প্রতীকী চিত্র।
প্রথম চাকরি যে কোনও ব্যক্তির কাছেই বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এক দিকে যেমন রয়েছে আর্থিক স্বাধীনতার হাতছানি, অন্য দিকে কর্মক্ষেত্রে জুনিয়র হওয়ার দরুণ হেনস্থা হওয়ার ভয়— মুদ্রার দু'পিঠের কাহিনিই অজানা নয়।
তাই, যাঁরা প্রথম চাকরিতে যোগ দিতে চলেছেন, তাঁদের বেশ কিছু সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। তবে, সবটাই হতে হবে খুশি মনে। কাজের দায়বদ্ধতা যাতে মাথায় চেপে না বসে, সেই বিষয়টাও মাথায় রাখা প্রয়োজন। তা না হলে কাজই হতাশার কারণ হয়ে উঠতে পারে। নতুন কাজে যাঁরা যোগদান করে থাকেন, তাঁদের মনে শুরু থেকেই কিছু প্রত্যাশা থাকে। সেই প্রত্যাশা বাস্তবে পূরণ না হলেই সমস্যার সূত্রপাত।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তপোলগ্না দাসের মতে, কাজের শুরুর দিন থেকেই যে কোনও নতুন কাজ শেখা বা স্কিল ডেভেলপ করার জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। এতে যেমন সকলের কাছে নতুন কর্মী হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে, তেমনই কাজের পরিবেশ কেমন, সেটাও বুঝতে সুবিধা হবে। কাজ শেখার এই আগ্রহই পরবর্তীতে নতুন প্রজেক্ট পেতে সাহায্য করবে।
কাজের জায়গায় কথোপকথনের সুযোগ খুব বেশি থাকে না। সে ক্ষেত্রে কোনও জায়গায় কোনও সমস্যা হলে অন্যের সাহায্য কী ভাবে চাওয়া যেতে পারে, নতুন চাকরিজীবিরা তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান। বিশেষজ্ঞের মতে, এ ক্ষেত্রে নিজের সমস্যার জন্য অন্যের কাছে সমাধান চাইতে দ্বিধা বোধ করলে চলবে না। একই সঙ্গে অন্য কারও কোনও সমস্যা হলে, যদি সমাধানের উপায় জানা থাকে, তাঁকেও একই ভাবে সাহায্য করতে হবে।
শিক্ষা জীবনের অভ্যাস চাকরি জীবনেও সমান ভাবে বজায় রাখা প্রয়োজন। কাজের ফাঁকে কাজ সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা এবং প্রয়োজনে সেই বিষয়ে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করার চেষ্টাও করতে হবে। কারণ যতটা শেখা যেতে পারে, সেই জ্ঞানই পরবর্তীতে কাজের জায়গায় নিজের পদোন্নতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
তবে, বিভিন্ন বিষয় শিখতে গিয়ে সময়ের কাজ সময়ে শেষ না করার প্রবণতাও বিপদ ডেকে আনতে পারে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জানিয়েছেন, যে কাজ যখন করা প্রয়োজন, সেটা সেই সময়েই সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। কারণ টাইম ম্যানেজমেন্টের অভ্যাস শুরু থেকে না থাকলে পরবর্তীতে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেলে সামাল দেওয়া মুশকিল। তবে শুধু কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করা নয়, প্রয়োজনে সিনিয়রদের থেকে পরামর্শও নেওয়ার অভ্যাসও রাখতে হবে। এতে, কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বেশি জানার সুযোগ থাকবে।
সাধারণত, নতুন পরিবেশ এবং কাজের চাপের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। এ ক্ষেত্রে নমনীয় (ফ্লেক্সিবল) হতে হবে। নিজের প্রয়োজন মতো কাজের মাঝে বিশ্রামও নিতে হবে। তপোলগ্না বলেন, “ধরা যাক, কোনও কাজ ৫০ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ২০ মিনিট কাজের পরে ১০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে কাজে ফিরতে হবে। এতে পরের ২০ মিনিটে কাজ দ্রুত শেষ করে ফেলা যায়। একটানা ৫০ মিনিট কাজ করলে তা মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, যার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠে।”
প্রত্যেকের কর্মক্ষেত্রে যোগদানের লক্ষ্য আলাদা। সে ক্ষেত্রে কয়েক মাস কাজের পরে নিজেদের মূল্যায়নও করা প্রয়োজন। বোঝা জরুরি, নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে আর কতটা পরিশ্রম করতে হবে। অফিসের নিয়মকানুন মেনে কাজ করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, বা নিজের কাজের মানসিকতা এবং উৎসাহকে কী ভাবে আরও উন্নত করে তোলা সম্ভব— এই বিষয়গুলিও ভাবতে হবে। তবেই পরবর্তীতে কাজে সফল হওয়া এবং একই সঙ্গে নিজেকে ভাল রাখা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy