—ফাইল চিত্র।
আইএসএফ-এ রক্ষা নেই, সঙ্গে দোসর ‘মিম’ (অল ইন্ডিয়া মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’)।
জয়ের হ্যাট্রিক নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ কম করছেন না আসানসোল (উত্তর) কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। ‘জয় নিশ্চিত’ বলে দাবিও করছেন জনসভায়। কিন্তু মন্ত্রীর জয়ের পথ কতটা মসৃণ, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে তাঁর দলের অন্দরেই।
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা, সংখ্যালঘু ভোটের উপরে তাঁদের একছত্র আধিপত্যে ভাগ বসাতে পারে আইএসএফ এবং ‘মিম’। এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার, এত দিন যার প্রায় পুরোটাই ছিল তৃণমূলের দখলে। সংখ্যালঘু ভোটে মিম বা আইএসএফ আঁচড় কাটলে, মলয়বাবুর বিধানসভায় যাওয়ার ছাড়পত্র না-ও মিলতে পারে বলে আশঙ্কা।
রাজ্যের অনেক এলাকার মতো আসানসোলেও মেরুকরণের হাওয়া কার্যত ঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন ভোটারদের একাংশ। গত লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিপুল ভোটে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। সে মাপকাঠিতে এই কেন্দ্রটি তৃণমূলের কাছে কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই আবহে মিম এবং আইএসএফ প্রার্থী দেওয়ায় শাসক দলের লড়াই আরও কঠিন হয়েছে বলে ধারণা জেলা রাজনীতির নিয়মিত
পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
তৃণমূলের অবশ্য দাবি, এই আশঙ্কার কোনও ভিত্তি নেই। উন্নয়নের নিরিখেই ভোট হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। মলয়বাবুর কথায়, ‘‘গত ১০ বছরে যা উন্নয়ন আমার কেন্দ্রে হয়েছে, আগে তার ছিঁটেফোটাও হয়নি। উন্নয়নই মাপকাঠি। তাই এ বারও ভোটে জিতব।’’
ময়দান আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ মোস্তাকিম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল একটি লুটেরার দল। সিন্ডিকেটের দল। তাদের এ বার একটিও ভোট নয়। এটাই আমাদের প্রচার।’’ অন্য দিকে, মিম প্রার্থী দানিশ আজিজের দাবি, তিনি কারও ভোটে ভাগ বসানোর জন্য লড়াইয়ে নামেননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়ের হয়ে ভোটে লড়ছি না। সকলের উন্নয়নের কথা ভেবেই ভোট চাইছি। কারও ভোট কাটার জন্য লড়াইয়ে নামিনি। তবে এ কথা ঠিক যে, সংখ্যালঘুদের জন্য এই সরকার তেমন কিছু করেনি। তা-ও প্রচার করছি।’’
এ দিকে, বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁর ভোটে জেতা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তাঁর যুক্তি, ‘‘সংখ্যালঘুরাও বুঝেছেন, তৃণমূল এই ক’বছরে গালভরা প্রতিশ্রুতি ছাড়া, তাঁদের কিছু দেয়নি। কোনও উন্নয়নই করতে পারেনি। ফলে, এ বার তাঁরা তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। আমরা সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছি।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, সংখ্যালঘু ভোট যাগে ভাগ না-হয়, তা নিশ্চিত করতে আসানসোল পুরসভা অন্তর্গত রেলপাড়ের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত পাঁচটি ওয়ার্ড, হাটনরোড ও বস্তিনবাজার অঞ্চলে মাটি কামড়ে প্রচার করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। ঘনঘন
কর্মিসভা হচ্ছে।
তবুও কেন চিন্তিত শাসক দলের নেতৃত্বের একাংশ? কয়েকজনের ব্যাখ্যা, দিন দু’য়েক আগে আসানসোলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায় ২০১৮ সালের আসানসোলে গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন। তাতে মেরুকরণের হাওয়া আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও তৃণমূলের আর এক অংশ তা অমুলক বলে মনে করছেন। তাঁদের অভিমত, রাজ্যের শাসক-বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হবে বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চার মধ্যে। ‘মিম’ ভোটে দাগ কাটতে পারবে না। বিরোধী ভোট ভাগাভাগির ফলে, বড় ব্যবধানে জিতবেন মলয়। আসানসোলে সভা করে গিয়েছেন আইএসএফ-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকি। তাতে তেমন ভিড় না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে শাসকশিবিরে।
শাসক-শিবিরে গোদের উপরে বিষফোড়া হয়েছে ‘কোন্দল’। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। যদিও প্রকাশ্যে সে কথা মানতে রাজি নন তৃণমূলের কেউই। নেতৃত্বের দাবি, ‘‘দল ঐক্যবদ্ধ হয়েই ভোটে লড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy