বৃদ্ধ দাদুর উপর এমনই অত্যাচার নেমে এসেছে, অভিযোগ মিসমির।
করোনাকালে থানা-পুলিশ করতে হল তাঁকে। সমানে হুমকি ফোনও পাচ্ছেন কাছের আত্মীয়ের থেকে। তারপরেও প্রশাসনের উপরেই ভরসা রেখেছেন ‘জিওনকাঠি’ ধারাবাহিকের ‘খলনায়িকা’ মিসমি দাস।
নেটাগরিকেরা জানেন, দিন দুই আগে মিসমি সোশ্যালে পোস্ট করে অভিযোগ করেছিলেন তাঁর অশীতিপর দাদু-দিদার উপর ক্রমাগত অকথ্য অত্যাচারের কথা। অভিনেত্রীর অভিযোগ ছিল, তাঁর দাদু, ৯০ বছরের হরিদাস চক্রবর্তী এবং তাঁর ৮২ বছরের স্ত্রী স্নেহপ্রভা চক্রবর্তী নিগৃহীত হয়েছেন বড় ছেলে, বউমা এবং নাতির হাতে। তাঁরা হাওড়া শিবপুরের ৭৫ বছরের বাসিন্দা। যদিও তাঁরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কী নিয়ে হরিদাসবাবুর সঙ্গে বড় ছেলের অশান্তি? বৃদ্ধ জানান, তিনি রেলের উচ্চপদস্থ কর্মী ছিলেন। মোটা পেনশনও পান। তাঁর বাড়ি সম্প্রতি প্রমোটারের কাছে বিক্রি করে দেন বড় ছেলে কল্যাণ। হরিদাসবাবুর বক্তব্য, তিনি নতুন ফ্ল্যাট বা তার সমান টাকা তাঁর ছোট ছেলে রঞ্জন আর মিসমি-র মাকে দেওয়ার কথা বলেন। এতেই নাকি ক্ষেপে গিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন বড় ছেলে, তাঁর স্ত্রী সর্বাণী আর নাতি রক্তিম। দাদুর উপর সব থেকে বেশি অত্যাচার চালিয়েছেন ২৬ বছরের নাতি। এমনটাই অভিযোগ হরিদাসবাবুর। যাঁর আচরণ থেকে বিস্মিত দাদুর আক্ষেপ, ‘‘ছোট থেকে কোলেপিঠে করে মানুষ করলাম। যখন যা টাকাপয়সা চেয়েছে দিয়ে দিয়েছি। তার পরেও এ ভাবে আমায় মারল!’’
হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানানো হয়েছে, তারা অভিযোগ পেয়েছে। ওই বৃদ্ধের কাছে গিয়ে বয়ান নেবে পুলিশ। তার পরে তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
কী ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার উপর? মিসমির অভিযোগ, বেল্ট, জুতোর ঘা তো আছেই। ৯০ বছরের বৃদ্ধকে তুলে আছাড় মারতেও হাত কাঁপেনি নাতির।
অভিযোগ, এ ভাবেই গত ৩ অগস্ট রাতভর অত্যাচারের পর ৪ অগস্ট ভোরে ছেলে ওছেলের বউ মা-বাবাকে বের করে দেন তাঁদের বাড়ি থেকে। সহায়-সম্বল হারিয়ে যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে হরিদাসবাবু তখন তাঁর আর তাঁর স্ত্রীর সারা গায়ে মারের কালশিটে দাগ!
খবর পেয়ে ছুটে যান বৃদ্ধের ছোট ছেলে রঞ্জন এবংমিসমি। তাঁরাই রাস্তা থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে অ্যাপ ক্যাবে করে নিয়ে আসেন কেষ্টপুরে, মিসমির ছোটমামার বাড়িতে।
এর পরেই মিসমি সোশ্যালে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি লকডাউন থাকায় এই ঘটনার একদিন পরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মানবাধিকার কমিশন, হাওড়ারনগরপাল, শিবপুর থানা— প্রত্যেকের কাছে সবিস্তার এই অত্যাচারের বর্ণনা করে মেল পাঠান।
থানা থেকে মেলের প্রাপ্তিস্বীকারেরপরে মিসমি দ্বারস্থ হন প্রশাসনের। তাঁকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন তাঁর বড় দাদা ভুতু ও অন্য দুই বন্ধু।অসংখ্য অনুরাগীও সাহস জুগিয়েছেন মিসমিকে।
কী বলছেন বৃদ্ধেরবড় ছেলে কল্যাণ? মিসমি এবং রঞ্জনের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়ে ফোনে কল্যাণ এবং সর্বাণী জানিয়েছেন, ঋণ নিয়ে পুরনো বাড়ি কিনেছিলেন কল্যাণ। হরিদাসবাবু নয়। এখন রি-মডেলিং করবেন বলে ছোট ভাইয়ের কাছে বাবাকে পাঠানোর কথা বলতেই ভাই-বোন মিলে টাকা এবং ফ্ল্যাট দাবি করছেন। বাবাকে দিয়ে তাঁরাই মিথ্যে বলাচ্ছেন। এই চক্রান্তে সামিল তাঁদের এক খুড়তুতো দাদাও।
কল্যাণের আরও দাবি, তিনি কোনও দিন কারও গায়ে হাত তোলেননি। ছেলে রক্তিম কর্মসূত্রে দিল্লিবাসী। কোভিডের আতঙ্কে তিনি কলকাতায় আসতেই তাঁকেও ফাঁসিয়েছেন সবাই মিলে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, বরং তাঁর স্ত্রী নাকি আগে প্রায়ই মারধর খেতেন তাঁর বাবার হাতে! এখন জোর করে বাড়ি দখলের হুমকিও দিচ্ছেন ভাই, বোন আর মিসমি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy