Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
আনন্দplus এক্সক্লুসিভ

'আমাকে ওরা রাস্তার মেয়ে করে ছাড়ল'

‘মহানায়ক’ সিরিয়াল দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তিনি। দাবি করলেন যা হচ্ছে কুৎসা আর কেচ্ছা। সুপ্রিয়া দেবী-র বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার সর্বাণী মুখোপাধ্যায়-কেবালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে ওঁর এক তলার ফ্ল্যাট। ডাইনিং টেবিলের ওধারে বসে উনি। চিলতে হাসির রেখা ঠোঁটে। ‘মহানায়ক’ নিয়ে প্রশ্ন করতেই হাসি-হাসি সেই মুখটা মুহূর্তে থমথমে হয়ে গেল। তিনি সুপ্রিয়া দেবী।

সুপ্রিয়া ও ‘প্রিয়া’

সুপ্রিয়া ও ‘প্রিয়া’

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৭
Share: Save:

বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে ওঁর এক তলার ফ্ল্যাট। ডাইনিং টেবিলের ওধারে বসে উনি। চিলতে হাসির রেখা ঠোঁটে। ‘মহানায়ক’ নিয়ে প্রশ্ন করতেই হাসি-হাসি সেই মুখটা মুহূর্তে থমথমে হয়ে গেল। তিনি সুপ্রিয়া দেবী।

• দেখছেন ‘মহানায়ক’?

না, দেখছি না। জঘন্য। সব মিথ্যে।

• সব মিথ্যে! বুঝলেন কী করে? এই তো বললেন, দেখছেন না!

দেখতে শুরু করেছিলাম। কৌতূহল নিয়েই। খানিকটা দেখার পর আর সহ্য করতে পারলাম না। বন্ধ করে দিয়েছি।

• সে কী? উত্তমকুমারের জীবন নিয়ে কাহিনি। অথচ আপনিই সহ্য করতে পারলেন না!

উত্তমকুমার বলেই তো পারলাম না। ওর জীবন নিয়ে ধ্যাষ্টামো হচ্ছে এখানে। প্রথম এপিসোড থেকেই।

• যেমন?

কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব! আরম্ভটাই তো আপত্তিকর। মহিলা-কণ্ঠের ন্যারেশন। বলছে, ‘‘তাঁর চারপাশে ভিড় করতে লাগলেন ইচ্ছা-পূরণের নায়িকারা।’’ ধরে ধরে এক এক করে দেখানো হল রমাদি (সুচিত্রা সেন), সাবু (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়) আর আমাকে। আমরা আমাদের ইচ্ছে-পূরণের জন্য উত্তমকুমারের চারপাশে ভিড় জমিয়েছিলাম? ছিঃ!

আরও পড়ুন, মহানায়ক আমার ভাল লাগেনি বললেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়

• না, ও ভাবে আপনাদের নাম করে করে তো নেই...

আরে, লোকে এত বোকা! সুচরিতা যে সুচিত্রা, গায়ত্রী যে সাবিত্রী, প্রিয়া যে আমি, এটা কাউকে ধরিয়ে দিতে লাগে? তা ছাড়া ‘মহানায়ক’ শুরু হওয়ার আগে আমাদের নাম করে করে মিডিয়ায় ঢালাও প্রচার হয়েছে। যারা এই রোলগুলো করছে তারা তো খুশি হয়েই ইন্টারভিউ দিয়েছে। সে সব লোকে দেখেনি? তারা কিছু বোঝে না?

• কিন্তু আপনার আপত্তিটা ঠিক বুঝলাম না। আপনারা তিনজন সেই সময় সত্যিই তো উত্তমকুমারের প্রধান তিন নায়িকা ছিলেন।

ছিলাম। তো? এই রকম নায়িকা? রমাদিকে একেবারে ‘ককেট’ বানিয়ে দিয়েছে। সাদা বাংলায় ‘ছেনাল’। চন্দ্রনাথ সেন নাম দিয়ে ওর স্বামী দিবানাথ সেনকে জোকার। কেবল তাই নয়, প্রচণ্ড ডিগনিফায়েড সুচিত্রা সেন। তিনি ‘শাওনদেবী’ অর্থাৎ কাননদেবীর মুখে সাবিত্রীর প্রশংসায়, আর উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁর অভিনয়ের কথায় হিংসায় জ্বলে উঠছে। ঠেস দিয়ে কথা বলছে। এমনকী ডিরেক্টরের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে প্ল্যান কষে উত্তম-সুচিত্রা জুটির নতুন ছবির বিশ্রী পাবলিসিটি স্টান্ট দিচ্ছে। তাতে সমান তালে তাল দিচ্ছে মহানায়ক। কোন উন্মাদের মস্তিষ্কপ্রসূত এ সব! ভাবতেও লজ্জা করে। ভাগ্যিস, দু’জনের কেউই আজ এ জিনিস দেখার জন্য বেঁচে নেই!


উত্তম-সুপ্রিয়া

• আপনার আর সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথা কী যেন বলছিলেন?

সাবুকেও এখানে খুবই ছোট করা হয়েছে। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় শক্ত ধাঁচের মানুষ। সুচিত্রা সেন আর উত্তমকুমারের নতুন ছবির কারণে ওরকম কাঁদো-কাঁদো হওয়া ওর ধাতেই নেই। হবেই বা কেন? যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সাবু তখন চুটিয়ে অভিনয় করছে। থিয়েটার করছে উত্তমকুমারের সঙ্গে। ‘শ্যামলী’। এখানে যেটির নাম ‘কাজরী’। তার অমন অসহায়, দুঃখী, ন্যাকান্যাকা, কাঁদুনে হাবভাব হবে কেন? শাওনদেবীর কাছে কেঁদে কেঁদে কেন বলবে, ‘আমি যে হেরে গেলাম দিদি, একেবারে গো-হারা হেরে গেলাম!’ আর কাননদেবীর মতো সিনিয়র অভিনেত্রী, যিনি ইন্ডাস্ট্রির সকলের দিদি, তিনি শাওনদেবী হয়ে এক দিকে রমাদিকে তোষামোদ করছেন, সোজা কথায় ‘তেল দিচ্ছেন’, আরেক দিকে সাবুকে লড়িয়ে দিচ্ছেন তার পিছনে, বলছেন— ‘এর জবাব তোমাকে দিতে হবে অভিনয় দিয়ে।’ ছিঃ! ছিঃ! ছাড়া আর কিছুই বলার নেই আমার।

• নিজেকে নিয়ে আপনার আপত্তি কোথায়?

আমাকে তো একেবারে প্রথম থেকেই রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। ঘরে-বাইরে আমি রাস্তার মেয়ে। আমার এন্ট্রিটাই তো অতি নিম্নরুচির। অপমানজনক। ভাষ্যকার আমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে দর্শকের সঙ্গে। — ওই যে মেয়েটি একা হেঁটে আসছে, তাকে কেউ দেখছে না। একটা ক্যামেরাও এগিয়ে আসছে না। প্রিয়া। প্রিয়া চৌধুরী। উঠতি নায়িকা— ইত্যাদি ইত্যাদি। দেখানো হচ্ছে, মহানায়কের জন্য আমি পাগল। আমি সিরিয়ালে বলছি, অরুণকুমারের নায়িকা হওয়ার জন্য আমি ‘সব’ করতে পারি। ওই পার্টিতে প্রিয়া চৌধুরী, অর্থাৎ সুপ্রিয়া চৌধুরী অবাঙালি প্রোডিউসার ঝুনঝুনওয়ালার কাছে বেহায়াপনা করে ঝুলে পড়ছে। বলছে— ‘আজ আমায় অরুণকুমারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতেই হবে।’ আজগুবি মিথ্যে কথা! আমি সত্যি ওর (উত্তমকুমার) সঙ্গে কবে কথা বলেছি জানেন?

• কবে?

তখন সবে বর্মা থেকে কলকাতায় এসে ওদেরই (উত্তমকুমারের) পাড়ায় গিরীশ মুখার্জি রোডে ‘জয় হিন্দ’ নামের একটা বাড়ির এক তলায় ভাড়ায় উঠেছি। ওর বয়স তখন ১৮/১৯, আমার ১১/১২। সাত বছরের তফাত তো আমাদের।
ও তখন পাড়ার লিডার। আমাদের বাড়ির লনে ব্যাডমিন্টন খেলতে আসত। আর ওপরে চার তলার ঘরে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গাইত তখনকার দিনের বিখ্যাত গান— ‘পি লে, পি লে, হরিনাম কা প্যায়ালা’। একদিন অমন গান করছে, আর পাড়ার সব মেয়ে জানলার পিছনে ভিড় করে লুকিয়ে শুনছে, গান শেষ হতেই সবাই দুদ্দাড় করে হাওয়া। ও সিঁড়ি দিয়ে নামছিল। আমি সোজা গিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে চার্জ করলাম— ‘তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে গান করো কেন? পাড়ার মেয়েরা ভাল করে শুনতে পায় না।

এ বার থেকে বাইরে সবার সামনে গান করবে...।’ অবাক হয়ে ও পরে বাড়িওয়ালার মেয়েকে বলেছিল- ‘মেয়েটা কে রে? পট্পট্ করে কথা বলে!’ ... সেই থেকে ওকে দেখতাম।

• বড় হয়ে মনে ছিল ছোটবেলার সেই কথা? চিনতে পেরেছিলেন?

(এতক্ষণে হাসি) চিরকালই মনে ছিল। দু’জনেরই। পরে দেখা হওয়া মাত্র চিনতে পেরেছিলাম। দু’জনেই।


সুচিত্রা ও ‘সুচরিতা’

• তা হলে উত্তমকুমারের সঙ্গে আপনার প্রথম ছবি ‘বসু পরিবার’— যেখানে আপনাদের দু’জনের ভাইবোনের রোল, যেটা ‘মহানায়ক’-এ দেখানো হয়েছে ‘পরিবার’ নামে, আরও দেখানো হচ্ছে আপনার একটু অসুবিধে হয়েছিল...

(মুহূর্তে ফুঁসে উঠে) কক্ষনও না! ওটা সম্পূর্ণ বানানো গল্প। ওখানে যে ভাবে দেখানো হয়েছে, দাদার স্পর্শে প্রেমিকের ছোঁয়া পেয়ে শিউরে শিউরে উঠছি, আদৌ অমন কিছু হয়নি। কখনওই ও রকম প্রেমে বিহ্বল হয়ে বলিনি— ‘আপনি থাকলে আমার ভয় করে না।’ বা, ‘আমি কোনও ভয় পাই না।’ ‘বসু পরিবার’-এ আমার শট একবারে ‘ওকে’ হয়েছিল। কারণ আমি অভিনয়টা করতে জানি।

• ‘মহানায়ক’-এর একটা সংলাপ মনে পড়ছে? প্রিয়া চৌধুরী বলছে— ‘চেনা রাস্তায় হাঁটতে আমি আসিনি...’

মনে পড়ছে। নাচের সিকোয়েন্সে সেক্সি অ্যাপিয়ারেন্সে যে ভাবে প্রিয়া চৌধুরীকে দিয়ে এ কথাটা বলানো হয়েছে, সুপ্রিয়া চৌধুরী কখনওই সেটা বলেনি। আমি যখন অভিনয় করতে এলাম তখন উত্তম-সুচিত্রা অলরেডি জনপ্রিয় জুটি। মনে আছে, সে সময়কার সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করতেন, ‘ভাঙতে পারবেন এই জোড়?’ বলেছিলাম— ‘আমি তো কিছু ভাঙতে আসিনি! আমি কেবল অভিনয় করতে এসেছি। ভাল অভিনয়ের স্কোপ থাকলে ক্যারেকটার-রোলও করব!’ সেই আমি, প্রিয়া চৌধুরী হয়ে বলছি, ‘আমি শুধু অরুণকুমারের নায়িকা হতে চাই’? — আমার ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বা ‘কোমল গান্ধার’ কি সে কথা বলে?

• আর আপনার প্রথম স্বামী বিশ্বনাথ চৌধুরী? মানে ‘মহানায়ক’-এর সোমনাথ চৌধুরী? ফারাক কি এখানেও?

একশো বার। আমার স্বামী একেবারেই অমন ছিল না। আমার অভিনয় করা নিয়ে ওর পূর্ণ সমর্থন, উৎসাহ ছিল। অন্য ছবির শ্যুটিং পিছিয়ে ঋত্বিকদার (ঘটক) ‘মেঘে ঢাকা তারা’ করতে ওই-ই আমাকে জোর করে আউটডোরে নিজে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল। সোমনাথ চৌধুরীর মতো জীবনে কোনও দিন ‘রাস্তার মেয়ে’ কথাটা উচ্চারণও করেনি। স্ত্রীর সম্পর্কে কখনও বলেনি, ‘রাস্তার আলোর নীচে যে মেয়েরা দাঁড়ায় তাদের যা বলা হয়, স্টুডিয়োর আলোর নীচে যে মেয়েরা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায় তাদেরও তাই বলে।’... যত্তোসব জঘন্য নোংরা কথা! ভাবতেও ঘেন্না করে।

• আপনার মুম্বইতে হিন্দি সিনেমায় যাওয়ার প্রসঙ্গে আসি। তখন তো উত্তমকুমার আপনার জীবনে এসে গেছেন। ‘মহানায়ক’ দেখে মনে হচ্ছে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের আপনাকে মুম্বই নিয়ে যাওয়া নিয়ে উত্তমকুমার অন্য ভাবে রি-অ্যাক্ট করেছিলেন!

আগাগোড়া ভুল কথা। উত্তমকুমার তখনও আমার জীবনে আসেনি। আমি তখন যোধপুর পার্কে থাকি। সে সময় হেমন্তদা খুব জলসা করতেন। আশেপাশে প্রোগ্রাম থাকলেই খবর দিতেন— ‘ও বেণু, আমি তো তোদের পাড়ায় গান করতে আসব, ফেরার পথে দুটো খেয়ে যাব।’... হেমন্তদার জন্য ভালমন্দ রান্না করে রাখতাম। এ রকমই এক রাতে জলসা ফেরত হঠাৎই এসে হাজির হেমন্তদা। সে দিন আর খাওয়ার বায়না নয়, আমার জন্য হিন্দি ছবির ‘বায়না’ নিয়ে বললেন, ‘বম্বেতে কাজ করবি? কিশোর হিন্দি ছবির জন্যে নতুন মুখ খুঁজছে।’ আমি এক কথায় ‘হ্যাঁ’ বলে দিলাম। তক্ষুনি আমার বাড়ি থেকেই কিশোরকুমারকে ফোন করলেন হেমন্তদা। তার পর জলের মতো সব হয়ে গেল। সেই আমার প্রথম হিন্দি ছবি ‘দূর গগন কি ছাঁও মে’। নায়ক কিশোরকুমার। এর পর একে একে ‘বেগানা’, ‘আপ কি পরছাঁইয়া’। দুটোতেই নায়ক ধর্মেন্দ্র।


হেমন্ত ও ‘হেমেন’

• কিন্তু হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর উত্তমকুমারের মধ্যে আপনার হিন্দি ছবি করা নিয়ে যে টানাপড়েন...

দাঁড়ান। দাঁড়ান। আমার বলা শেষ হয়নি। মনে আছে। ‘মহানায়ক’ সিরিয়ালে এটা নিয়ে যে কেচ্ছা দেখানো হয়েছে, উত্তম-হেমন্তদা-আমি, এই তিন চরিত্র ঘিরে, তা নিয়ে কথা বলতেও আমার প্রবৃত্তি হয় না। উত্তম আমার হিন্দি ছবি করা নিয়ে মোটেই হেমন্তদাকে দোষারোপ করেনি। আর আমাদের সকলের এত শ্রদ্ধার হেমন্তদা ‘মহানায়ক’-এর ‘হেমেন’! ওই রকম নোংরা আচরণের! কল্পনাও করতে পারি না। হেমন্তদা আজীবন আমার নিজের বড় ভাই ছিলেন। কোথায় টেনে নামিয়েছে সেই মানুষটিকে! সেই সঙ্গে চরম নামা নামিয়েছে আমাকেও। যখন অরুণকুমার অর্থাৎ উত্তমকুমার, প্রিয়া চৌধুরী অর্থাৎ সুপ্রিয়া চৌধুরীকে বলছে— ‘অরুণকুমারের নায়িকারা দিনরাত ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে পার্ট চাইতে বেরোয় না... তাদের অন্তত এইটুকু ডিগনিটি আছে, যেটা তোমার মধ্যে একদম নেই।’— এ কথা বলার মতো স্পর্ধা উত্তমকুমারের মতো সত্যিকারের মহানায়কেরও কখনও হয়নি। আরও আছে। যখন অরুণকুমারকে দিয়ে প্রিয়াকে অর্থাৎ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলানো হয়েছে— ‘এক দিনে তিন-তিনটে বাংলা ছবিতে আমি তোমায় সাইন করিয়েছি। যেটা তোমার কোনও বম্বের দাদা পারবে না।’ উত্তমকুমারের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা নিয়েই বলছি, ফিল্ম-ইন্ডাস্ট্রিতে সুপ্রিয়া চৌধুরীর যে জায়গা, সেটা বরাবর তার নিজের জোরে। রোল পাওয়ার জন্য তার কাউকে লাগেনি। উত্তমকুমারকেও নয়।

• আজ এত রাগ দেখাচ্ছেন, কিন্তু সিরিয়ালটার পারমিশন তো আপনারই দেওয়া। টাকাপয়সা নিশ্চয় পেয়েছেন ...

(প্রচণ্ড চিৎকার করে) কী! কে বলে এ সব কথা! আমি পারমিশন দিয়েছি? টাকা নিয়েছি? পারমিশন দেওয়ার, টাকা নেওয়ার আমি কে? এটা কি আমার লেখা উত্তমকুমারের জীবনী নিয়ে করা? তা যদি হতো এমন কদর্য মিথ্যের চাষ হতো না। এই কি ‘মহানায়ক’ উত্তমকুমারের জীবন? যাকে প্রথম শ্যুটিং-এর দিন ফ্লোর থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল! কোথায় তার সীমাহীন কষ্ট আর অমানুষিক স্ট্রাগল-এর অবিশ্বাস্য সব কাহিনি? যা দিয়ে সত্যিকারের ‘মহানায়ক’ তৈরি হতে পারত। সেটা তো হয়ইনি, উল্টে... না হওয়ার আরও কারণ আছে অবশ্য!

• কী কারণ?

কারণ উত্তমকুমার তুমুল ভাবে আজও জীবিত আর জনপ্রিয়। সে জায়গা দখল করার ক্ষমতা এখনও কারও হয়নি। ক্যামেরা ফেস করা দূরে থাক, ‘ব্যাক টু ক্যামেরা’ করার মতোও ‘মহানায়ক’ জন্মায়নি আজও। আর শুনুন, কেচ্ছা দিয়ে, মিথ্যে বলে সস্তার পাবলিসিটি করা যায়, কিন্তু শিল্প হয় না। তার প্রমাণ দিয়েছে দর্শক। যারা শ্রেষ্ঠ বিচারক। এই ‘মহানায়ক’ তারা গ্রহণ করেনি। ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে, যার পরিণতিতে শোচনীয় ভাবে পড়ে গিয়েছে এর টিআরপি। প্রাইম টাইমের জায়গায় এখন এর স্থান হয়েছে অসময়ের বেঘোর রাত এগারোটায়।

আরও পড়ুন, মহালয়ার ভোরের মায়াবী আলোটাই আমাকে পুজোর নেমন্তন্ন করত

(পরের সংখ্যায় ‘মহানায়ক’ সিরিয়াল প্রসঙ্গে বিক্ষুব্ধ লেখায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পুত্র ও কন্যা)

অন্য বিষয়গুলি:

Supriya Devi Interview Mahanayak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE