ফাইল চিত্র।
হুইল চেয়ারে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১৮টি আসন হাতছাড়া হতেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতার লক্ষে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকে’র সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২০১৯ এর জুনে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই দলের নেতা কর্মীদের অভিযোগের তীর ছুটেছে আই প্যাকের প্রতিনিধিদের দিকে। সংগঠনে ‘বহিরাগত’ পিকের কলকাঠি নাড়া মেনে নিতে পারেননি রাজ্যের ২৩ জেলার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের অনেক নেতাও।
বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর দেখা যায় জেলার বদনামী নেতাদের কেউ কেউ টিকিট পেলেও ভাল ভাবমূর্তির নেতাদের অনেকেই টিকিট পাননি। আর তাতেই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে নেতাদের ছাই চাপা আগুনে ঘি পড়েছে। দিস্তা দিস্তা মতামত জোগাড় করে কী করল ওরা প্রশ্ন তুলে বিক্ষুব্ধ নেতা সাগির হোসেন বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলকে শেষ করে দিল পিকে’র দল।”
সাগিরের মতো জেলার আরও অনেক নেতার অভিযোগ, পিকে’র টিমের সদস্যরা প্রথমত ভাল করে জেলা চেনেন না। তারপর, বয়স ও অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় জেলা রাজনীতি বুঝতে অক্ষম তাঁরা। এক জেলা নেতা বলেন, “ওদের যেন নেতাদের শাসন করাই কাজ। ফলে কারও সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার থেকে সবাইকে সন্দেহের চোখে দেখে ওরা গণ্ডগোলটা পাকিয়েছে গোড়া থেকেই।” তিনিই ধরিয়ে দেন, “গতবছর একদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়ালে দলীয় বৈঠকে অংশ নেওয়ার ডাক পড়েছিল বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের, ওদেরই দৌলতে। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল জেলা।” পাশাপাশি নেতাদের সঙ্গে আইপ্যাকের সদস্যরা আর্থিক লেনদেনেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে দাবি একাংশ জেলা নেতাদের। ভোটের হাওয়া ওঠার বহু আগে থেকেই নিয়ামত শেখের মত দলের একাধিক সিনিয়র নেতা প্রকাশ্য জনসভায় সেসব নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক আদি নেতা বলেন, “মানুষ চিরকাল নেতা নির্ভর সমাজ দেখেছে। সবার আলাদা পছন্দ আলাদা রুচি আছে। সেই মত কেউ তৃণমূল করে কেউ করে অন্য দল। দলের মধ্যেও পক্ষ বিপক্ষ থাকাটাই স্বাভাবিক। ওরা পক্ষ বিপক্ষের মীমাংসার নামে ফাটল ধরিয়েছে আরও।”
আর যেহেতু ওরা ‘দিদির দূত’ তাই রাগ হলেও প্রকাশ্যে তা নিয়ে ক্ষোভ দেখাননি নেতারা পাছে বিধানসভা ভোটের টিকিট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়। তাই সাবধানে থেকেও ভোটের টিকিট না পেয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধি লাগু হতেই দলবদলের হিরিক পড়েছে তৃণমূলে, দাবি ওই নেতার। বহরমপুর থেকে জঙ্গিপুর, কান্দি থেকে লালগোলা, ভগবানগোলা, লালগোলা সর্বত্র তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মীদের
একই অভিযোগ।
নেতাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে এক সময় জেলার দায়িত্বে থাকা আইপ্যাকের এক সদস্যকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি সূত্রের। তবু অভিযোগের পর অভিযোগে জেরবার হয়েছে তৃণমূল ভবন। অথচ কী জন্য তাঁদের জেলায় আসা তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা তৃণমূলের অন্দরে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা কোর কমিটির অন্যতম সদস্য মইনুল হাসান বলেন, “আমার সঙ্গে ওঁদের সম্পর্কই নেই। ফলে অদের কাজ নিয়ে আমার কোনও ধারণাও নেই। কিছু অভিযোগ আমিও শুনেছি দলের নেতা কর্মীদের কাছে। এর বেশি কিছু জানি না।” তাঁদের কাজ সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণেই জেলা নেতারা তাঁদের প্রতি ক্ষোভ দেখাচ্ছেন জানিয়ে আইপ্যাকের জেলার দায়িত্বে থাকা জিয়াউর রহমান বলেন, “প্রার্থী তালিকা তৈরি করা আমাদের কাজ নয়। দলের পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি জেলায় কার্যকর করাই আমাদের কাজ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy