তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর ‘রোড শো’তে ঢুকে পড়ায় বিজেপি প্রার্থীর এই গাড়িটি ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর ভোট প্রচারের মাঝে আচমকা বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ঢুকে পড়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর। সোমবার বিকেলে জুখিয়া বাজার এলাকায় বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে তৃণমূল সমর্থকদের একাধিক মোটরবাইকে আগুন দেওয়া এবং দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত বাতিল হয় মিমির ‘রোড শো’!
এই ঘটনার জেরে জুখিয়া বাজারে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে দুই যুযুধানপক্ষ। খবর পেয়ে ভগবানপুর থানার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়। তৃণমূলের দাবি, ভূপতিনগর এলাকায় তাঁদের পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। আগুন দেওয়া হয়েছে। এমনকি, পরিস্থিতি সামাল কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ দুই পক্ষের। পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রচার না সেরেই ফিরে যান মিমি।
সূত্রের খবর, সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ জুখিয়া বাজার থেকে উত্তর খামার পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী অর্ধেন্দু মাইতির সমর্থনে ‘রোড শো’ করার কথা ছিল মিমির। সেই মতো পুলিশি অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। জুখিয়া বাজারে হাজির ছিলেন শ’খানেক মোটর বাইক সওয়ার তৃণমূল নেতা-কর্মী এবং মিমি-সহ দলের প্রার্থীও। ‘রোড শো’ শুরুর পরেই আচমকা সেখানে একা গাড়ি নিয়ে হাজির ভগবানপুরের বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মাইতি। নিমেষেই বদলে যায় পরিস্থিতি। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপি বিরোধী শ্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা চত্বর। রবীন্দ্রনাথের দাবি, ওই সময় তৃণমূলের কর্মীরা তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালায়।
ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত জুখিয়া বাজারে ছুটে আসেন স্থানীয় কিছু বিজেপি কর্মী। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। তা থেকে হাতাহাতি। এরপরেই তৃণমূলের পার্টি অফিসে হামলা ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপিও পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে।
গোটা ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিজেপির কাঁথি সংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপকুমার মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকার পরেও বিজেপি প্রার্থীর উপর হামলার চলেছে। বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। তৃনমূল একটি বর্বর দল। পুরো ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ কোন ব্যবস্থা না-নিলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হব।’’
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। ভগবানপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শশাঙ্ক জানা বলেন, ‘‘সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর রোড-শো বানচাল করতেই বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি প্রার্থী সে সময় গন্ডগোল পাকানোর জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে ভাবে মিমির ‘রোড শো’র জন্য নির্ধারিত রাস্তায় ঢুকে পড়েছিলেন। বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে কেউ হামলা চালায়নি। নিজেরাই গাড়ি ভাঙচুর করেছে। বিজেপি তাণ্ডব চালালেও পুলিশ ছিল নির্বিকার।’’
ভগবানপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র কাজল বর্মন বলেন, ‘‘ঘটনার জেরে ভূপতিনগরে তৃণমূলের দফতর ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরানো হয়েছে। একাধিক বাইকে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠি চালালোয় আমাদের দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমার গায়েও লাঠির আঘাত লেগেছে। এই ঘটনায় পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’ ভগবানপুর বিধানসভার কংগ্রেস প্রার্থী শিউ মাইতি বলেন, ‘‘উত্তেজনার ওই মুহুর্তে আমি মাধাখালি এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। পরিস্থিতি অশান্ত দেখে ফিরে চলে আসি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy