ঘটনা ১: টেস্ট পরীক্ষা শেষ। আনন্দের আতিশয্যে একদল পড়ুয়া পাখার ব্লেড ভেঙে দিল!
ঘটনা ২: আর মাধ্যমিকের পড়া পড়তে হবে না! এই আনন্দে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়েই দশম শ্রেণির বই-খাতা ছিঁড়ে কুটি-কুটি করে হাওয়ায় উড়িয়ে দিল একদল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
এই দুই ঘটনা দেখে স্তব্ধ লেখক-অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। কী বলবেন তিনি? জানেন না। ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। ঘটনা দুটো তাঁকে এতই নাড়া দিয়েছে যে তিনি সমাজমাধ্যমে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমরা কোন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি কে জানে! ক’দিন আগে পড়লাম, মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার পর একটা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা মিলে স্কুল প্রপার্টি ভাঙচুর করেছে। কারণ? তারা স্কুল ছেড়ে যাচ্ছে সেই ফূর্তিতে। আবার সে দিন দেখলাম, মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার আনন্দে টেক্সট বুক ছিড়ে কুটিকুটি করে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছে। আনবিলিভেবল! এরা কারা?” (সমাজমাধ্যমে অভিনেতার লেখা অপরিবর্তিত রাখা হল)
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করতে একই সঙ্গে ক্ষোভ ও হতাশা উগরে দিয়েছেন ভাস্বর। একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চেয়েছেন, “আনন্দের আতিশয্যে বই ছিঁড়ে কুটি-কুটি করবে! শ্রেণিকক্ষের পাখার ব্লেড বেঁকিয়ে দেবে? এরাই নাকি আগামী দিনের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার?”
কেন সদ্য মাধ্যমিক দেওয়া পরীক্ষার্থীদের এই আচরণ? কী মনে হচ্ছে তাঁর?
বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ভাস্বর। তিনিও ভেবে পাচ্ছেন না, আচার-ব্যবহারে এই প্রজন্মের মধ্যে কেন এত ঔদ্ধত্য, কেন এত অস্থিরতা! তাঁর কথায়, “সময় এবং সমাজ নিত্য পরিবর্তনশীল। আমরাও আমাদের বাবা-কাকাদের মতো নই। আমরাও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। আনন্দ করেছি। তার জন্য বিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর করিনি। বইয়ের পাতাও ছিঁড়ে কুটি-কুটি করে বাতাসে ওড়াইনি!”
আরও পড়ুন:
তাঁর এ-ও দাবি, এরা এতটাই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী যে পরীক্ষায় খারাপ ফলও যে হতে পারে সে কথা ভাবেই না! যেন জানে, প্রত্যেকে দুর্দান্ত ফল করে পরের শ্রেণিতে উঠবে। ভাস্বরের আরও প্রশ্ন, “তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম প্রত্যেকে খুব ভাল ফল করবে। তা বলে এই আচরণ? এদের মা-বাবা কোন শিক্ষায় শিক্ষিত করছেন? আদৌ কি এরা তাঁদের মানে? সমাজ কোন অন্ধকার সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে?” তাঁর আফসোস, “সব দেখে মনে হচ্ছে, এই প্রজন্মের শরীরে প্রচণ্ড রাগ। এরা সারা ক্ষণ রেগে থাকে। যার প্রভাব পড়ে আচরণে। এদের প্রতিক্রিয়াও তাই চরম। পাখার ব্লেড ভেঙে, বই ছিঁড়ে আনন্দ পায়। যা আমরা কখনও ভাবতেই পারিনি।”