সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র
বাংলায় জোটের জট ছাড়াতে শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির (সিইসি) বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে তিনি প্রশ্ন তুললেন, বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে লড়ার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনেক আগে হয়ে গেলেও আসন-রফা সম্পূর্ণ করতে এত সময় লাগছে কেন? সূত্রের খবর, দলীয় সভানেত্রীর কড়া মনোভাব বুঝে কেন্দ্র রদবদলের প্রশ্নে টালবাহানা ছেড়ে আসন-রফার নিষ্পত্তি করতে চলেছে কংগ্রেস। বামেদের কাছ থেকে যে ৯২টি আসন নিয়ে রফার কথা প্রথমে হয়েছিল, সেই সংখ্যার মধ্যেই জোট-পর্ব মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে।
দিল্লিতে দফায় দফায় আলোচনা সেরে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানেরা। কিন্তু রাতেই তাঁদের কাছে বার্তা আসে, সনিয়া মুখোমুখি বৈঠক করতে চান। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই সিপিএম পলিটবুরোর অনলাইন বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আসন নিয়ে মত-বদল ও টালবাহানার কথা সীতারাম ইয়েচুরিদের জানিয়েছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা। দিল্লির তলব পেয়ে অন্য কর্মসূচি স্থগিত রেখে শুক্রবার ফের রাজধানী শহরে ফিরে যান অধীর-মান্নান। নিজের বাড়িতে সিইসি-র বৈঠক ডেকে সেখানেই রাতে বাংলার বিষয়ে আলোচনা করেন সনিয়া। সূত্রের খবর, জোট-প্রক্রিয়া ও আসন-রফা ঘিরে রাজ্য কংগ্রেসের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। রীতিমতো ‘অসন্তোষের’ সুরেই তিনি বলেন, প্রথম দফার ভোটের জন্য মনোনয়ন হয়ে প্রত্যাহারের শেষ দিন হয়ে যাওয়ার পরেও আসন-রফা সম্পূর্ণ না হওয়া ‘ইতিবাচক’ বার্তা দেয় না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ব্যাখ্যা করেন, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে আসন ধরে ধরে দফায় দফায় মত বিনিময় করতে গিয়ে সময় লাগছে। কিন্তু কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, জোটের সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও অনন্ত কাল একই আলোচনা চলতে পারে না।
বিরোধী দলনেতা মান্নান আর্জি জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে তিনি আর প্রার্থী হতে চান না। পত্রপাঠ সেই আর্জি খারিজ করে কংগ্রেস সভানেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এখন আর পিছিয়ে আসার জায়গা নেই! কংগ্রেস সূত্রের খবর, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটে দলের নির্ধারিত আসনগুলির জন্য যে প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে চাঁপদানিতে মান্নানের পাশাপাশি আমতায় অসিত মিত্র ও শ্যামপুরে অমিতাভ চক্রবর্তীর মতো নেতাদের নাম থাকা প্রায় পাকা। প্রথম থেকেই এঁরা বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে ময়দানে থেকেছেন। তবে ওই দুই দফার মধ্যে তুফানগঞ্জ ও মধ্য হাওড়ায় প্রার্থীদের নাম এ দিন রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত করতে পারেনি কংগ্রেস।
প্রথম দফার ভোটে পুরুলিয়া জেলায় অবশ্য জোটে কাঁটা থেকেই যাচ্ছে। কাশীপুর কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী সুভাষ মাহাতোর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় সেখানে জোটের পক্ষে আপাত ভাবে ‘স্বস্তি’ মিলেছে। প্রার্থী থাকছেন সিপিএমের মল্লিকা মাহাতো। কিন্তু জয়পুরে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস তাদের প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় নেপাল মাহাতোর বাঘমুণ্ডিতে প্রার্থী রেখে দিয়েছে ফ ব। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এর পরে আর আশা করি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’’
সংযুক্ত মোর্চার আর এক শরিক ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এ দিনই তালিকা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, বামেদের কাছ থেকে ৩০টির বদলে তারা ২৬টি আসন নিয়ে লড়ছে। ওই তালিকায় খানাকুল ও মেটিয়াবুরুজও রয়েছে। হুগলির থানাকুল আসনের জন্য দাবি ছেড়ে দিয়েছে কংগ্রেস। আর বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, ‘ভুলবশত’ তাঁরা মেটিয়াবুরুজে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। আসনটি আইএসএফ-কেই ছাড়া হয়েছে। ভাঙড়ে এ দিনই মোর্চার সমাবেশে আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি এবং সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ি উপস্থিত থাকলেও কংগ্রেসের দাবি, তারা ‘আমন্ত্রণ’ পায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy