Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রিন্স চার্মিং তো আসছে না

‘যদি লভ দিলে না প্রাণে’ ছবিতে ভাল অভিনয়ের পরেও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়-কে ঘিরে নানা প্রশ্ন। তাঁর সামনে সংযুক্তা বসুরাজপুত্র মানে আমি বলতে চাইছি মনের সঙ্গে মিলবে এমন একজন মানুষ। সত্যি, এখনও পাইনি।

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৫
Share: Save:

শোনা যায় খুব সুন্দর ফ্ল্যাট কিনেছেন। গৃহপ্রবেশ হল ধুমধাম করে।

হ্যাঁ। ওখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হইচই হয় উইক-এন্ডে। তার পর ফিরে আসি নিজের বাড়িতে।

এত সাজানো ফ্ল্যাট ছেড়ে কেন পুরনো বাড়িতে ফিরে যান?

হরিদেবপুরের বাড়িটা আসলে বাবার তৈরি। অনেক স্মৃতি সেখানে। মা ওই বাড়ি ছাড়তে চান না। দিদাও থাকেন এখানে। আমারও ভাল লাগে থাকতে।

ইন্ডাস্ট্রির পার্টিতে বেশি দেখা যায় না। লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগও কম রাখেন। তা হলে কোন বন্ধুদের নিয়ে নতুন বাড়িতে আড্ডা মারেন?

সবাই ব্যক্তিগত বন্ধু। ছেলেবেলার বন্ধুরাই বেশি। ইন্ডাস্ট্রির সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। কিন্তু পার্টি তেমন হয় না।

সারা বছর আপনাকে তো আরও অনেক বেশি ছবিতে দেখা যেতে পারত...

নারীকেন্দ্রিক ছবি ক’টা হয়? বছরে খানতিনেক ছবি করতে পারলেই হল।

ব্যস্?

হ্যাঁ, তাতেই চলে যাবে। অনেকে নাটক করার কথা বলেন। কিন্তু তার জন্য বিরাট সময়ের কমিটমেন্টের ব্যাপার থাকে। তাই রাজি হতে পারছি না।

ইদানীং ‘যদি লভ দিলে না প্রাণে’ ছবিতে আপনার অভিনয়ের বেশ প্রশংসা ছড়িয়েছে...

ছবিটায় কাজ করতে বেশ ভাল লেগেছে। চরিত্রটা ইন্টারেস্টিং।

ইন্টারেস্টিং কেন?

কারণ নায়িকার একটা জেদ ছিল। সে ত্যাগ স্বীকার করেনি বেশির ভাগ বিবাহিতা মেয়ের মতো। বাংলা ছবিতে এই ধরনের মেয়ে সচরাচর চোখে পড়ে না। সেটাই চ্যালেঞ্জিং লেগেছিল। দ্বিতীয়ত আমার চরিত্র পারমিতাকে বোঝে তার মেয়ে। সেই জন্যই হয়তো পারমিতা ফিরে গিয়েছিল সংসারে।

ধরুন আপনার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পুরনো প্রেমিককে কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। সংসারেও তেমন মন নেই। কী করবেন?

আমি যতক্ষণ না পুরনো প্রেমিককে ভুলতে পারছি বিয়ে করতাম না।

কেউ যদি প্রেম চলে যাওয়ার পরও তাতে আচ্ছন্ন হয়ে জীবন কাটিয়ে দেয়, কেমন হয়?

দারুণ হয়। কিন্তু সেটা সিনেমায়। জীবনে নয়। প্রেমে একটা পরিণতি দরকার। অপূর্ণ প্রেম মনের একটা কোনায় পড়ে থাকতে পারে। ব্যস, এইটুকুই।

আপনার মনের কোনাতেও কেউ আছে নাকি?

সে তো থাকতেই পারে। কিন্তু তার জন্য জীবন আটকায় না।

তা হলে বিয়ে করছেন না কেন?

সে রকম প্রিন্স চার্মিং কেউ আসছে না বলে। সে ঘোড়ায় চেপে, রাজপুত্রের মতো আসবে। তবে না বিয়ে...

রাজপুত্র আসা কি অত সহজ...

(হেসে) সে ঠিক। রাজপুত্র মানে আমি বলতে চাইছি মনের সঙ্গে মিলবে এমন একজন মানুষ। সত্যি, এখনও পাইনি।

এ ছবিতে সব চেয়ে গভীর অভিনয় দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন কোন দৃশ্যে?

সেই যে, যেখানে কুড়ি বছর বাদে পারমিতার সঙ্গে তার প্রেমিকের ভুল বোঝাবুঝি শেষ হয়, সেই দৃশ্যটা অসম্ভব ইনটেন্স লেগেছিল। কত ভুল বোঝাবুঝি শেষই হয় না। এ ছবির নায়ক-নায়িকারা অন্তত সেটা শেষ করেছিল।

আবিরকে কেমন লাগল?

বেশ লাগল। ভালই মানিয়েছে আমাদের, অনেকেই বলছেন। এমনকী আবিরও বলল, ওরও বেশ লেগেছে। আমরা আরও ছবিতে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। সুযোগ পেলে করব।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ল্যাপটপ’, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জাতিস্মর’, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সবেতেই আছেন। পরিচালক হিসেবে কাকে কত নম্বর দেবেন?

নম্বর দেব কেন হঠাৎ? (হাসি) সবাই সহশিল্পী। সৃজিতের সঙ্গে আড্ডা মারতে ভাল লাগে। কৌশিকদার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ব্যক্তিগত স্তরের। এবং অনেক দিনের। অনেক কথা বলা যায়। এতটাই কাছের যে দেখা হলে গাল টিপে ‘গুবলু’ বলে আদরও করা যায়। আর কমলেশ্বরের সঙ্গে আমার তেমন কোনও ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও অনেকটা সময় কাটিয়েছি ‘মেঘে ঢাকা তারা’র সুবাদে। বহু বছর বাদে একটা সাঙ্ঘাতিক চ্যালেঞ্জিং চরিত্র দিয়েছে এ ছবি।

কিছু দিন আগে আনন্দplus-এ মন্তব্য করেছিলেন যে আপনি পর্দায় চুমুর দৃশ্যে নেই। কিন্তু ‘যদি লভ দিলে না প্রাণে’ বা ‘ল্যাপটপ’য়ে যথেষ্ট সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেছেন।

‘যদি লভ দিলে না প্রাণে’ বা ‘ল্যাপটপ’যে দৃশ্যগুলো ছিল তাতে আমার অসুবিধে হয়নি। কারণ শ্যুটের সময় অভিনেতা হিসেবে আমি ছিলাম একা। কিন্তু চুম্বনদৃশ্যে দু’জনকে লাগে। আমার আপত্তি সেখানে।

আপনার আগামী ছবি হিন্দিতে। পরিচালক সোহিনি দাশগুপ্ত। সেই ছবিতে আগ্রহী হলেন কেন?

কারণ সেখানে দুই বোনের নিঃসঙ্গতার গল্প রয়েছে। সেটা আমার চ্যালেঞ্জ। পরকীয়া সম্পর্ক ভিত্তিক প্রেমের গল্প নিয়ে প্রচুর ছবি হয়েছে। জীবনে আমি এর বাইরে বেরোতে চাই। এত রকম ঘটনা আছে। শুধু শুধু পরকীয়া কেন?

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলে থাকেন আপনার মতো অভিনেত্রীকে ইন্ডাস্ট্রি নাকি ঠিক মতো ব্যবহারই করতে পারল না। কিন্তু ওঁর ছবিতে ‘ল্যাপটপ’য়ের পরে তো আর আপনাকে দেখা গেল না?

ভুল ধারণা। কৌশিকদা দুটো ছবিতে কাজ করার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে কাজ করা হয়নি।

কৌশিকের সঙ্গে রাইমা সেনের আন্ডারস্ট্যান্ডিং খুব ভাল। আপনার কি মনে হয় নায়িকাদের জীবনে এই ধরনের ফ্রেন্ড-ফিলজফার-গাইড থাকলে ভাল হয়?

কারও ক্ষেত্রে সেটা হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে লাগে না। আর লাগে না বলেই ইন্ডাস্ট্রিতে মনে হয়, হয়তো আমি পপুলার নই।

পপুলার নন? পপুলার নন, সেটা বুঝলেন কী করে?

বা বুঝি না? এটা বুঝব না? ভালই বুঝি তো....

অন্য বিষয়গুলি:

ananya chatterjee sanjukta basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE