পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মানস ভুঁইয়া। যিনি আপাতত তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূল প্রার্থীদের তালিকায় তারকাদের চেয়ে সম্ভবত বড় চমক মানস। যিনি সবংয়ের সঙ্গে কংগ্রেস বিধায়ক হিসাবে এতটাই ওতপ্রোত জড়িত ছিলেন যে, তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘সবং ভুঁইয়া’। ছ’বার মানস জিতেছিলেন সবং থেকে। ওই কেন্দ্রে এখন বিধায়ক মানস-জায়া গীতারানি ভুঁইয়া। কিন্তু গীতার বদলে সেই মানসকেই সবংয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন মমতা। ঘটনাচক্রে, এই প্রথম মানস তৃণমূলের টিকিটে সবংয়ে লড়বেন।
স্বাধীনতার পর থেকে সবং জনপদ বরাবই কংগ্রেসের। প্রথমবার সবংয়ে তৃণমূল জিতেছিল ২০১৭ সালের উপনির্বাচনে। সেটাও মানসের জন্যই। কারণ, তার কিছুদিন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিধায়ক পদ ছেড়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন তিনি। মানসের পরিবর্ত হিসেবে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে সহজ জয় পান গীতারানি।
পাঁচ বছর আগের পরিস্থিতির সঙ্গে অবশ্য কোনও তুলনাই চলে না। মাঝের সময়ে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মানস ছিলেন তৃণমূল বিরোধী জোটের অন্যতম প্রধান মুখ। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তথা সবংয়েরর কাছেই নারায়ণগড় আসনের প্রার্থী সূর্যকান্ত মিশ্রকে জড়িয়ে ধরে এক সভায় খোদ মমতার বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছিলেন তিনি। কিন্তু সে সব যে মমতা মনে রাখেননি, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মমতাই প্রথমবার মানসকে সংসদে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। তবে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার পরও নির্বাচনী লড়াই থেকে ছাড় পাননি তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর আসন থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও তাঁকেই প্রার্থী করেছিলেন মমতা। সেই যুদ্ধে হেরে গেলেও এ বার বিধানসভায় মানসে ভরসা রাখলেন তৃণমূলনেত্রী।
তবে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই কেন্দ্র তৃণমূলের কাছে খুব ‘কঠিন’ নয়। ঘাটাল লোকসভা আসনের অন্তর্গত সবংয়ে ছ’হাজারের বেশি ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের অনেকে বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবংয়ের লড়াই যে খুব সহজ হবে না, সেটা বুঝেই মমতা অভিজ্ঞ মানসে ভরসা রেখেছেন। তবে সবং এলাকায় মানসকে নিয়ে এখনও তৃণমূলের মধ্যে নানা ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে। সবংয়ে ‘ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত মানসের রাজনৈতিক লড়াইয়ে বরাবর পাশে ছিলেন তাঁর ভাই বিকাশ। কিন্তু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর উপনির্বাচনে ভাই বিকাশকে সুযোগ না দিয়ে সহধর্মিনীকে বিধায়ক করা নিয়ে মানসের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী মানস সবংয়ে জয়ী হওয়ার পরে একটি খুনের মামলায় তাঁর নাম জড়ায়। তার পরে পরেই দলবদল নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। কারণ, তৃণমূলকে বরাবর মানসের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হয়েছে সবংয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy