পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী অশোক ডিন্ডা (বাঁদিকে)। তৃণমূলের চিকিৎসক প্রার্থী সংগ্রাম দোলই ব্যস্ত চিকিৎসায়। নিজস্ব চিত্র।
পয়লা এপ্রিলের পর ১০ দিন পার হয়ে গিয়েছে। তবু ভোটের রেশ কাটেনি ময়নায়। যার মূলে রয়েছে বাকচা। ভোট প্রচার থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত শাসক দলের চিন্তা বাড়িয়েছিল রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ ময়নার বাকচা এলাকা। যেখানে গত তিন বছর ধরে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের গোলমাল ঘিরে চাপা উত্তেজনা এখনও বর্তমান।
বিধানসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে থেকেই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবু বাকচায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপর বিজেপি কর্মীদের আক্রমণের অভিযোগে সরব ছিলেন ময়নার বিধায়ক ও এবারের প্রার্থী সংগ্রাম দোলই। ভোট ঘোষণার পরে প্রচার পর্ব ও ভোট গ্রহণের পরেও তৃণমূলের কাছে এখনও চিন্তা বাকচা। তাই ভোট গ্রহণ পর্বের পরেও সংগ্রাম এলাকার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সংগঠনের কাজে ব্যস্ত। পেশায় চিকিৎসক সংগ্রাম ডানপন্থী রাজনীতির সাথে বরাবরই যুক্ত থেকেছেন। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে জিতে বিধায়ক হন। এবার তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা ও সংযুক্ত মোর্চার শরিক কংগ্রেস প্রার্থী তথা ময়না বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক মানিক ভৌমিক।
ভোট গ্রহণ পরবর্তী সময়ে চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি দলের আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের সাথে দেখা করা ও দলের সাংগঠনিক কাজেই সময় কাটাচ্ছেন সংগ্রাম। সেই সঙ্গে চলছে ভোট প্রাপ্তির হিসেব নিকেশ। সংগ্রাম বলেন, ‘‘১ এপ্রিল ভোট মিটে যাওয়ার পরেও বাকচা নিয়ে অনেকটাই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। ওখানে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণ চলছেই। তাঁদের হয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে দরবার করতে হচ্ছে। রোগী দেখার পাশাপাশি দলের কাজেই সময় কাটছে।’’ ভোটের ফল নিয়ে তৃণমূল প্রার্থার মন্তব্য, ‘‘বাকচায় সন্ত্রাস করে বিজেপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও বাকি সমস্ত এলাকায় আমারাই এগিয়ে। প্রায় ১৫ হাজার ভোটে জিতব আশা করছি।’’ তবে মনে করিয়ে দেন, ‘‘বাকচায় শান্তি ফেরানোর কাজটাই এখন আমার প্রধান লক্ষ্য।’’
কখনও তমলুকে কলকাতার বাড়িতে থাকছেন। আবার তারকা হিসেবে রাজ্যের অন্যত্র দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারেও যেতে হচ্ছে। নিজের কেন্দ্রে ভোট মিটে যাওয়ার পরে এটাই বিজেপি প্রার্থী ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডার রোজনামচা। রাজনীতিতে নবাগত অশোক ময়না বিধানসভায় প্রার্থী হওয়ার পরে তাঁর হয়ে প্রচারের কাজে যুক্ত ছিলেন বিজেপির জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল, জেলা সম্পাদক চন্দন মণ্ডল সহ এলাকার বিজেপি নেতা কর্মীরা। আশিস বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণের পরেও সংগঠনের কাজে বিরাম নেই। প্রতিদিনই দলের আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিধানসভা এলাকার প্রতি অঞ্চলের নেতৃত্বদের সাথে আলোচনা করে সম্ভাব্য ভোট প্রাপ্তির হিসেব করা হয়েছে। আমাদের প্রার্থী অন্তত ২০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন বলে আশা করছি।’’
বাকচা এলাকায় তাঁদের দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে আশিসের দাবি, ‘‘বাকচার বাসিন্দারা অনেক আগেই তৃণমূের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূল পুলিশকে কাজে লাগিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে হয়রানি করছে। আমরাও চাই বাকচায় শান্তি ফিরে আসুক।’’
সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী মানিক ভৌমিকেরও চিন্তা বাকচায় লাগাতার অশান্তি। ভোটের পরে সব সময় দলের কাজে থাকা মানিকবাবু বলেন, ‘‘ময়নার মানুষ যা রায় দেবে মেনে নেব। তবে বাকচায় শান্তি ফেরানোটা আগে দরকার। সবাই যাতে মিলেমিশে থাকতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy