মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনেক ভোট পার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সব ভোটেই তাঁকে দিনের বড় সময়টা গৃহবন্দি থাকতে দেখা গিয়েছে। নন্দীগ্রামে এ বার অন্য রকম ভোট। মমতার চেনা জমি হলেও প্রার্থী হিসেবে নতুন ভোট ময়দান। কিন্তু সেখানেও খেলার ছক বদলালেন না নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা।
ভোটে লড়ার কথা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জানিয়েছিলেন বাড়ি ভাড়া নিয়ে নন্দীগ্রামে থাকবেন। সেই মতো রেয়াপাড়া এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েই অস্থায়ী ঠিকানা বানিয়েছেন। ভোট প্রচারে কথা দিয়েছেন, ফের ক্ষমতায় এলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর বানাবেন নন্দীগ্রামে। তবে আপাতত তিনি নন্দীগ্রামের প্রার্থী। ভাড়া বাড়িতে গত কয়েকদিন রয়েছেন তিনি। দোলের দিন থেকে নন্দীগ্রামে থাকলেও বুধবার বেরিয়েছিলেন হুগলি ও হাওড়ায় প্রচার সভায় যোগ দিতে। রাতে ফিরে আসেন আন্দোলন ভূমির সেই বাড়িতে।
ভোটের সকাল থেকে একটি বারের জন্যও তাঁকে বের হতে দেখা যায়নি। অন্য দিকে, সাত সকালে নন্দীগ্রামে নিজের ভোট দেন মমতার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদমাধ্যেমের সঙ্গে কথাও বলেন। বেলার দিকে বুথে বুথে ঘুরতেও দেখা যায় শুভেন্দুকে।
বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারার মধ্যেই সোনাচূড়া ও কালীচরণপুর গ্রামে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। ভেকুটিয়ায় এক বিজেপি কর্মীর আত্মহত্যা নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। তৃণমূলের দিক থেকে আসা চাপেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এত কিছুর পরেও মমতা চুপ।
তবে এই ‘চুপ’ থাকাটা নতুন কিছু নয়। কলকাতা পুরসভা হোক বা লোকসভা নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই বরাবর ঘরে বসে ভোটদানে নজর রাখতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। ঘনিষ্ঠরা জানেন, কালীঘাটের বাড়ি থেকেই তিনি সব দিকে নজর রাখেন। ফোনে খোঁজ নেন কোথায় কী হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘরে খোলা থাকে টিভি। রিমোট হাতে চ্যানেল বদলে যান। অবশ্য অন্য রকম হয়েছিল একবার। সেটা ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচন। তখন রাজনৈতিক ভাবে উত্তপ্ত মেদিনীপুর থেকে ভোট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতা। মেদিনীপুর শহরের রানি শিরোমণি হোটালে গোটা দিন কাটিয়ে দেন। না, একবারও বের হননি। সন্ধ্যায় দু’আঙুল তুলে ‘ভিকট্রি’ চিহ্ন দেখিয়ে কলকাতা ফিরেছিলেন। মেদিনীপুরে থাকায় সে বার নিজের ভোটটাও দেননি মমতা।
নন্দীগ্রামে অবশ্য ভোটার নন মমতা। তবু তিনি কি একবার বেরবেন না! সেই আশায় সকাল থেকে সংবাদমাধ্যমের ভিড় রেয়াপাড়ার বাড়ির সামনে। না, কড়া নিরাপত্তায় মোড়া সেই বাড়ির বাইরে থেকে একটি বারের জন্যও মমতাকে দেখা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy