Advertisement
E-Paper

ফেডারেশনের বিরুদ্ধে জয়েন্ট পিটিশন দাখিল আদালতে, বাড়ছে বিদুলার সমর্থক পরিচালকদের সংখ্যা

বিদুলা ভট্টাচার্য আর একলা নন। তাঁর সমর্থক পরিচালকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সকলে মিলে ফেডারেশন সভাপতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ?

পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্যের সমর্থক সংখ্যা বাড়ছে।

পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্যের সমর্থক সংখ্যা বাড়ছে। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪৬
Share
Save

পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একাই লড়ছেন। ফেডারেশনের অকারণ হস্তক্ষেপের কারণে কাজ করতে না পারার অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন। বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশ, বিদুলার কাজে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করা যাবে না। মামলার পরের শুনানি ৩ এপ্রিল। এর পরেই পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী প্রকাশ্যে পরিচালককে সমর্থন জানান। শুনানির দিন দুই আগে জানা গিয়েছে, ক্রমশ শক্তি বাড়ছে বিদুলার। বাড়ছে সমর্থক পরিচালকের সংখ্যা। পরমব্রত, অনির্বাণ, ইন্দ্রনীলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নতুন পরিচালক গিল্ডের সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়-সহ আরও ১৫ জন। আরও খবর, এঁরা বিদুলার মতোই ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছেন।

প্রসঙ্গত, পরিচালকের আইনজীবী তাঁকে এ-ও জানিয়েছেন, চাইলে এঁরা বিদুলার সঙ্গে জয়েন্ট পিটিশন দিয়ে মামলা লড়তে পারবেন। সকলে কি তাই বিদুলার সঙ্গে জয়েন্ট পিটিশন দাখিল করলেন? খবর জেনে পরমব্রতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। তাঁর কথায়, “জয়েন্ট কি না তা আমাদের আইনজীবীরা বলবেন , তবে আমরা ডিএইআই-এর কিছু সদস্য ব্যক্তিগত ভাবে পিটিশন দায়ের করেছি।”

তিন পরিচালক যখন লিখিত বিবৃতি দিয়ে বিদুলাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন, তখন আনন্দবাজার ডট কমের মারফত তিনি সকলকে একটাই অনুরোধ করেছিলেন, “সমর্থন জানানোর আগে মনস্থির করে নেবেন। এক বার এগিয়ে আবার পিছিয়ে যাবেন না। অনেকে তো ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আনা মামলা থেকে নাম তুলে নিয়েছেন। এ ভাবে নতুন করে আর লোক হাসাবেন না।”

প্রসঙ্গ তুলতেই পরমব্রত বললেন, “গত জুলাইয়ে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা একজোট হয়েছিলাম। ফেডারেশন নির্ধারিত কিছু নিয়মনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। যা পরিচালকদের কাজের পরিসর ছোট করে দিচ্ছে , যার জেরে অনেক পরিচালকের কাজে অকারণ হস্তক্ষেপ হয়েছে, অনেক কলাকুশলীকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। অনেকে কাজ খুইয়েছেন। প্রশ্ন তুললেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। একটি কমিটি তৈরি করে রিপোর্ট দেওয়ার কথা হয়েছিল, কমিটি তৈরিই হয়নি। ফেডারেশনের তরফ থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসারও আগ্রহ কেউ দেখাননি। উল্টে এ বছরের শুরু থেকে যাঁরা আওয়াজ তুলেছিলেন, যখনই তাঁরা কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন শেষ মুহূর্তে তাঁদের এক এক করে ডেকে নানা ভাবে অপদস্থ করে চলেছে ফেডারেশন। আমাদের সংগঠন ডিএইআই-এর সদস্যপদ খারিজ করার পাশাপাশি সরকার কর্তৃক চালু করা স্বাস্থ্যবিমা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে |” তাঁর অভিযোগ, “অন্য গিল্ডের কলাকুশলীরা, যাঁদের সঙ্গে আমরা দু-দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছি , যাদের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত হৃদ্যতা তৈরি হয়েছে, তাঁদেরও আমাদের সঙ্গে অসহযোগিতা করতে বলা হচ্ছে ! অনেকে বাধ্য হয়ে সমঝোতা করেছেন। কিন্তু কেন? কারণ আমরা স্পষ্টতা চেয়ে, ভারসাম্যযুক্ত কাজের পরিবেশ তৈরি করার কথা বলেছি। আলোচনা চেয়ে বারংবার চিঠি দিয়েছি । কেউ কর্ণপাত করেননি।”

এখানেই শেষ নয়। পরিচালক-প্রযোজক-অভিনেতার দাবি, নিজেদের মতো করে কাজ করতে চেয়ে কেউ অন্যায় করেননি। সারা দুনিয়া এবং দেশে কর্মক্ষেত্রে আধুনিক এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে কিছু ন্যায্য পরিচালন পদ্ধতি বা ‘ফেয়ার ট্রেড প্র্যাক্টিসেস’ পালন করা হয়।এখানেও যাতে সে সব পালিত হয় সেই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন পরিচালকেরা। তাঁদের চাওয়া পূর্ণ হয়নি। এই কারণেই হয়তো বিদুলা ‘একলা চলো রে’ নীতিতে বিশ্বাসী। নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যা দেখে উৎসাহিত বাকিরা। সমর্থন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ তাঁরাও।

এই বক্তব্য পরিচালক অনির্বাণেরও। তিনি আনন্দবাজার ডট কমকে বলেছেন, “শুরুতে আমরা বিদুলাকে মৌখিক সমর্থন জানিয়েছিলাম। পিটিশন দাখিলের মাধ্যমে সেটিই আইনি পদ্ধতিতে জানানো হল।”

বিদুলার অভিযোগ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে আদালতে তাঁর নামও উঠেছে। পরমব্রতরাও মানহানির মামলা দায়ের করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। আদালতে দাখিল করা পিটিশনও কি তাঁর বিরুদ্ধে? প্রশ্নের জবাবে পরিচালকের দাবি, “আমি বা আমরা কেউই ব্যক্তিবিদ্বেষী নই। প্রতিষ্ঠানবিরোধীও নই। বরাবর বলেছি, আজও বলছি, ফেডারেশনের প্রয়োজন রয়েছে। তা বলে সংগঠন কারও পেশাজীবনে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সব বিষয়ে মাথা গলাতেও পারে না। তাঁদের এক্তিয়ারের বাইরে সেগুলি। আমাদের আপত্তি এখানেই। কিন্তু শোনার বা বোঝার ইচ্ছে কারও নেই। তাই আদালতের দ্বারস্থ হলাম।” এই জায়গা থেকে তাঁর যুক্তি, ফেডারশনের মাথায় যিনিই বসবেন তাঁর নাম আদালতে উচ্চারিত হবে। এ ক্ষেত্রে স্বরূপ বিশ্বাস এই পদে আসীন। তাই তাঁর নাম সামনে আসছে।

পরমব্রতের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও এক পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীও। তাঁর কথায়, “বিদুলার সাহস, পদক্ষেপ ভাল লেগেছে। জুলাই থেকে একজোট হয়ে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছি। ফল মেলেনি। এ বার তাই বিদুলার দেখানো পথে চলার চেষ্টা। আশা, এ বার হয়তো আমরা সাড়া পাব। যেমন পেয়েছেন বিদুলা। আদালতের সাফ নির্দেশ, স্বাধীন পরিচালকের কাজে হস্তক্ষেপ করা যাবে না।”

আশা করছেন, এ বার ইতিবাচক কিছু ঘটবে? প্রশ্নের জবাবে অনির্বাণের মত, “গত জুলাইয়ে আন্দোলনের শুরু। তখন থেকেই আমরা ইতিবাচক কিছু খুঁজেই চলেছি। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পরেও এক বছর ধরে একটি আন্দোলন চলা মানে তার সারবত্তা আছে। আন্দোলন ইতিবাচক উত্তরের আশা করে বলেই। আন্দোলনের পথপরিবর্তন ঘটলেও শেষ পর্যন্ত আশা করব, যা সিদ্ধান্ত হবে তাতে পরিচালক-টেকনিশিয়ান, স্টেক হোল্ডার-- সকলের মঙ্গল হবে।”

৩ এপ্রিল পরিচালক বনাম ফেডারেশন দ্বন্দ্বের শুনানি। বিদুলার সমর্থক পরিচালকেরা কি ওই দিন হাইকোর্টে উপস্থিত থাকবেন? পরমব্রত জানিয়েছেন, তাঁর ব্যস্ততা থাকবে। তবু যদি প্রয়োজন পড়ে, তা হলে উপস্থিত থাকার অবশ্যই চেষ্টা করবেন। থাকতে পারবেন না অনির্বাণও। জানিয়েছেন, তিনি ব্যস্ত থাকবেন শুটিংয়ে। আদালতে উপস্থিত থাকার ইচ্ছা ইন্দ্রনীলেরও। জানিয়েছেন, সকলের মিলিত চেষ্টা, শুভ ইচ্ছা কোন দিকে গড়াচ্ছে সেটি দেখার ইচ্ছে তাঁরও। বাকিটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।

Bidula Bhattacharjee Parambrata Chatterjee Indranil Roychowdhury Federation Swarup Biswas

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}