেই।

সানিয়া আজ উইম্বলডন তো কাল প্যারিস। সাইনারও প্যাকড শিডিউল। কখনও সুপার সিরিজ তো কখনও জাপান ওপেন। বিশ্বের যেখানেই থাকুন, সানিয়ার ছায়াসঙ্গী মা নাসিমা। সাইনার তেমনই মা উষারানি।

টেনিস কোর্টের বাইরে সানিয়ার লেটেস্ট ফ্যাশন স্টাইল যদি আলোচনার বিষয় হয়, সাইনার গ্ল্যামার দুনিয়ায় উত্তরণ নিয়েও ট্যুইটারে ঝ়ড় নেহাত কম ওঠে না।

আনন্দplus-এর প্রশ্নের উত্তরে সানিয়ার সঙ্গে তুলনা এড়িয়ে যান সাইনা। ‘‘ও তো খ্যাতনামা টেনিস প্লেয়ার,’’ গোছের উত্তর দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান ব্যাডমিন্টন সুন্দরী। আর সানিয়া? উইম্বলডনে ব্যস্ত তিনিও যে তাঁর শহুরে প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে মুখ খুলতে চান না। সে কারণেই বোধহয় তাঁর প্রাক্তন কোচ ও পারিবারিক বন্ধু প্রবীণ ভার্গবও সাইনা নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। প্রশ্ন করতেই উত্তরটা দিয়ে দেন এককথায়: ‘‘ওদের মধ্যে কথাবার্তা হয় না।’’

আসলে যতই তাঁরা অস্বীকার করুন তাঁদের পরিচিতরা আড়ালে মানেন যে সাইনা আর সানিয়ার আসলে যত না অমিল তত মিল।

দুই ‘স্টেফি’র গ্রাফ

বরাবর জার্মান সুন্দরী স্টেফি গ্রাফের গুণমুগ্ধ মির্জা পরিবার। কোর্টে যেমন সপ্রতিভ, কোর্টের বাইরেও
তেমন তাঁর গ্ল্যামারের ছোঁয়া—সানিয়ার বাবা ইমরান এবং মা
নাসিমা তাঁদের বড় মেয়ের নাম রেখেছিলেন স্টেফি। তখনও সে স্কুল পড়ুয়া, ডেকান ক্লাবে একটু-আধটু র‌্যাকেট ধরা শিখেছে এবং
সুন্দরী হিসেবে পরিচিত। বোধহয় সে কারণে আজও সানিয়ার ল্যাপটপের ওয়াল পেপার বা ঘরের দেওয়ালে স্টেফি গ্রাফের ছবিগুলো লাগানো আছে।

হতে পারে তাঁদের মেয়ে টেনিস প্লেয়ার নন। কিন্তু হরবীর এবং উষারানি নেহওয়ালেরও পছন্দের প্লেয়ার জার্মান সুন্দরী এবং সে কারণে বাবা-মায়ের কাছে সাইনার আদুরে নামও স্টেফি।

তাঁরা এক শহরে বড় হওয়া দুই তরুণী যাঁরা শুধুই স্পোর্টস স্টার নন, ডাকসাইটে সুন্দরীও বটে।

কোর্টের বাইরেও তাঁদের গ্ল্যামার গ্রাফটা উর্ধ্বমুখী। গত কয়েক বছরে সানিয়া যেমন পেরিয়েছেন একের পর এক গণ্ডি, তাঁর নেট ওয়ার্থ ভ্যালু আট মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

পিছিয়ে নেই সাইনাও। যে ভাবে তিনি প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়েছেন কোর্টে, সেভাবেই বহু বহুজাতিক সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর
এখন নেহওয়াল পরিবারের ‘স্টেফি’। ‘‘এত ব্র্যান্ড যে আমার ওপর ভরসা রেখেছে সেটা সত্যি বড় ব্যাপার,’’ বেঙ্গালুরু থেকে আনন্দplusকে সোজাসাপ্টা জবাব সাইনার। এবং সে জন্যই খেলার বাইরের জগৎটাকেও গ্ল্যামারাস করেছেন ব্যা়ডমিন্টন আইকন। ‘‘ফ্যাশন ডিজাইনাররা যে দিন-দিন আমার কথা ভাবছেন সেটা ভেবে ভাল লাগে। বাকিটা ওপরওয়ালার হাতে,’’ বলছেন সাইনা।

তাঁর ম্যানেজিং সংস্থা আইওএস স্পোর্টসের কর্ণধার নীরব তোমর মনে করেন অ-ক্রিকেটীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের জন্য এটা একটা রেকর্ড।

‘‘এক সময় এক নম্বরে ছিলেন সানিয়া। তবে এখন বাজারটা সাইনার। ডজন খানেক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ওঁর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ,’’ বলছিলেন তোমর।

যদিও সানিয়ার ঘনিষ্ঠ মহলের মত ভিন্ন। তাঁরা মনে করেন এখনও এনর্ডোসমেন্ট আর জনপ্রিয়তার নিরিখে এগিয়ে টেনিস তারকাই। যদিও তিনি আটটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত, তাঁর ব্র্যান্ড ম্যানেজিং কোম্পানি কুয়ান-এর কর্ণধার ইন্দ্রনীল দাস ব্লাহ-র দাবি, ‘নিশে’ কোম্পানিদের এখনও প্রথম পছন্দ টেনিস সুন্দরীই। ‘‘সানিয়া এখনও দেশের এক নম্বর মহিলা তারকা, এবং সেটা একটা বড় ব্যাপার। প্রচুর কোম্পানিই ওর সঙ্গে চুক্তি করতে চায়,’’ বলছিলেন তিনি।

তাঁর বন্ধুদেরও অবশ্য একই মত। ‘‘হায়দরাবাদে সানিয়া যে কী পরিমাণ জনপ্রিয়, সেটা টের পাওয়া যায় ও শহরে এলে। যে ক’টা দিন থাকে এখানে সবাই ওকেই দেখতে চায়,’’ বলছিলেন বন্ধু ডি আর সি কিরণ। আর সাইনা? ‘‘ও দিকটায় এখনও অতটা ভিড় হয় না,’’ কিঞ্চিৎ রসিকতার সুরে বললেন ঘরোয়া স্তরে সানিয়ার এক সময়কার ডাবলস পার্টনার।

এক শহরের দুই সুন্দরীর এটাও এক সাফল্য। খেলার বাইরের দুনিয়াতেও প্রায়শই মিলে যায় তাঁদের সার্ভ আর ভলি। আর ঠান্ডা লড়াই? সে চলুক না!

ফ্লাইং কিস

সেই দৃশ্যগুলো এখনও ভোলেননি ভার্গব। ডেকান ক্লাবের কোর্টে জুনিয়র লিগে খেলছেন সানিয়া। বয়স বারো কি তেরো, বড়জোর চোদ্দো। স্কুলের বাইরে সুন্দরী হিসেবে নাম ছড়িয়ে গেছে তত দিনে। প্রতিপক্ষকে প্রায় গুঁড়িয়ে দিয়ে গ্যালারির দিকে তাকাতেই সানিয়ার দিকে উড়ে এল কিছু ফ্লাইং কিস। সঙ্গে এক ঝাঁক কলেজ পড়ুয়ার সম্মিলিত চিৎকার—‘‘উই লাভ ইউ সানিয়া।’’

অন্য কেউ হলে হয়তো নিজেকে গুটিয়ে নিতেন। কিন্তু সবাইকে প্রায় চমকে দিয়ে সানিয়া তাদের দিকে ছুড়ে দিলেন ফ্লাইং কিস। এল উত্তরও: ‘‘তোমরা এসেছ আমার খেলা দেখতে, তাই তোমাদেরও আমি ভালবাসি...’’

‘‘সে দিন বুঝেছিলাম এই মেয়ে বহু দূর যাবে। ওই বয়সে যাঁর এত কনফিডেন্স তাঁকে রোখে কে?’’ বলছিলেন ভার্গব।

প্রবীণ কোচ মনে করেন আজও সানিয়া নিজের ব্যাপারে দারুণ ‘বোল্ড’। ‘‘আজও জনপ্রিয়তা সমানভাবে সামলাতে পারে ও। বাড়িতে প্রচুর ফ্যান দেখা করতে আসে। হায়দরাবাদে থাকলে তাদের সঙ্গে দেখাও করে সানিয়া’’।

তুলনায় সাইনা বরাবর চাপা স্বভাবের। তাঁকে যারা কোর্টে কিংবা পুল্লেলা গোপীচন্দ অ্যাকাডেমিতে দেখেছেন, তাঁরা একবাক্যে স্বীকার করেন, যে ভাবে ভাবলেশহীন মুখ নিয়ে ঘুরে বেড়ান সাইনা তা দেখে আদৌ বোঝা যায় না তিনি জিতেছেন না হেরেছেন। সর্বদা কোর্টের আরেক প্রান্তে বসে থাকেন মা উষারানি, কড়া নজর রাখেন মেয়ের ওপর।

যদিও আজকাল কোর্টের মধ্যে মাঝেমধ্যে উচ্ছ্বাসটা চোখে পড়ে, সাইনা তবুও নিজের গণ্ডির মধ্যে থাকতে পছন্দ করেন। ‘‘আমার জীবনের পুরোটা মা-বাবাকে ঘিরে। তার পরেই থাকবেন কোচ বিমল কুমার। ওটাই আমার পৃথিবী,’’ বলছিলেন সুপারস্টার।

দুই তারকাকে ছোটবেলা থেকে দেখা মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। তাঁরাও মনে করেন সানিয়া বরাবরই ফ্ল্যামবয়েন্ট, যিনি কোনও কিছুতেই পিছপা হন না—তা সে নিজের ফর্ম হোক কিংবা বয়ফ্রেন্ড। ‘‘সাইনা হল অনেকটা বাধ্য ছাত্রীর মতো, যে স্কুল আর বাড়ি ছাড়া কিছুই ভাবতে পারে না। বয়ফ্রেন্ড তো দূরঅস্ত,’’ বলছিলেন দুই পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক ভ্যালেনটিন উইলসন।

হ্যাপি পেরেন্টস ডে...

হরিয়ানার হিসার থেকে যখন হরবীর হায়দরাবাদে বদলি হয়ে আসেন, নিজেদের গাড়ি বলতে ছিল স্কুটার। তাতেই সওয়ার হয়ে সাইনা যেতেন প্র্যাকটিস কিংবা আউটিং-য়ে।

আর আজ গাচিবাওলির বাড়ির সামনে তিন-তিনখানা গাড়ি। ‘‘আমি এখন এগুলোর পাহারাদার,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন হরবীর।

জুবিলি হিলসের বাড়িটায় অবশ্য কোনও দিন স্কুটার ছিল না। স্কুল হোক বা কোচিং সানিয়ার বাহন ছিল মারুতি গাড়ি। সচ্ছল পরিবারে বড় হয়েও সানিয়া চেষ্টা করে গেছেন হাওয়ায় না ভাসতে। ‘‘ওর মতো মার্জিত ব্যবহার খুব কম সেলিব্রিটির আছে,’’ বলছিলেন ভার্গব। এ জন্য অবশ্য তিনি পুরো কৃতিত্বটা দিচ্ছেন ইমরান ও নাসিমাকে। তাই বোধহয় মা-বাবাকে জিজ্ঞেস না করে আজ অবধি কোনও সিদ্ধান্ত নেননি দুই তরুণী।

বিরিয়ানি আর জিম

হায়দরাবাদে থাকুন বা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে, সপ্তাহে অন্তত এক দিন বিরিয়ানি চাই-ই-চাই সানিয়ার। হায়দরাবাদে থাকলে নিজের অ্যাকাডেমির কাজে ব্যস্ত থাকেন টেনিস আইকন। তা সত্ত্বেও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর সলমন খানের সিনেমা মিস করেন না কখনও। ‘‘ও হল পুরোপুরি হায়দরাবাদি, যাঁর কাছে জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ,’’ বলছিলেন বন্ধু কিরণ। ফ্রেঞ্চ ওপেন খেলতে যাওয়ার আগে শেষ বার যখন শহরে এসেছিলেন তখন সঙ্গে ছিলেন স্বামী ও পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। ‘‘নিয়মিত পার্টি হত, আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া...’’ বলছিলেন ছোটবেলার বন্ধু।

সেলিব্রিটি হওয়ার পরেও নাকি ফিটনেস নিয়ে অতটা মাথা ঘামাতেন না সানিয়া। ছিল না নির্দিষ্ট কোনও ডায়েট চার্ট। ‘‘জীবন উপভোগ করো, সঙ্গে খেলো, এটাই সানিয়ার মন্ত্র,’’ বলছিলেন ভার্গব। এত দিনে হায়দরাবাদ ভালভাবেই জেনে গেছে, শহরে থাকলে কোনও না কোনও সময় সানিয়াকে দেখা যাবে।

সাইনা অবশ্য উল্টো পথে হাঁটেন। কারণ অবসর নামের শব্দটি তাঁর ডিকশনারিতে নেই। সামনে কোনও টুর্নামেন্ট থাকুক বা না থাকুক, সাইনার পৃথিবীটা ব্যা়ডমিন্টনময়। ‘‘একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আমার কোনও অবসর নেই, কোর্টে না থাকলেও আমি শুধু খেলা নিয়ে থাকি,’’ আনন্দplus কে বলছিলেন সাইনা স্বয়ং। যদিও বাবা হরবীরের দাবি, শহরে এলে মেয়ে জিলিপি আর চাট খেতে দারুণ পছন্দ করে। ‘‘একটুও তর সয় না। আনতে দেরি হলেই রাগ হয়ে যায় মেয়ের। তবে এ সব ও রোজ খায় না। এক দিন খেলে পর দিন জিমে ছুটবে। এটাই ওর রুটিন,’’ বলছিলেন সাইনার বাবা। তিনিও জানেন তাঁর মেয়ের কাছে ফিটনেস আর ব্যা়ডমিন্টন শেষ কথা। সিনেমা বা বিরিয়ানি?
ওসব আবার কেন!

মিলে সুর

যদি নেশা আর পেশা এক হয়ে না যেত তা হলে হয়তো এক জন ডাক্তার হতেন। অন্য জন ছুটে যেতেন গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে। কিন্তু সাইনা বা সানিয়া দু’জনের প্রাথমিক লক্ষ্যই রিও অলিম্পিক্সে পোডিয়াম ফিনিশ। সে জন্য সানিয়া যেমন হায়দরাবাদের সুখের পরিবেশ ছে়ড়ে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে, সাইনাও সব ছে়ড়েছুড়ে বেঙ্গালুরুতে বিমল কুমারের কাছে ট্রেনিং-এ।

এবং বোধহয় সে জন্যই অমিলের মাঝেও টুকরো টুকরো মিল দুই সুন্দরীর। শুধু শহর নয়, অজান্তে মিলে যায় টেনিস ও ব্যাডমিন্টনের ভাবনাচিন্তা। সাধে কি আর ঘনিষ্ঠরা ওঁদের ‘সমনামী’ বলেন...

অন্য বিষয়গুলি:

Saina Sania hyderabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy