ছবি: পিটিআই।
বড় ধরনের অশান্তি ছাড়াই রাজ্য জুড়ে চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রক্তপাত ঘটল রাজ্যে। কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। আনন্দ বর্মণ নামের ওই কিশোরের বয়স ১৮ বছর। এ বারই প্রথম ভোট দিতে গিয়েছিল। সেইসময় বুথের বাইরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে গুলি চললে, ছুটে পালাতে যায় সে। তখনই তার পিঠে গুলি লাগে। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আনন্দের।
অন্য দিকে, কলকাতা-সহ জেলা থেকেও বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা সামনে এসেছে। ভোট শুরু হওয়ার আগে উত্তেজনা ছড়ায় কসবায়। সেখানে বিজেপি-র প্রার্থী ইন্দ্রনীল খাঁ-র বিরুদ্ধে বস্তিতে গিয়ে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। বেলার দিকে বিজেপি কর্মীদের বেআইনি জমায়েত রুখতে লাঠিও চালাতে হয় পুলিশকে।
বেলুড়ের লালবাবা কলেজেও তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে সঙ্ঘর্ষ বাধে। বিজেপি-র অভিযোগ ছিল, তাদের এজেন্টকে বুথে বসতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তৃণমূল দাবি করে, মক পোলিং চলাকালীন ইভিএম-এ সমস্যা দেখা দেয়। তা থেকেই বচসা এবং হাতাহাতির সূত্রপাত। পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বিহানি এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে শনিবার, চতুর্থ দফায় ভোট চলছে রাজ্যের ৫ জেলার ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে। কড়া নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে ওই কেন্দ্রগুলিতে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার ৯ এবং আলিপুরদুয়ারের ৫টি বিধানসভা আসনের সব ক’টিতেই ভোটগ্রহণ চলছে। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি, হাওড়া জেলার ১৬টির মধ্যে ৯টি এবং হুগলির ১৮টির মধ্যে ১০টি আসনেও ভোট হচ্ছে।
চতুর্থ দফার ভোটে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা আসন। রয়েছেন একঝাঁক তারকা প্রার্থীও। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রথীন চক্রবর্তী এবং বৈশালী ডালমিয়ারও শনিবার পরীক্ষা। ডোমজুড়ে প্রার্থী রাজীব। বালি-তে বৈশালী এবং হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন প্রার্থী শিবপুরে। এ ছাড়াও রয়েছেন, সিঙ্গুরে বিজেপি-র প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, চুঁচুড়ায় বিজেপি-র প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়, চন্দননগরে তৃণমূলের প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন, উত্তরপাড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক এবং বিজেপি-র প্রবীর ঘোষাল। বেহালা পূর্বে তৃণমূলের প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং বিজেপি-র প্রার্থী পায়েল সরকার। বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপি-র শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।
উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারেও ভোট। ওই দুই জেলাতে রয়েছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী। কোচবিহারের নাটাবাড়ি থেকে লড়ছেন রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, দিনহাটার বিজেপি-র প্রার্থী সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক এবং কুমারগ্রামে তৃণমূলের প্রার্থী লিওস কুজুর।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এই ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ছিল ৩৯টি। বিজেপি-র হাতে মাত্র ১টি এবং বামেদের দখলে ৩টি আসন। আর তাদের জোট শরিক কংগ্রেসের ঝুলিতে ১টি আসন ছিল। অবশ্য ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসাব অনেক বদলে গিয়েছে। এই ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৫টি এবং বিজেপি ১৯টি কেন্দ্রে এগিয়ে। তবে সে সময় পৃথক ভাবে লড়াই করা বাম-কংগ্রেসের হাতে কোনও আসনই নেই।
চতুর্থ দফার ভোটে আরও কড়া নিরাপত্তার আয়োজন নির্বাচন কমিশনের। গত বুধবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব। সূত্রের খবর, ইভিএম নিয়ে গাফিলতি হলেই শাস্তির মুখে পড়তে পারেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা, সেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। চতুর্থ দফায় রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। শনিবারের ভোটে বুথে মোট ৭৯৩ কোম্পানি বাহিনী। কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারে থাকা এলাকায় বাহিনী ৯৪ কোম্পানি, আলিপুরদুয়ারে ৯৬, কোচবিহারে ১৮৩, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে ৯৯, ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলায় ৩৮, হাওড়া গ্রামীণে ৩৫ এবং বারুইপুর পুলিশ জেলায় ৪৪ কোম্পানি বাহিনী থাকবে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে থাকবে ৭৯ কোম্পানি। বাকি আধা সেনা নিযুক্ত ভোটের অন্যান্য কাজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy