হামলা: পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিপিএম সমর্থক গোপাল দে-র ফুটপাতের কাপড়ের দোকান। সার্ভে পার্ক এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও বোমাবাজি, কোথায় সংঘর্ষ, আবার কোথাও সিপিএম কর্মীর দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ। শনিবার কলকাতার একাংশের ভোট-পর্ব মিটতে না মিটতেই একের পর এক হিংসার ঘটনা শুরু হয়েছে। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এ দিকে রবিবার সন্ধ্যায় আনন্দপুর থানার পশ্চিম চৌবাগা এলাকায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে তিন জন বিজেপি ও দু’জন তৃণমূল সমর্থক।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকালে ফের রুবি মোড়ের কাছে বিক্ষোভ দেখান শ’খানেক বিজেপি কর্মী-সমর্থক। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ওই বিক্ষোভ। পরে পুলিশি আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় আনন্দপুর থানার পশ্চিম চৌবাগা এলাকা। বিজেপির অভিযোগ, পশ্চিম চৌবাগায় তাদের দলীয় অফিসে বসে থাকা কয়েক জন কর্মীকে কটূক্তি করে এলাকার কয়েক জন তৃণমূল কর্মী। তার জেরেই বচসার সূত্রপাত। পরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বিজেপির দলীয় অফিস এবং কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি কর্মীরাই প্রথমে হামলা চালায়। তাতে তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী আহত হন। ঘটনার প্রতিবাদে সে রাতেই আনন্দপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। রাতে দু’দলের পক্ষ থেকেই আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এর পাশাপাশি, রবিবার রাতে যাদবপুর বিধানসভা এলাকার সার্ভে পার্ক থানার জোড়া ব্রিজ এলাকায় গোপাল দে নামে এক সিপিএম কর্মীর দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ১০ তারিখ ভোটের দিন যাদবপুর স্টেডিয়ামে ১২৫ নম্বর বুথে সুজন চক্রবর্তীর পোলিং এজেন্ট ছিলেন গোপাল। অভিযোগ, সে দিনই তাঁকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল। এর পরে রবিবার রাতে সন্তোষপুর জোড়া ব্রিজ মোড়ে গোপালের দোকানে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই পুলিশ ও দমকলে খবর দেন। এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর প্রতিবাদে সোমবার জোড়া ব্রিজ-অজয়নগরগামী রাস্তা অবরোধ করেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গোপালের পাশের যে দোকানে আগুন লেগেছিল, সেটি একজন তৃণমূল কর্মীর। তাই দ্বিতীয় দোকানেও আগুন লাগানো হবে কেন, পাল্টা সেই প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ ছাড়া রবিবার মধ্য রাতে হরিদেবপুর থানার রামজীবনপুর এলাকায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়দের দাবি। রাত ২টো নাগাদ এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তবে কে বা কারা এই বোমাবাজি করেছে, তা জানা যায়নি। পুলিশ এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করছে। ওই রাতে তপসিয়া এলাকায় তৃণমূল ও আইএসএফ কর্মীদের মধ্যেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাতে কয়েক জন আহত হন।
প্রসঙ্গত, শহরে ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করতে কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ থানাগুলিকে কড়া নির্দেশ দিয়েছিল লালবাজার। কিন্তু তার পরেও একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক দলগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy