গত বছর তাঁর কেরিয়ারে অন্যতম সেরা। বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। সাফল্যের সেই ধারা তামিলনাড়ুর সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট অরুণাচলম মুরুগানন্থমের জীবনী অবলম্বনে তৈরি ‘প্যাডম্যান’-এও বজায় রাখতে চান অক্ষয়কুমার। কথার মধ্যেই উঠে এল সোশ্যাল ট্যাবু, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গ।
প্র: গত বছরটা তো আপনার বেশ ভালই গেল। নতুন বছরের জন্য কোনও পরিকল্পনা করেছেন?
উ: না, এখনও প্ল্যান করিনি। তবে ভাবছি, এ বার থেকে বছরে চারটের বদলে তিনটে ছবিতে কাজ করব।
প্র: চাপ কমাতেই কি এই সিদ্ধান্ত?
উ: না। সেই অর্থে আমি চাপ অনুভব করি না। প্রায় তিরিশ বছর ধরে তো এই কাজটাই করে চলেছি। একটা ছবিতে খুব বেশি হলে ৪৫ দিন সময় লাগে। আমি তো বছরে পাঁচটা ছবিও করতে পারি। তার পর টেলিভিশন শো, এনডোর্সমেন্ট, শো রুমের ফিতে কাটা রয়েছে। আসলে আমি নিজেকে আরও একটু সময় দিতে চাইছি।
প্র: ‘প্যাডম্যান’ নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে...
উ: ছবির ব্যবসা কেমন হবে, তা নিয়ে সত্যিই ভাবছি না। গুরুত্বপূর্ণ হল, সোশ্যাল নেটওয়র্কিং সাইটে পুরুষরা এখন মেনস্ট্রুয়েশন সাইকল নিয়ে আলোচনা করছেন। আগে পুরো বিষয়টাই গোপন ছিল। বলতে লজ্জা করছে, সারা দেশে ৮২ শতাংশ মহিলা পিরিয়ডসের সময় ছাই-মাটি ব্যবহার করেন। ‘প্যাডম্যান’-এর সময় এই তথ্যটা জেনে আমি রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। বিষয়টা নিয়ে এমনই ছুঁৎমার্গ রয়েছে যে, কোথাও কোথাও তো মেনস্ট্রুয়েশন সাইকল শুরু হলে কোড ল্যাঙ্গোয়েজে বলে, টেস্ট ম্যাচ শুরু হল। এর জন্য দায়ী মহিলাদের চারপাশের মানুষেরা। আমরা কোন দশকে পড়ে রয়েছি, কল্পনা করতে পারেন!
প্র: প্রত্যন্ত গ্রামগুলোয় তো এখনও অধিকাংশেরই স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনারও টাকা থাকে না...
উ: হ্যাঁ। বিষয়টা কতটা ভয়াবহ! আমার মনে হয়, প্রতিরক্ষার বরাদ্দ থেকে দুই শতাংশ অর্থ বাঁচিয়ে সামাজিক স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা উচিত। তা হলে এই সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। স্যানিটারি ন্যাপকিনকে জিএসটি মুক্ত করাও উচিত। কিন্তু এ সব কথা তো কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে বলা সম্ভব নয়। জোর করেও কাউকে দিয়ে কিছু করানো যায় না। বিষয়টা নিয়ে সততার সঙ্গে ছবি তৈরি করেছি। এটুকুই আশা, দর্শক দেখবেন, সমস্যাটা বুঝতে পারবেন।
আরও পড়ুন: নন-ফিকশন চরিত্র হলে তবেই টিভিতে ফিরব
প্র: একটা সময়ের পর আপনি কিন্তু ক্রমাগত নিজেকে পালটেছেন। আপনার কি মনে হয়, বদলের এই ধারাই বলিউডের অন্য তারকাদের থেকে আপনাকে স্বতন্ত্র জায়গা দিয়েছে?
উ: দেখুন, ইন্ডাস্ট্রিতে নির্দিষ্ট কোনও নিয়মাবলি নেই যে, এক ধরনেরই কাজ করতে হবে। প্রত্যেকের কাজের ধরন আলাদা। আমি চেষ্টা করছি, দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটা ছবিতেই বৈচিত্র বজায় রাখার। ‘প্যাডম্যান’-এর পরে তো ‘রোবট টু পয়েন্ট ও’ মুক্তি পাবে। সেখানে আমি নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করছি। অনেকেই জিজ্ঞেস করেছে, কেন ভিলেনের চরিত্র করলাম? আমার উত্তর, কেন করব না? রজনীকান্তের বিপরীতে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয়টাও বড় ব্যাপার! এখনও পর্যন্ত ২১-২২জন নতুন পরিচালকের সঙ্গে এবং ১৭জন নবাগত হিরোইনের সঙ্গে কাজ করেছি। আমি অনেকটা জলের মতো। আমার প্রসেসটাই হল, যে যেমন, তার সঙ্গে সেই ভাবে মিশে যেতে হবে।
প্র: ‘টয়লেট...’, ‘প্যাডম্যান’-এর পর অন্য কোনও সামাজিক বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা ভেবেছেন?
উ: আমার এক মহিলা ভক্তও একই কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন। ওকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম, কোন বিষয় নিয়ে ফিল্ম তৈরি করা উচিত? তিনি বলেন, পণপ্রথা নিয়ে ছবি করতে। এটুকু বলতে পারি, তাঁর কথা কিন্তু আমাকে বেশ ভাবিয়েছে।
প্র: পঞ্চাশের গণ্ডি পেরোনোর পরেও আপনি স্বমহিমায়। বছর সাতেক পরেও কি এই স্ট্রাইক রেট বজায় থাকবে?
উ: ভবিষ্যতের কথা কে বলতে পারে! যখন অনুভব করব, শ্লথ হয়ে পড়ছি, কাজটা আর উপভোগ করছি না, তখনই অবসর নেব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy