নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র
গোটা দেশের মতোই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন চলা পশ্চিমবঙ্গে। এখনও ৪ দফার ভোট বাকি। আর এই ৪ দফায় বিজেপি-র অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ৩টি সফরে ৬টি সমাবেশ করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেই সভা কী ভাবে করা যায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক রাজ্য বিজেপি। সেই সঙ্গে পরিকল্পতি কর্মসূচি ঠিকঠাক ভাবে পালন করা যাবে কি না তা নিয়ে চিন্তাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৩৯ জন। করোনাকালে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়ার নজির এই প্রথম বার। আর রাজ্যে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৮৯২ জন। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার কলকাতায় সর্বদল বৈঠকও ডেকেছে কমিশন। সেই বৈঠকের পরে রাজ্যে বাকি থাকা ৪ দফার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কিছু বদল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। বদল আসতে পারে প্রচারের নিয়মেও।
রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ ১৭ এপ্রিল শনিবার। সেই দিন পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ও দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে মোদীর সমাবেশ রয়েছে। শুক্রবারের কমিশন প্রচার নিয়ে নতুন কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করে কি না সে দিকে নজর রাখার পাশাপাশি ওই দুই সমাবেশের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সভার আয়োজন নিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে রাজ্য বিজেপি-কে। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, মোদী ছাড়াও অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, জেপি নড্ডার একাধিক কর্মসূচি রয়েছে বাকি ৪ দফা ভোটগ্রহণের আগে। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ইতিমধ্যেই গৃহবন্দি যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর যাবতীয় প্রচারসূচি বাতিল হয়ে গিয়েছে। এখন বাকিদের সভা নিয়েও চিন্তিত ও সতর্ক বিজেপি।
মোদী, শাহ, রাজনাথের মতো প্রথম সারির কেন্দ্রীয় নেতাদের সংস্পর্শে যাঁরা আসেন তাঁদের সভার আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। এখন সেই নিয়মে আরও কড়াকড়ির চিন্তা করছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সমাবেশে যোগ দেওয়া কর্মী, সমর্থদের কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানিয়েছেন, ‘‘আপাতত শনিবারে যে দু’টি সমাবেশ রয়েছে তার আয়োজনে আমার সতর্ক রয়েছি। সর্বত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক ও স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবকদের বলা হয়েছে, সমাবেশে আসা মানুষেরা সকলেই যেন মাস্ক পরে থাকেন তা নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা পরে আসবেন না তাঁদের দলের পক্ষ থেকে মাস্ক দেওয়া হবে।’’ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু মাস্ক-স্যানিটাইজার দিয়ে কি রক্ষা পাওয়া যাবে? সায়ন্তন বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে সকলের নিজের থেকে সতর্ক থাকা উচিত। সম্পূর্ণ লকডাউন ছাড়া হয়তো উপায়ও নেই। ট্রেনে, বাসেও মানুষের ভিড় হচ্ছে। তবে কমিশন যা সিদ্ধান্ত জানাবে তাই মেনে নিতে তৈরি আমরা।’’
আরও একটা চিন্তা রয়েছে বিজেপি-র। ইতিমধ্যে পঞ্চম দফার ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচার পর্ব শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বাকি থাকা দফাগুলির ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত হলে মোদীর সফরসূচিতে বদল আনতে হতে পারে। ইতিমধ্যে ২২ এপ্রিলের সফর এক দিন এগিয়ে ২১ তারিখ করা হয়েছে। ওই দিন সমাবেশ হবে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। এর পরে ২৪ এপ্রিল দক্ষিণ কলকাতা ও বোলপুরে মোদীর সমাবেশ হওয়ার কথা। কিন্তু ২৬ এপ্রিল সপ্তম দফার ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগেও কমিশন প্রচার পর্ব বন্ধ করার নির্দেশ দিলে সেই সফরসূচিতেও বদল আনতে হতে পারে। বিজেপি সূত্রে খবর, সে দিন দক্ষিণ কলকাতার পরিবর্তনে মোদীর সমাবেশ হতে পারে উত্তরে। কারণ, উত্তর কলকাতার ভোটগ্রহণ রয়েছে শেষ দফায়। আবার মোদীর সফর এক দিন এগিয়ে ২৩ এপ্রিলও হতে পারে। সেই দিন আবার দক্ষিণ কলকাতায় শাহের রোড-শো রয়েছে। সুতরাং, কী হবে আর কী হবে না তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় গেরুয়া শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy