পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় কী বললেন কাঞ্চন মল্লিককে? গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ড থেকে কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে বিতর্ক— প্রত্যেক ক্ষেত্রেই পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সরব। উত্তরপাড়ার বিধায়ক-অভিনেতা চিকিৎসকদের সম্বন্ধে ভুল তথ্য পেশ করে কটাক্ষ করার পরেও। তিনি ভিডিয়োবার্তায় ক্ষমা চাওয়ার পরেও। রবিবার কাঞ্চনের বক্তব্যের পর সোমবার দিনভর তা নিয়ে তরজার স্রোত বহমান থেকেছে। কটাক্ষে জেরবার করে টলিউড কোণঠাসা করেছে তাঁকে। রাতে তিনি ভিডিয়োবার্তায় ক্ষমা চান। বলেন, “আমার উপরেও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রভাব পড়েছে। আমিও আন্তরিক ভাবে নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচার চাইছি।” ভিডিয়োর শেষে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। এর পরেই পরমব্রত একটি লম্বা বার্তা দেন সমাজমাধ্যমে। লেখেন, “কাঞ্চনদা আমার খুব প্রিয় অভিনেতা এবং তা-ই থাকবেন ! ওঁর আজকের কথার তীব্র বিরোধিতা করছি। কিন্তু, কাজের ক্ষেত্রে কাউকে কোনও রকম ‘ত্যাগ’ বা বয়কট করার পক্ষে আমি নই!” নিজের কথার পক্ষে তাঁর যুক্তি, তা হলে সেই সব সহকর্মীকেও তাঁকে বয়কট করতে হয়, যাঁরা নানা দলের হয়ে নানা কথা নানা সময়ে বলেছেন। অথবা নানা কথায় সায় দিয়েছেন।
রবিবার একটি ধর্নামঞ্চ থেকে কাঞ্চন জানিয়েছিলেন, জুনিয়র চিকিৎসকেরা প্রতিবাদে শামিল। মাসের শেষে সরকারি বেতন, পুজোর আগে বোনাস হাত পেতে নেবেন তো? জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে সরকারি বেতন বা বোনাস কিছু পান না, তা কি জানেন না শাসকদলের বিধায়ক— সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে সমাজের সব স্তর থেকেই। সেই প্রেক্ষিতে বিধায়ক-অভিনেতাকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করে পরমব্রত লেখেন, “না বন্ধু ! মাইনে-বোনাস আর অনুদান-পুরস্কার এক জিনিস নয় !” তিনি জানিয়ে দেন, প্রথমটা কাজের বিনিময়ে পাওয়া অধিকার, দ্বিতীয়টা নয়! জানতে চান, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বা যে কোনও রকমের ভয় ছাড়া কাজ করতে পারাটাও অধিকার | সেটা না থাকলে তার জন্যে আন্দোলন করে কর্মবিরতিতে গেলে তাঁদের রোজগার করার অধিকার কেন ত্যাগ করতে হবে? এ-ও অনুরোধ করেন, “একটি ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত ঘটনার বিচার চেয়ে,সহকর্মীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে আন্দোলন করাকে উইদাউট পে ছুটি নেওয়ার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলো না বন্ধু ! আন্দোলনের মধ্যেও কিন্তু ডাক্তাররা অভয়া ক্লিনিক তৈরি করে পরিষেবা দিচ্ছেন!”
কাঞ্চনের মুখ থেকে এই বক্তব্য শুনে প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা আশাহত, সে কথা জানাতেও ভোলেননি। লিখেছেন, “আগের দিনই কুণালবাবু প্রসঙ্গে লিখেছিলাম যে, অন্য কোনও জগৎ থেকে বিখ্যাত ব্যক্তিদের এনে নেতা-নেত্রী বানিয়ে নিচ্ছেন বেশ কথা, কিন্তু তাঁদের রাজনৈতিক পরিপক্বতার দায়িত্ব কিন্তু দলকে বা আপনাদেরকেই নিতে হবে! আরও এক বার বলতে চাই আজ এই কথাটা। যদিও কাঞ্চনদাকে দীর্ঘ দিন ধরে চিনি বলে আরও একটু সুচিন্তিত বক্তব্য আশা করেছিলাম।” বক্তব্যের একেবারে শেষে তাঁর আশা, কাঞ্চন মল্লিক যদি নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারেন, তা হলে তার থেকে ভাল কিছু আর হতেই পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy