Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: ভোটের দিন ছায়া দখলের লড়াই

হঠাৎ করে ছায়ার জন্য যুদ্ধ কেন?

‘ছায়া বুকিং’।

‘ছায়া বুকিং’। ছবি: সন্দীপ পাল।

অনির্বাণ রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

তোবারক আলির কাঁঠাল গাছের দিকে এ বার নজর পড়েছে গেরুয়া শিবিরের। সে খবর নিয়ে গ্রামে কানাঘুষো হতেই রাতের বেলায় তোবারকের বাড়িতে গিয়ে আশ্বাস দিয়েছে সবুজ শিবিরের লোকজন। তোবারককে তারা বলেছে, ‘‘ভয়ের কী! ওদের না করে দাও। আমরাই তো সারা বছর তোমার পাশে ছিলাম।’’ তোবারক পড়েছেন মহা বিপদে। কাকে রাখবেন আর কাকে না করবেন! দু’পক্ষই যে গাছ নিয়ে টানাটানি করছে। জলপাইগুড়ি শহর থেকে কিছুটা দূর এগোলে ক্যাম্পের হাট। চৈত্রের দুপুরে বাড়ির উঠোনে বসে তোবারক বলেন, “গাছের কাঁঠাল চাইলেও না করতাম না, সবাইকেই দিতাম। ওরা গাছও চায় না। চায় তো শুধু গাছের ছায়া। কী মুশকিল বলুন দেখি! কাকে ছেড়ে কাকে দিই! দু’দলই তো আমার গ্রামের লোক।”

হঠাৎ করে ছায়ার জন্য যুদ্ধ কেন?

গ্রামের লোকজন বলছেন, এ বারে তো ঠা-ঠা বৈশাখে ভোট। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মতো ভোটকেন্দ্রের দু’শো মিটার পার করে দলের বুথ করা যাবে। তবে পাকাপোক্ত ছাদ করা যাবে না। তা হলে গনগনে রোদে দলের কর্মীদের মাথা বাঁচবে কী করে? তাই একটু ছায়া খুঁজতে মরিয়া সব দলই। তার উপর বৈশাখের শুরু থেকে রমজান মাস শুরু। রোজা রেখে যাঁরা ভোটের কাজ করবেন, তাঁদের জন্যেও ছায়ার বন্দোবস্ত তো করতে হবে।

রাজগঞ্জের এক সময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা মোক্তাল হোসেন বলেন, “ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে গাছের ছায়ায় দলের লোকেরা বসবে। গাছ মালিকদের থেকে আমরা আগাম অনুমতি নিচ্ছি, যাতে পরে ছায়ার দখল নিয়ে গোলমাল না বাধে।”

কারও বাড়ির পাশের জমিতে বাঁশ ঝাড়। সেখানে ছায়া বেশি। সেই ছায়ার দখল নিতে দলের পতাকা লাগাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দলের কর্মীরা। সবচেয়ে বেশি চাহিদা বট-কাঁঠাল আর বাঁশ ঝাড়ের ছায়ার। তবে ছায়া তুলনায় কম হলেও আমগাছেরও কদর আছে। জানালেন বেরুবাড়ির কংগ্রেস কর্মী স্বপন ঘোষ। ভোটকেন্দ্রের আশপাশের বাড়ির অন্য গাছগুলি সব দখল হয়ে গিয়েছে বলে তাঁর আক্ষেপ। জানালেন, তাঁদের ভাগ্যে জুটেছে একটা আমগাছ। সে জন্য কয়েকটি বড় ছাতা আনানোরও চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর ভাস্কর সরকার বলেন, “গ্রামে গাছের সংখ্যা বেশি। সব দলই গাছের ছায়ার দখল পেতে চায়।” জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর কথায়, “আমরা দলের পতাকা লাগিয়ে কোথায় বুথ করব, তা চিহ্নিত করে রাখছি। তৃণমূল সেই পতাকা তুলে ফেলে নিজেরা ছায়ার জায়গার দখল নিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে জানাব।”

ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে কি তবে গাত্রে ব্যথা হবে দলীয় কর্মীদের? অনেকেই বলছেন, ‘‘জলপাইগুড়ির সৌজন্যের আবহে গায়ে ব্যথা যদিও হচ্ছে না, তবু খর দুপুরে ছায়াটা তো চাই সকলেরই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy