(বাঁ দিকে) তমা মির্জ়া। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে মাঝেমাঝেই জড়িয়ে যায় রাজনীতি। বিশ্ব ইতিহাস সাক্ষী, রুপোলি পর্দার তারকারা নানা সময়ে যুক্ত হয়েছেন রাজনীতির সঙ্গে। হয়ে উঠেছেন পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ। সেই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটল বাংলাদেশে, আরও এক বার। সে দেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে যোগ দিলেন পরিচালক-প্রযোজক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। তার পর থেকেই আশার সঞ্চার হয়েছে, বাংলা ছবির জন্য নতুন কোনও সুসংবাদ আসতে পারে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে গিয়েছে বড়সড় পালাবদল। বেশ কয়েক মাস অস্থিরতার পর গত ৮ অগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় বাংলাদেশে। এই সরকারেই যোগ দিলেন ফারুকী। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে প্রথম থেকেই সমর্থন ছিল তাঁর। আড়াই দশকের বেশি সময় ছবি ও নাটক পরিচালনা করছেন ফারুকী। তিনি সরকারের উপদেষ্টা পদে যোগ দেওয়ায় আশার আলো দেখছেন ও পার বাংলার চলচ্চিত্র জগতের মানুষেরা।
সাধারণত বিনোদন দুনিয়া থেকে কেউ রাজনীতিতে যোগ দিলে সকলেই প্রত্যাশা করেন রাজনৈতিক দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি সংস্কৃতি ও বিনোদন দুনিয়ার ভাল-মন্দও দেখবেন তিনি। ফারুকীর কাছেও কি সেই প্রত্যাশাই রাখছেন তাঁর দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা? বিশেষত বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ খানিকটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ পার বাংলা, ও পার বাংলা মিলিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ইতিহাসও সুদীর্ঘ। কিন্তু ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেই প্রবাহও খানিকটা থমকেছে। সে ক্ষেত্রে ফারুকী দায়িত্ব নেওয়ায় কি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে? সব সমস্যা মিটিয়ে কি এ পার বাংলার সঙ্গে জোট বেঁধে প্রচুর কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে ফের? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ও পার বাংলার ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির নায়িকা তমা মির্জ়ার সঙ্গে। শুটিংয়ে যাওয়ার পথে মতামত জানান তমা।
অভিনেত্রী প্রথমেই শুভেচ্ছা জানান ফারুকীকে। জীবনের নতুন অধ্যায়েও যাতে প্রযোজক-পরিচালক একই রকম সফল হন সেই কামনা করেন। তাঁর কথায়, “আমি রাজনীতি বুঝি না। বিষয়টি থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করি। তার পরেও মনে হয়, বিনোদন দুনিয়ার কোনও ব্যক্তি যদি বিষয়টি বোঝেন, তা হলে তিনি যোগ দিতেই পারেন। সেই জায়গা থেকে ফারুকী ভাই উপযুক্ত ব্যক্তি।”
তমা আরও জানান, তাঁদের দেশের নতুন উপদেষ্টা রাজনীতির পাশাপাশি ছবির জগৎকেও সমান ভালবাসেন। এ রকম কোনও মানুষ শাসনকার্যে যুক্ত হলে অবশ্যই তাঁর থেকে বিনোদন দুনিয়ার বাকিদের প্রচ্ছন্ন প্রত্যাশা তৈরি হয়। সরকারের কাছে তিনি তাঁদের ভাল-মন্দ তুলে ধরবেন, এমনই আশা করেন অভিনেত্রী। তিনি একই ভাবে তিনি আশা করছেন, দুই বাংলার জন্য হয়তো ভাল কিছু খবর আসতে চলেছে।
ছাত্র আন্দোলন, শেখ হাসিনার পতন এবং নতুন অন্তর্বর্তিকালীন সরকার গঠন— একের পর এক ঘটনায় ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান থমকে গিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসে কাজ করা বা এ দেশ থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে। অভিনেতা বা পরিচালক, প্রযোজকদের সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যা যেমন ঢাকার, তেমনই টলিউডেরও। ফারুকী কি সত্যিই উদ্যোগী হবেন এ বিষয়ে?
সমস্যার বিষয়টি অস্বীকার করেননি অভিনেত্রী তমা মির্জ়া। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ভিসা জটিলতায় আমি নিজেও ভুগছি। সব সময় কাজের জন্যই যে পড়শি দেশে যেতে হবে, এমন কথা নেই। পড়শি ভারতেও অনেক বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী আছেন। ইচ্ছে করে, তাঁরা আসুন বা আমরা তাঁদের কাছে যাই। এই জায়গাটা অনেক দিন ধরেই বন্ধ।” তাই তিনি মন থেকে চাইছেন, যোগাযোগের এই মাধ্যমের যাবতীয় জট কাটিয়ে যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়। যাতে দুই বাংলার মানুষ আবার আগের মতো কাজের পাশাপাশি বন্ধুত্বের কারণেও দুই দেশে যাতায়াত করতে পারেন। তাঁর কথায়, “আমার খুব খারাপ লেগেছে, আমাদের অনেক শিল্পী ভিসা জটিলতার কারণে ভারতে চুক্তিবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও যখন কাজ করতে পারেননি। কলকাতার অনেক শিল্পীও একই ভাবে বঞ্চিত। এটা আমাদের কাছে খুবই কষ্টের। কারণ, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর আমরা সেই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি।” তাই তমা চাইছেন, আগামী দিনে কোনও শিল্পীকে যেন শুধু ভিসার কারণে নির্দিষ্ট কাজ হারাতে না হয়।
আগামী বছর তমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক কাজ তাঁর হাতে। তার মধ্যে দু’টি বড় বাজেটের ছবি এবং দু’টি সিরিজ় রয়েছে। ইতিবাচক ভাবনা নিয়েই তিনি আপাতত নিজের কাজে মনোযোগী। পুরোদমে শুটিংয়ে ব্যস্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy