‘নেতাজি’-র ভূমিকায় অভিষেক বসু। নিজস্ব চিত্র।
হাতে আর দু’দিন। ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে জি বাংলার আরও এক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘নেতাজি’। মাস পড়তেই তাই মনখারাপ অভিষেক বসুর। যাঁকে এত দিন দর্শককুল ‘নেতাজি’ বলেই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে এসেছেন।
সব কিছুরই তো শেষ থাকে। সেই নিয়ম মেনে ‘নেতাজি’র টাইম স্লটে জুলাইয়ের প্রথমে চলে এসেছে বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী দেবীর বায়োপিক।
এক মহাজীবন ছেড়ে অন্য মহাজীবন। এটাই জীবনের দস্তুর। তার পরেও কতটা নস্টালজিয়ায় ভুগছেন অভিষেক?
জানতে গেলে ফলো করতে হবে অভিষেকের সোশ্যাল পেজ। যেখানে ১৬ জুলাই সম্ভবত নেতাজির মহানিষ্ক্রমণের ছবি শেয়ার করেছেন পর্দার ‘সুভাষ চন্দ্র বসু’। সে দিনই ছিল তাঁর শেষ শুটিং। সঙ্গে বিষণ্ণতা মাখানো দুটো লাইন, ‘জাতিস্মর হয়ে... আবার জন্মিব এ দেশে, থাকিব হয়ে চিরঞ্জীবি, আমার ভারতবর্ষে।’
আরও পড়ুন: সবাইকে ‘খুশি’ করতে না পারায় বলিউড থেকে সরে যেতে হয় এই ভারতসুন্দরীকে
এই চাওয়া ছিল নেতাজির মনে। সেই চাওয়া আপাতত অভিষেকের। দর্শকমনে আরও কিছু দিন তিনি থেকে যেতে চান ‘নেতাজি’ হয়েই, নাকি নতুন রূপে খুব শিগগির দেখা মিলবে আবার? কী করতে চলেছেন অভিষেক?
চরৈবেতি... আবার নতুন পথ চলা শুরু হবে, মত অভিনেতার। তার আগে নিজের মেকওভার করবেন। যেমন, মাথা কামাতেন নিজের হাতে, ‘নেতাজি’ লুক নিখুঁত করতে, সেই ফাঁকা মাথা ভরাট করবেন। ওজন বাড়াতে হয়েছিল চরিত্রের খাতিরে। সেটা ঝরিয়ে আবার স্লিক অ্যান্ড স্লিম হবেন। এবং সবার আগে, নেতাজির খোলস ছেড়ে আবার আগের অভিষেক বসু হবেন। যেটা তাঁকে এই নস্টালজিয়া থেকে বের হতে সাহায্য করবে।
নেতাজি ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র।
এই প্রক্রিয়া অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনকার অভিষেকের মাথা ভরাট। কাছের জনের জন্মদিনের উইশের ছবি বলছে, ছন্দে ফিরছেন তিনি। থুতনির নীচের এক চিলতে দাড়ি আবার যথাস্থানে। জি বাংলার শুট শেষের পরে ব্রেক নেবেন বলেছিলেন। আপাতত সেই মোডে তিনি।
দীর্ঘ লকডাউন। তার পর নিউ নর্মাল পরিবেশে নিজের হাতে নিজেকে নেতাজিতে রূপান্তর। কেমন ছিল দিনগুলো? পাততাড়ি গোটানোর পর পিছন ফিরে দেখতে গিয়ে অভিষেকের মনে অজস্র স্মৃতি, সপ্তাহখানেক লেগে গিয়েছিল তাঁর এবং সেটে বাকিদের নতুন অভ্যাসে অভ্যস্ত হতে। শুটিংয়ে মাস্ক ছেড়ে থাকা। দূরত্ব মেপে ইমোশনাল সিনে অভিনয়। ভীষণ কষ্টের, কিন্তু চ্যালেঞ্জের! শুটিংয়ের পর সারা ক্ষণ ফেস শিল্ড, মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা। একদম অন্য রকম পরিস্থিতি। কিন্তু মানিয়ে নিয়েছিলেন। তবে তিনি অন্য সহ-অভিনেতাদের মতো মোবাইলে শুট করে নিজের কোনও অংশ পাঠাতে পারেননি। আফটার অল তিনি নেতাজি!
এরই সঙ্গে ‘নেতাজি ফ্যামিলি’-কেও বড্ড মিস করছেন অভিষেক। ওই যে, কাজ করতে করতে সবাই হয়ে ওঠেন এক পরিবার! মা-বাবা, মেজদা, মেজ বউদি, পর্দার বিপ্লবী বন্ধুরা... সবাই ‘অতীত’… মন জুড়ে একসঙ্গে থাকতে না পারার খারাপ লাগা তাই কাজ করছে অভিনেতার মনে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে কাজ, টাকাপয়সা কিচ্ছু নেই! রাস্তায় কেক, দুধ বেচে দিন চালাচ্ছেন এই গায়িকা
সবার মনে পুরোপুরি ‘নেতাজি’ হয়ে উঠতে মেকআপ ছাড়াও জেশ্চারে পশ্চারে অনেক বদল এনেছিলেন অভিষেক। এ জন্য তাঁকে বিস্তর পড়াশোনাও করতে হয়েছিল। ছিল চাপা টেনশনও, চরিত্র না হয়ে উঠতে পারলে এক জনও ছেড়ে কথা বলবেন না। নেতাজি আজও বাংলা ও বাঙালির আত্মার আত্মীয়।
স্মৃতি ভাগাভাগির সময় অভিষেকের উপলব্ধি, প্রত্যেক অভিনেতার কাছে শুটিং স্পট, অভিনীত চরিত্র ‘দ্বিতীয় ঘর’। নির্দিষ্ট সময়ে সেই ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে গেলে অভিনেতাকে ফিরতে হয় পুরনো জায়গায়। আবার নতুন ‘দ্বিতীয় ঘর’ না আসা পর্যন্ত।
আপাতত সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন অতীত হতে চলা ‘নেতাজি’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy